নিজস্ব প্রতিবেদক : বকেয়া কর আদায়ের লক্ষ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বড় ধরনের অভিযানে নেমেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টা থেকে সিলেট নগরীর কুমারপাড়া পয়েন্ট থেকে এই অভিযান শুরু করা হয়। পরে নাইওরপুল, জেলরোড, নয়াসড়ক ও বারুতখানা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীবের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, উচ্চ পদস্থ সকল কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট শাখার সকল কর্মকর্তাবৃন্দ এবং পুলিশের একটি টিম অংশ নেয়।
এই অভিযানে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়াও ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স আছে কীনা তা-ও খতিয়ে দেখা হয়। অভিযানকালে কর ও ট্রেড লাইসেন্স বিষয়ে বিভিন্ন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের চিত্র ধরা পড়লে তাদেরকে আগামী ২৫ মে’ তারিখের মধ্যে সকল বকেয়া পরিশোধের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মালামালক্রোকসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া দেয় সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
বেলা ১২ টায় প্রথমেই প্রবেশ করা হয় কুমারপাড়া পয়েন্টের বেবিশপ-এ। এই প্রতিষ্ঠানের ভবনটির হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধিত থাকলেও পরিদর্শনকালে বেবিশপ তাদের ট্রেড লাইসেন্স উপস্থাপন করতে পারেননি। একই চিত্র দেখা যায় পোষাক বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টিন-এ, তাদেরও ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। সিলেট গ্রামার স্কুল যে ভবনে সেই ভবন মালিকের বিগত ৯ বছরের বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিমান ৮০ হাজার টাকা। মেসার্স ফরিদ আহমদ এন্ড ব্রাদার্স কর্তৃপক্ষ তাদের নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স উপস্থাপন করতে পারেননি, বৃটিশ হাই কমিশনের কুমারপাড়া অফিস যে ভবনটিতে অবস্থিত (ইসমাইল মঞ্জিল, ব্লক এ/৩৭) সেই ভবনের মালিকের কাছে বিগত ৩ বছরের বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিমান ১ লাখ ২০ হাজার ৫শত টাকা।
বসুন্ধরা মটরস শোরুমের ভবনের মালিকের কাছে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স পাওনা ৯০ হাজার টাকা, মেট্রো ফার্নিচারের ট্রেড লাইসেন্স নেই। জেলরোডের আনন্দ টাওয়ার মার্কেট কর্তৃপক্ষের কাছে ৫ বছরের বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিমান ১০ লাখ ৯৯ হাজার টাকা, বারুতখানা স্বপ্ন ও ডাচ বাংলা ব্যাংক যে ভবনে সেই ভবন কর্তৃপক্ষের কাছে বিগত ৪ বছরের বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিমান ৪ লাখ টাকা, নয়াসড়ক এর আড়ং যে ভবনে অবস্থিত সেই ভবন কর্তৃপক্ষের কাছে বিগত ৯ বছরের বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স এর পরিমান ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
এই ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কর্মকান্ডের স্বার্থেই নগরবাসীদের কর পরিশোধে সচেতন হতে হবে। এই অভিযানের মাধ্যমে বকেয়া কর আদায়ের ব্যাপারে জনগনকে নোটিশ দেওয়ার পাশাপাশি আমরা তাদেরকে উদ্ব্দ্ধু করার চেষ্টা করছি। এরপরও যারা কর প্রদান করবেন না তাদের ব্যাপারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এই অভিযান পর্যায়ক্রমে নগরীর সব জায়গায় পরিচালনা করা হবে বলেও জানান এনামুল হাবীব।
অভিযানকালে আরও উপস্থিতি ছিলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবিএম জিল¬ুর রহমান উজ্জল, ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিন, সিটি কর্পোরেশনের সচিব রেজাই রাফিন সরকার, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো: শরিফুজ্জামান, কর কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা লোকমান আহমদ, চীফ কনজারভেন্সি অফিসার মো. হানিফুর রহমান, লাইসেন্স অফিসার চন্দন দাশ, এসেসর হারান কান্তি সেন ও ফয়জুর রহমান।