সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের ২৫ লাখ মানুষের জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোরো জমির সোনালী ফসল। আর এজন্য সরকার প্রতিবছর শতকোটি টাকার উপরে বরাদ্দ দিয়ে থাকে হাওরে ফসলরক্ষা বাধ নির্মাণের জন্য।
এদিকে সুনামগঞ্জের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে শাল্লার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু তালেবকে প্রধান আসামি করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ ৫ জনকে আসামিকে করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালে সুনামগঞ্জের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সদস্য মো. শওকত আলী। স্পেশাল পিটিশনে মামলা নাম্বার ৪।
এ সময় মামলায়, শাল্লা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব, শাল্লা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাইয়ূম, শাল্লার হাবিবপুর ইউনিয়নের নারকিলা গ্রামের শান্ত কুমার দাশ, উপজেলার দামপুর গ্রামের বকুল আহমেদ এবং আনন্দপুর গ্রামের সাংবাদিক নামধারী বিপ্লব রায়। মামলায় জানানো হয়, চলতি বছরে শাল্লা উপজেলাধীন ভান্ডাবিল হাওরের উপ-প্রকল্পের আওতায় নতুন বৈশাখালী ভাঙ্গা পর্যন্ত ১৪৬ মিটার ডুবন্ত বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধকরন ও মেরামতের জন্য ২৭ নং পিআইসি তৈরি করা হলে সেখানে ২৪ লক্ষ ৭৩ হাজার ১০১ টাকা বরাদ্দ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড । কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ এর নিয়ম অনুযায়ী বাঁধের পাশে জমি যার সেই পাবে পিআইসি, সেই নিয়ম না মেনে শাল্লার হাবিবপুর ইউনিয়নের নারকিলা গ্রামের শান্ত কুমার দাশ, উপজেলার দামপুর গ্রামের বকুল আহমেদ এবং আনন্দপুর গ্রামের সাংবাদিক নামধারী বিপ্লব রায়কে অবৈধভাবে ও দুর্নীতির মাধ্যমে এই পিআইসির সভাপতি, সদস্য সচিব ও সদস্য করা হয়। সেখানে এখনও পর্যন্ত বাঁধের কাজের ২ কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও এবং নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ার অভিযোগও করা হয় মামলায় এবং তাদের পিআইসি দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে মামলা উল্লেখ্য করা হয়।এ ব্যাপারে মামলা দায়েরকারী হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সদস্য মো. শওকত আলী বলেন, শাল্লার পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিয়ে শান্ত, বকুল ও সাংবাদিক নামধারী বিপ্লব রায় পিআইসি দিয়েছেন, অথচ তাদের বাঁধের পাশে কোন জমি নেই, তাহলে কোন নীতিমালা মেনে তারা তাদের পিআইসি দিলেন, সরকারের এতগুলো টাকা নিয়ে এভাবে নয়ছয় করার এখতিয়ার কারো নেই, আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি আশা করি ন্যায় বিচার পাব।মামলারটি পরিচালনাকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার নাগ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার সকালে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলাটি আমলে নেয়।