সিলেটপোস্ট২৪রিপোর্ট :ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে হাই কোর্ট রায় দিয়েছে অভিযোগ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, এর মাধ্যমে বিচারকের চেয়ারকে কলঙ্কিত করা হয়েছে।শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ১৯৬৭ সালে জন্ম হয়ে তার পক্ষে মহামান্য হাই কোর্টের রায় নিয়ে এসেছেন। কীভাবে এই রায় দিল আদালত? মুক্তিযোদ্ধা হওয়া তো কোনো মৌলিক অধিকার নয়। আইন না বুঝে উচ্চ আদালতের এ রায় বিচারকের চেয়ারকে কলঙ্কিত করেছে।“আমার কাছে এই রায় আসার পর আমি ছুড়ে দিয়েছি। আপনারা কারা? যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, তারাই হবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কোনো রায় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যাবে না অনন্ত আমি থাকতে। অস্ত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু ট্রেনিং কারও কাছে বন্ধক দিইনি।”তবে কোন মামলা নিয়ে মন্ত্রী একথা বলেছেন তা জানা যায়নি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল থেকে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাদের সম্মান জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কার্জন হল পরিবেশ ক্লাব।সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেক আমলা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে চাকরি করছেন দাবি করে মোজাম্মেল হক বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ সনদ নিতে এমনও ঘটনা ঘটেছে- ‘আজকে দরখাস্ত জমা দিয়ে আগামীকালই গেজেটে নাম উঠেছে’। কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়া এটা কোন নিয়মে হয়েছে?“একানব্বই সালের পর থেকে আমি আসার পূর্ব পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের যে গেজেট বা তালিকা হয়েছে, তা আসলেই কষ্টদায়ক। বিএনপির আমলে ৪৪ হাজার এবং আওয়ামী লীগের আমলে ১১ হাজার- এই ৫৫ হাজার মুক্তিযুদ্ধ সনদই আইন বহির্ভূতভাবে দেওয়া হয়েছে।“এরমধ্যে যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয় তাদের সনদ বাতিল করে দিয়েছি, আর অন্যদের যাচাই-বাছাই চলছে।”মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যারা সরকারি চাকরি নিয়েছেন তাদের একটি তালিকা তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে, যাতে গড়মিল থাকলে বের হয়ে আসে।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে জানার জন্য আগামীতে বিসিএস পরীক্ষায় ‘২৩ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ে ১০০ নম্বর রাখার চিন্তা রয়েছে বলেও জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজ্জামেল হক।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু পার্ক করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যেখানে পাক হানাদাররা আত্মসমর্পণ করেছিল, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার জন্যই এখানে শিশু পার্ক করা হয়েছিল। অতি শিগগিরই পার্কটি পিছনে সরিয়ে নেওয়া হবে।”বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে নিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, “জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে গেছেন তা সন্দেহাতীতভাবে সত্য। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা যদি চিন্তা করেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করতে চাননি।“ওয়ার কাউন্সিলের মাধ্যমে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। এমনও হয়েছে মোস্তাক-জিয়া টোপ ফেলেছিল যে, বঙ্গবন্ধুকে জেল থেকে মুক্ত করে যুদ্ধ করবেন।”
কার্জন হল পরিবেশ ক্লাবের চেয়ারম্যান কবির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সহিদ আখতার হুসাইন, ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া বক্তব্য রাখেন।