সিলেট পোস্ট রিপোর্ট :বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে ফুল দেয়া নিয়ে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন ভিসিসহ শিক্ষকরা।পরিস্থিতি এতেটাই নাজুক অবস্থায় চলে যায়, ভিসি নিজের স্যান্ডেল রেখেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বাংলো পর্যন্ত খালি পায়ে হেটে চলে যান বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, ১৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১মিনিটে ঝাপসা আলোয় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নুর উন নবী’র নের্তৃত্বে কিছু শিক্ষক। এসময় মাইকে ঘোষণা করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক আবু সালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান (তুহিন ওয়াদুদ)। উপাচার্যের পরে ছাত্রলীগের নাম ঘোষণা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হল শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের নাম বলেন ঘোষক। পরে উত্তেজিত হয়ে যান উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আরো জানা যায়, তোপের মুখে ফেলে মেয়েদের আগে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন ছাত্রলীগ। পরে তারা ঘোষকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রশমূলক বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে উপাচার্য স্বাধীনতা স্বারক থেকে নেমে উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা তাকে ঘিরে ধরেন।বিজয় দিবসেও ক্যাম্পাস কেন সাজানো হয়নি, শহীদদের প্রতি লোক দেখানো শুধু শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়া হচ্ছে কিনা এসব প্রশ্নের জবাব উপাচার্যের কাছে থেকে চায় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা। কথা বলার এক পর্যায়ে দ্রুত ঐ স্থান ত্যাগ করতে যান উপাচার্যসহ উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান সেখান থেকে। এসময় তিনি পায়ের জুতা দুটোও নিয়ে যেতে পারেননি। অবশেষে একটি জুতা পাওয়া গেলেও অপরটি পাওয়া যায়নি।এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মাহমুদ হাসান লাঞ্ছিত করার বিষয়টি নাকোচ করে দিয়ে বলেন, ‘বিজয় দিবসেও ক্যাম্পাস সাজানো হয়নি।
আবার আমরা ফুল দেয়ার জন্য স্বাধীনতা স্বারকে উঠেছি। এমন সময় অন্যদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এসব নিয়ে উত্তেজিত হয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোর্শেদ উল আলম রনি বলেন, ‘ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বিজয় দিবস পালনে তেমন কোন কর্মসূচি নেয়া হয়নি। এর পিছে কোন বাজেটও ছিলো না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন,‘এর পরের প্রোগ্রামগুলো ভালো করে করা হবে।’
জানা গেছে, এসবের মধ্যেও উপাচার্য ও ছাত্রলীগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইউনিয়ন আর বাংলার মুখের পক্ষ্য থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়া হয়।