সংবাদ শিরোনাম
নবীগঞ্জে ৬ বছরে শিশুকে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ! ধর্ষনকারী আনহারকে আটক   » «   ফ্যাসিস্ট ডামি সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে :কাইয়ুম চৌধুরী  » «   বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সিলেট জেলার উদ্যোগে ইফতার বিতরণ ও দোয়া মাহফিল  » «   সিলেটে পারিবারিক কলহের জেরে ছেলের হাতে বাবা খুন  » «   সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার  » «   নবীগঞ্জে ভুল অপারেশন করে শিশুর লিঙ্গ কর্তন-কেয়ার ডায়াগনস্টিক ঘেরাও  » «   সিলেটের উপশহরে মামার হাতে বাগিনা খুন  » «   ব্রাদার ইসরাইল আলী সাদেক জামিন নিতে এসে গ্রেপ্তার  » «   সুনামগঞ্জের দোয়ারায়বাজারে ভারতীয় চিনিসহ আটক- ৪ জন  » «   প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে দেশীয় সংস্কৃতি লালন করতে হবে  -জেলা প্রশাসক  » «   শান্তিগঞ্জের কান্দিগাঁও গ্রামে বাচ্চাদের ঝগড়া নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় দুই ছাত্রীসহ ৩জন আহত  » «   বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী : প্রতিমন্ত্রী শফিক চৌধুরী  » «   রমজান উপলক্ষে জুলকার নায়েন ফাউন্ডেশন দোয়ার বই ও খেজুর বিতরণ  » «   ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মানবাধিকার ও অনুসন্ধান কল্যাণ সোসাইটি  » «   মাদানী ইস্যুকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে হামলা ভাংচুর, আটক ৫; পুলিশের ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি  » «  

হাওয়া ভবনের কর্মকর্তারা এখন কে কোথায়

72সিলেট পোস্ট রিপোর্ট:  ‘হাওয়া ভবন’-এর একসময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ও ক্ষমতাধর বিতর্কিত কর্মকর্তারা এখন কে কোথায়? ওয়ান-ইলেভেনের পর তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারকে বিপদের মুখে ফেলে পালিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান শেষে এবার তারা আত্মপ্রকাশ শুরু করেছেন। অনেকে ইতিমধ্যে দেশে ফিরেছেন। বাকিরাও বিভিন্ন কৌশলে দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ বিদেশে অবস্থান করেও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। লন্ডনমুখীও হচ্ছে বৃহৎ একটি অংশ। ভিড় করছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আশপাশে। বিশেষ করে ‘ওয়ান-ইলেভেন’-এর আগে-পরে যারা দেশ ছেড়ে ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের বেশির ভাগই এখন লন্ডনে পাড়ি জমাচ্ছেন।

 

হাওয়া ভবনে বিএনপির তৎকালীন যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের খুব কাছের ব্যক্তিদের মধ্যে বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, দৈনিক দিনকালের একসময়ের মফস্বল সম্পাদকের সহকারী তৌহিদুল ইসলাম ওরফে আশিক ইসলাম, সাবেক ছাত্রদল নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল, মিয়া নূরুদ্দিন অপু, বগুড়ার অধিবাসী ও ড্যাব নেতা ডা. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল, বগুড়ার সাবেক এমপি হেলালুদ্দিন তালুকদার লালুর ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম জয়, লুৎফর রহমান বাদল, শাহরিন ইসলাম তুহিন, সাইফুল ইসলাম ডিউক, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টারের দায়িত্ব পালনকারী সালেহ শিবলি, সাংবাদিক পরে পুলিশ কর্মকর্তা গিয়াসউদ্দিন রিমন, নুরুল ইসলাম ছোটন, কামরুল ইসলাম, সায়মন আকবর প্রমুখ ছিলেন উল্লেখযোগ্য।

জোট সরকারের সময় তারেক রহমান দলীয়ভাবে প্রশাসনিক, কৃষি, মিডিয়া, ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনীতিসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন ও গবেষণামূলক কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উলি্লখিত ব্যক্তিদের একেকজনকে একেকটি করে দায়িত্ব ভাগ করে দেন। কিন্তু সে দায়িত্ব পালনের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জিয়া পরিবারের নাম ভাঙিয়ে অনেকে টাকার কুমির বনে যান। তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে হাওয়া ভবনের এসব কর্মকর্তা মন্ত্রীদের চেয়েও বেশি ক্ষমতাধর ছিলেন। তাদের অবৈধ হস্তক্ষেপের ভয়ে সমগ্র প্রশাসন তটস্থ থাকত। অথচ ওয়ান-ইলেভেন তথা দলের দুঃসময়ে এরা সবাই তারেক রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিপদের মুখে ফেলে যার যার মতো সটকে পড়েন। বেশির ভাগই বিদেশে পালিয়ে যান। কেউ কেউ আবার মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকারের অনুগত হয়ে সংস্কারপন্থি বিএনপিতে যোগ দেন। হাওয়া ভবনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ওয়ান-ইলেভেনের পর থেকেই যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।

 

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ওয়ান-ইলেভেনের পর পরই গোপনে দেশ ছাড়েন। তিনি আর দেশে ফেরেননি। দলীয় নেতা-কর্মীদের ধারণা, বেশ কয়েকটি দেশ ঘুরে তিনি এখন লন্ডনে। আর হাওয়া ভবনের তৎকালীন মুখপাত্র তৌহিদুল ইসলাম ওরফে আশিক ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়ী হিসেবে স্থায়ী হয়েছেন। তবে সম্প্রতি লন্ডনে একটি বাসা ভাড়া করে তিনি প্রায়ই সেখানে এসে থাকছেন। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানকে বিভিন্নভাবে শলা-পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বছর দুয়েক আগে তিনি কয়েকজন কনসালট্যান্ট নিয়োগের মাধ্যমে তারেক রহমানের নামে ইংরেজিতে একটি বই লিখে সে বইয়ের উদ্বোধনের মাধ্যমে তারেক রহমানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেন। হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের এপিএস খ্যাত মিয়া নূরুদ্দিন অপু দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় থেকে গত বছর দেশে ফেরার পর এখন কারাগারে আছেন। অনেকে বর্তমান সরকারের হোমরা-চোমরাদের সঙ্গে অাঁতাত করে দেশের ভিতরে বহাল তবিয়তে আছেন। সাংবাদিক সালেহ শিবলি, পুলিশের সাবেক এএসপি গিয়াসউদ্দিন রিমন এখন লন্ডনে আছেন। বাকিদেরও কেউ লন্ডন, কিংবা আমেরিকা, অথবা কানাডা, ইতালি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশে অবস্থান শেষে এখন আবারও লন্ডনমুখী হচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই এখন দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় হিসেবে বনানীর ওই বাড়িটি নেওয়া হলেও সরকার গঠনের পর বেগম খালেদা জিয়া সেখানে তেমন একটা না বসায় সেটি পরিচালনা করতেন তারই জ্যেষ্ঠপুত্র ও দলের তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান। সে সময় বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য এসব কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেন তারেক রহমান। কিন্তু তাদের সীমাহীন অপকর্মের কারণে জোট সরকার ও বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়। যার মাশুল এখন দল ও জিয়া পরিবারের সদস্যদের কড়ায়-গণ্ডায় দিতে হচ্ছে। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক এ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত দিন সরকারের দমননীতি সহ্য করেও দলের সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু আর বোধ হয় রাজনীতিতেই থাকা যাবে না। কারণ যেই লাউ সেউ কদু। আবারও সেই ভয়ঙ্কর মুখগুলোই চোখের সামনে ভেসে উঠছে। তারা এখন আবার ক্ষমতাশালী।’ এ ছাড়াও চারদলীয় জোট সরকারের আমলে গড়ে ওঠা বিতর্কিত ওই ভবনটির সঙ্গে যুক্তদের মধ্যে তখন সামনের কাতারে ছিলেন সাহাবুদ্দিন লাল্টু, লুৎফর রহমান বাদল, মোটা তারেক ওরফে মালয়েশিয়া তারেক, আনোয়ার, ওসি হামিদ, সাইফুল, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, নূর আফরোজ জ্যোতি, শফিউর রহমান বাবু, এনামুল হক, সাজ্জাদ হোসেন নাইট, নেওয়াজ হালিমা আরলী, রাজীব সিরাজ অপু, তানভীর ইসলাম, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, তাহমিন আক্তার ডেল, খন্দকার আবু আশরাফ, জোবায়েদ হোসেন রানা, ইমতিয়াজ আহমেদ, হুমায়ুন, আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। এর বাইরে হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টুর নেতৃত্বে দলের এক ডজন দাপুটে এমপি হাওয়া ভবনের নামে প্রভাবশালী ছিলেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.