সিলেট পোষ্ট রিপোর্ট: যুক্তরাজ্যে শতাধিক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে আবাসন সুবিধা হিসেবে দেয়া লক্ষাধিক পাউন্ড হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত এসব বাংলাদেশি ইতালির নাগরিকত্ব পাওয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশের অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে এলে সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে ৯ হাজার পাউন্ড আবাসন ভাতাসহ বেশকিছু আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়। আর ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীরা এই সুযোগটিই নিচ্ছেন। তারা একদিনের জন্য ফিরতি টিকিট নিয়ে লন্ডনের স্টানসেড বিমানবন্দরে আসেন। জব সেন্টারে সাক্ষাৎকার দিয়ে তারা একটি জাতীয় বীমা নম্বর জোগাড় করেন। এই নম্বরটি তারা সরকারের দেয়া ইইউ অভিবাসীদের জন্য দেয়া আবাসন সুবিধা বাবদ দেয়া অর্থ উত্তোলেনের জন্য ভুয়া বেতন স্লিপে ব্যবহার করেন। ভুয়া চাকরি প্রমাণপত্র দিয়ে তাদের এই কাজে সহযোগিতা করছে বেশ কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান।
এর আগে তাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য একটি ভুয়া বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করতে হয়, যেখানে তারা বসবাস করছেন বলে কাগজে-কলমে প্রমাণ করতে হয়। আর এর মাধ্যমে গত তিন বছরে ১০ লক্ষাধিক পাউন্ড হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
গত বছর একইদিনে ফিরতি টিকিট নিয়ে ইতালি থেকে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি অভিবাসী স্টানসেডে আসার খবর পেয়ে পুলিশ, নগর কর্তৃপক্ষ ও সরকারের টনক নড়ে। পরে তারা বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করেন।
চারশ আবেদনকারী তাদের বাসস্থান হিসেবে একই বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করেছেন জানতে পেরে গত সপ্তাহে পুলিশ, পূর্ব লন্ডনের রেডব্রিজ কাউন্সিল এবং কর্ম ও অবসর বিভাগের কর্মকর্তা ওই বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান।
কমপক্ষে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভুয়া চাকরির তথ্য দিয়ে অর্থ আত্মসাতে সহেযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ইফোর্ডভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ফ্যামিলিস ফর সারভাইভাল ইউকে। সংস্থাটি বাংলাদেশ ও কেনিয়ায় অক্ষম, প্রবীণ ও শিশুদের খাদ্য, বাসস্থান ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে থাকে।
প্রতরণার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এর ট্রাস্টি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আসমা খানম ও আরেক বাংলাদেশি হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে আরও আটজনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হবে চলতি সপ্তাহে। রেডব্রিজ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অবশ্য আসমা ও হাবিবুরের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
রেডব্রিজ কাউন্সিলের অর্থ ও সম্পদ বিষয়ক ক্যাবিনেট সদস্য কাম রাই বলেন, ‘গত বছর এই প্রতারণা বিষয়টি ধরা পড়ে। তখন থেকে আমাদের নিজস্ব সুবিধাভোগী প্রতারণা তদন্ত দল প্রমাণ সংগ্রহের জন্য তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এই সফলতা আমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফসল।’একই সঙ্গে তিনি জানান, প্রতারকদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ জিরো টলারেন্স দেখাবে।