সিলেটপোস্ট রিপোর্ট :গাজীপুরে শিক্ষকের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে গর্ভপাত ঘটান ওই শিক্ষক।এ ঘটনায় গত রোববার বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের বড় কয়ের গ্রামে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি গাজীপুর সদরের বাড়িয়া ইউনিয়নের বড় কয়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।রোববার সন্ধ্যায় বড় কয়ের গ্রামে ঘটনার শিকার ছাত্রীর বাড়িতে গেলে নির্যাতিতা ও তার পরিবারের সদস্যরা জানায়, চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি বড় কয়ের স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক মশিউর রহমান ছোটনের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায় ছাত্রীটি। বৃষ্টির মধ্যে অন্য কোনো শিক্ষার্থী পড়তে না আসার সুযোগে শিক্ষক ছোটন ছাত্রীকে তরল পানীয়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়। এরপর ছাত্রীটি অচেতন হয়ে পড়লে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।ঘটনার পরে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেন ওই শিক্ষক। জানালে তাকে ও তার বাবা-মা, ভাই-বোনকে হত্যা করা হবে বলে ছাত্রীকে তাড়িয়ে দেন। ভয়ে ছাত্রীটি এ ঘটনা কাউকে জানায়নি। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি শিক্ষককে জানায় ওই ছাত্রী।এরপর শিক্ষক ছোটন ছাত্রীটিকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে গর্ভপাত করতে বলেন। আর গর্ভপাত করালে তাকে বিয়ে করবে বলেও আশ্বাস দেন। পরে ওই ছাত্রী ঘটনাটি তার মা-বাবাকে জানায়। এর মধ্যে ১১ নভেম্বর তার গর্ভপাত ঘটানো হয়।এ বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ওই ছাত্রী ও তার মাকে ছোটনের বাড়িতে ডেকে পাঠায় তার পরিবারের লোকজন। সেখানে স্থানীয় নাজিম উদ্দিন মেম্বারের উপস্থিতিতে একটি শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিসে তারা ছাত্রীকে এক লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু ছাত্রীটির পরিবার টাকা নিতে অস্বীকার করে মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য শিক্ষক ছোটনকে চাপ দেয়।এ ঘটনার বিচার দাবি করে শনিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদন করেন স্থানীয়রা। পরদিন রোববার একই আবেদন করেন ছাত্রীটির মা।নির্যাতিতার চাচা জানান, ঘটনাটি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য শনিবার তার মোবাইলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি হুমকি দিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সাহা জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন ও রোববার সকালে ওই ছাত্রীর মায়ের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগও পেয়েছেন। বিষয়টি স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য গোলজার হোসেন কবির জানান, রোববার বিকেলে বিদ্যালয় মিলনায়তনে পরিচালনা পরিষদের এক সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক মশিউর রহমান ছোটনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না তার কারণ ব্যাখ্যা করে সাতদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ঘটনা তদন্তে বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি পরিমল মজুমদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- অভিভাবক সদস্য আজিম মিয়া ও আবদুল বাতেন ভূঁইয়া। জয়দেবপুর থানার পূবাইল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফায়জুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদীর অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।