নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি::ঢাকা- সিলেট মহা সড়কের হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ব্যস্ততম জন বহুল আউশকান্দি শহীদ কিবরিয়া চত্ত্বর। এই চত্বর দিয়ে প্রতিনিহতই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসা যাওয়া করেন। আউশকান্দি সিএনজি শ্রমিক ও মাইক্রোবাস শ্রমিকদের মধ্যে ১০টাকার নোট নিয়ে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গাড়িতে হামলা সহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুর করেছে সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিকরা। এতে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছিল। এ ঘটনাটি যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় দেশ বিদেশে চড়িয়ে পড়ে উক্ত ঘটনাটি। এ সংঘর্ষের খবর পেয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী ও নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমদ সহ শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঐ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ জুন মঙ্গলবার বেলা ৩ টা থেকে প্রায় বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি মাদ্রাসা স্ট্যান্ডের সিএনজি চালক দেবপাড়া ইউনিয়নের নোয়া হাটি গ্রামের মনু মিয়া পুত্র সিএনজি চালক জাবেদ মিয়ার সিএনজি অটোরিক্সার যাত্রী একই এলাকার দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের আব্দুল মুহিত মিয়ার পুত্র ও আউশকান্দি কিবরিয়া চত্ত্বরের মাইক্রোবাস (নোহা) চালক নোমান মিয়া গত ১২ জুন সোমবার সকাল ১১টায় জাবেদের সিএনজি যোগে আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজারে এসে ১৫ টাকা গাড়ি ভাড়া দেন। এ সময় সিএনজি চালক জাবেদ বলেন, ১০টাকার নোট পরিবর্তন করে দেয়ার জন্য। তবে, নোমান বলে, তার কাছে আর কোন টাকা নেই, এই নোট অচল নয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক বিতন্ডা দেখা দিলে স্থানীয়রা কয়েকবার বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। তবে, উশৃঙ্খল শ্রমিক জাবেদ মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নোমানের প্রতি। সে তার সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ ফরিদের দোকানে এসে বিষয়টি জানায়। এ সময় নোমান মিয়াকে ঐ দোকানের সামন দিয়ে যাওয়ার সময় আরেকবার কথাকাটি হয়। এর পরপরই ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করে সংঘর্ষে লিপ্ত শুরু হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আউশকান্দি ইউপি বিট অফিসার এস আই গৌতম দাশ, আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি নুরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রুহেল আহমদ, ইউপি সদস্য জমির আলী সহ উভয় পক্ষের শ্রমিক নেতাদের উপস্থিতিতে উশৃঙ্খল শ্রমিকরা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে রহমান সুপার মার্কেটের জেবা রেস্তোরাঁ, ওয়ালটনের শো’রোম, রাজু রেস্তোরাঁ, সরকারী ধান কাটার ২টি মেশিন, ৪টি পিকআপ গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। আশপাশ এলাকা থেকে লোকজন বাজারের উভয় পাশে হাজারো লোকজন জড়ো হয়ে যান।
এ ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এবং আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেঃ দিলাওর হোসেন।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমাদের পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতার আলাপ চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে, যদি কোন পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।