সিলেট পোস্ট রিপোর্ট:আজ বিশ্ব শিশু দিবস কিন্তু এখনও রয়েছে শতশত শিশু নানা ধরণের ঝুকিপূর্ণ কাজে । শিশুদের পক্ষে শিশু শ্রম বন্দে অনেক কথার ফুলজুড়ি ছুঠলেও নেয়া হচ্ছেনা কোন ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ । এক মুঠো ভাত ও সামান্য কিছু আয়ের জন্য অনেক শিশু বই ,খাতা ওকলমের বদলে হাতে তুলে নিচ্ছে ঝুকিপূর্ণ অনেক কাজ । গরিব অসহায় হওয়ায় লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ থাকলেও অভাবের কারণে আর বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়ে ওঠেনি অনেক শিশুর জীবিকার তাগিদে অসংখ্য শিশু আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের শ্রমে নিয়োজিত। যে বয়সে তাদের বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সে তারা টাকা রোজগারের জন্য কাজ করছে।বাংলাদেশের শ্রম আইন (২০০৬) অনুসারে শ্রমিকের বয়স ১৪ বছরের নিচে হওয়া যাবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। শ্রমে নিয়োজিত বহু শিশুরই বয়স ১৪ বছরের নিচে।শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলো বলেছে, দেশে ৭৪ লাখের বেশি শিশু বিভিন্ন ধরনের শ্রমে নিয়োজিত।জানা যায় , শিশুরা ব্যাটারি নির্মাণ কারখানা, প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানা, চামড়ার কারখানা, মোটরগাড়ি ও রিকশা সারাইয়ের গ্যারেজ, সাইকেল নির্মাণ কারখানা, ইটভাটা, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পোশাককারখানা, জাহাজশিল্প, চিংড়ির হ্যাচারি,বেলুন কারখানা,জুটমিল ও বাসাবাড়িতে কাজ করে জীবন-জীবিকার পথ খোঁজে। অনেক শিশু রাজমিস্ত্রির সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া অনেক শিশু বাস, টেম্পো, হিউম্যান হলার এসবযানবাহনে সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে। শিশুদের অল্প পারিশ্রমিক দিয়ে বেশি কাজ করে নেওয়া যায় বলে মালিকেরাও তাদের নিয়োগ করেন।সিলেটের দক্ষিণ সুরমার একটি ওয়ার্কশপের পরিচালক বলেন, ‘শিশু শ্রমিকেরাই ভালো। যা মজুরি দেই বাড়াবাড়ি করে না। কামও ভালো করে।সিলেট জেলার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে শিশু শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায় , তাদের অনেকেই অল্প বয়স থেকে কাজ করছে। কেউ দুই-তিন বছর বিদ্যালয়ে গেলেও অভাবের তাড়নায় তাদের বাবা-মা কাজে পাঠাতে বাধ্য করছেন।সরকারি হিসাবে সারা দেশের ৯৯ শতাংশের বেশি শিশুর বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঝরে পড়া শিশুদের একটি বড় অংশ বিভিন্ন শ্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১১ সালের জাতীয় শিশুনীতিতে ঝুঁকিপূর্ণ ও নিকৃষ্ট ধরনের শ্রমসহ বিভিন্ন ধরনের শ্রমে নিয়োজিত শিশুদের প্রত্যাহারের কথা বলেছে। এ ছাড়া তাদের দারিদ্র্যের চক্র থেকে বের করে আনার লক্ষ্যে পিতা-মাতাদের আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা, বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য বৃত্তি ও আনুতোষিক প্রদান করার কথা বলেছে।ওই শিশুনীতি অনুসারে শিশুশ্রমের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে পিতা-মাতা, সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, ২০১৫ সালের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শিশুশ্রম নির্মূলের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কৌশল ও কর্মসূচি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এর বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।বিভিন্ন কাজে শিশুদের ব্যবহারের বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থা মাপসাস সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি শেখ মোঃ লুৎফুর রহমান সিলেটপোস্টকে বলেন, আইনে শিশুশ্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শিশুশ্রম বন্ধ করতে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ হওয়া দরকার।
লেখাপড়ার বদলে হাজারো শিশু ঝুকিপুর্ন কাজে
সিলেট পোস্ট ২৪ ডট কম
: জুন ১২, ২০১৫ | ৮:৩৩ অপরাহ্ন
« « পূর্ববর্তী
পরবর্তী » »