সিলেটপোস্টরিপোর্ট:একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনদের নির্যাতনের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাড়িটি এখন যেন মৃত্যুপুরি। দলীয় নেতা-কর্মীদের আনাগোনা নেই। কৌতূহলী মানুষেরও ভিড় নেই। সবাই যেন ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সাকার গ্রেফতার, বিচারের রায় ঘোষণা, হরতাল এমনকি গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচির সময় অন্যান্যবার কড়া পুলিশ পাহারা থাকলেও এবার তা-ও নেই। তবে বাড়িটির উত্তরপ্রান্তে কিউসি পেট্রোলপাম্পের সামনে ১০-১১ জন পুলিশ সদস্য আছেন।মূল ফটকের পাশেই লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নিরাপত্তা চৌকিতে রয়েছে দুটি রেজিস্ট্রার। যাতে অতিথি ও কর্মচারীদের নাম, পরিচয়, টেলিফোন নাম্বার লিখে রাখা হচ্ছে। ওই চৌকির দেয়ালে সাকা চৌধুরীর রঙিন ছবিযুক্ত সাঁটানো রয়েছে অনেক আগের ‘রাঙ্গুনিয়াবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা’।মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় গুডস হিলের মূল ফটকে কর্তব্যরত দারোয়ান জানান, চার বছর ধরে এখানে কাজ করছি। অন্য সময় হরতাল বা মামলার বিচারকাজের সময় প্রচুর পুলিশ পাহারা থাকতো। এবার এখনো কোনো পুলিশ আসেনি। বাড়িতে কারা আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাইজ্জ্যা মিয়ার ওয়াইফ অসুস্থ (মেজ সাহেবের স্ত্রী অসুস্থ)। তাকে স্যালাইন দিয়েছে।’একটু পরেই ঘুমকাতুরে চোখ নিয়ে একজন যুবক আসেন গেটে। দারোয়ান তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে যুবকটি বলেন, ‘ঢাকা থেকে রাতে এসেছি। ভেতরে গাড়ি আছে।’ কিছুক্ষণ পর ওই যুবক একটি মাইক্রোবাস নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। মাইক্রোবাসে যাত্রী না থাকলেও প্রচুর ব্যাগ, থলে ইত্যাদি ছিল।সাকা চৌধুরীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান কিউসি পেট্রোল পাম্পের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক জাহেদুল। তিনি বলেন, ‘আমরা পালাক্রমে ১১ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এখনো ঘটেনি।’ নগরীর রহমতগঞ্জের গণি বেকারি মোড়ে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বাসভবন গুডস হিলের গ্যারেজটি একাত্তরে ব্যবহৃত হতো নির্যাতন কেন্দ্র হিসেবে।আর গ্যারেজের দোতলায় ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের ক্যাম্প। মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর দুই আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মঙ্গলবার সকালে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
সিলেটপোস্টরিপোর্ট/শেখ লুৎফুর/১৮/১১/১৫