সিলেটপোস্ট ডেস্ক::ইউসেপ সিলেট অঞ্চলে ২০২৩ সালে এসএসসি-ভোকেশনাল ও এসএসসি পরীক্ষায় টেকনিক্যাল স্কুলগুলো হতে অংশগ্রহণকারী ১০০% উত্তীর্ণ ও জিপিএ ৫ প্রাপ্ত কৃতিশিক্ষার্থীদের স্বীকৃতি প্রদান করার উদ্দেশ্যে সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক কার্যালয় (বটেশ^র, খাদিমনগর, সিলেট) প্রাঙ্গনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী (অতিরিক্ত সচিব) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং ইউসেপ বাংলাদেশ এর সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক ড. মো: আব্দুল করিম (সাবেক মুখ্য সচিব) উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফালাহ উদ্দিন আলী আহমেদ, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রিজ, আলীমুল এহছান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং চেয়ারপার্সন, ইউসেপ এম্প্লয়ার্স কমিটি, সিলেট, মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর, সিলেট, এ এস এম কাসেম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, (শিক্ষা ও আইসিটি), সিলেট, মোঃ আব্দুল ওয়াহাব, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার, সিলেট, নিবাস রঞ্জন দাশ, উপপরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর, সিলেট এবং মো: জসীম উদ্দিন খন্দকার, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, সিলেট, মোঃ শাহিদুররহমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার, খাদিমসিরামিক্স লিমিটেড, সিলেট।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্যে ইউসেপ সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) মো: কাইউম মোল্লা, ২০২৩ সালে এসএসসি-ভোকেশনাল ও এসএসসি পরীক্ষায় ১০০% উত্তীর্ণ ও জিপিএ ৫ প্রাপ্ত ইউসেপ এর কৃতি শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন এবং ইউসেপ প্রতিষ্ঠায় ও কার্যক্রমে লিন্ডসেএল্যান চেইনির অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন পাশাপাশি ইউসেপ এর বর্তমান কার্যাবলী সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিবৃন্দ এবং ইউসেপ শিক্ষার্থীদেরকে স্বাগতজানান।
প্রধান অতিথি, আবু আহমদ ছিদ্দীকী (অতিরিক্ত সচিব), বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট বিভাগ তাঁর বক্তৃতায় ইউসেপ বাংলাদেশ এবং ইউসেপ সিলেট অঞ্চলের কার্যক্রমের ভুয়সী প্রশংসা করেন পাশাপাশি ইউসেপ স্কুলের কৃতি শিক্ষার্থীদের এসএসসি-ভোকেশনাল এবং এসএসসি-২০২৩ পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বের মূল্যায়ন করলে তারা বেশি বেশি উৎসাহপায় এবং আরও উদ্যমীহয়ে ওঠে। তাঁর বক্তৃতায়, কারিগরি শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপকরেন। জীবনের সফল হতে হলে পরিশ্রমের কোন বিকল্প নাই। এসএসসি কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হওয়া মানে, জীবনের একটি ধাপ অতিক্রম করা, এখানে এসে থেমে গেলে চলবেনা, সফল তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে হলে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও পরিশ্রম করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের শিক্ষার্থী আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে মেধা মননে যথাযথ বিকাশের জন্য পাঠ্যবইপড়ার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, রম্য রচনা এবং জ্ঞান আহরণের জন্য সাহিত্য, বিজ্ঞান ভিত্তিক এবং ইতিহাস সম্পর্কিত বই পড়ার প্রতিমনোযোগী হওয়ার জন্য আহবান করেন। পরিশেষে তিনি কৃতি শিক্ষার্থীদেরকে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্রেস্ট প্রদান করেন।
বিশেষ অতিথি আলীমুল এহছান চৌধুরী, তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে ইউসেপ এর কারিগরি শিক্ষার ভুয়সী প্রশংসা করেন এবং বলেন বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। ইউসেপ থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রশিক্ষণার্থীদেরকে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করার জন্য শিল্প মালিকদের আহবান করেন। আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজকদেরকে তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, একারণে, এধরণের স্বীকৃতস্বিরূপ অনুষ্ঠান ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পড়াশুনার প্রতি আরোও অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি বিশ^াস করেন।
বিশেষ অতিথি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমেদ, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্র্িরজ, তিনি তাঁর বক্তৃতার প্রথমেই এ বছর ইউসেপ সিলেট অঞ্চলের স্কুল হতে পাশকৃত সকল কৃতি শিক্ষার্থীদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন জীবনে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে হবে।
পরিশেষে, অনুষ্ঠানের সভাপতি ইউসেপ বাংলাদেশ এর সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক ড. মো: আব্দুল করিম (সাবেক মুখ্য সচিব) তিনি তাঁর সমাপনী বক্তব্যে ইউসেপ শিক্ষার্থীরা চরম দুঃখ, দারিদ্র ও কষ্টেরমাঝে থেকেও যে সাফল্য অর্জন করা যায় তার বাস্তব প্রমাণ দেখিয়েছে ইউসেপ সিলেট অঞ্চলের কারিগরি বিদ্যালায়ের এর এসএসসি ভোকেশনাল ও এসএসসি প্রোগাম এর মেধাবি শিক্ষার্থিরা। এ বছর সর্বমোট ১১৩ জন শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ২০২৩ সাল এর এসএসসি (ভোকেশনাল) ও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকরে কৃতিত্বের সাথে পাস করে সাফল্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত এসব শিক্ষার্থীরা ইউসেপ এর সহযোগিতায় স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম সঁিড়িতে পা রেখেছে। ওদের ছিলো লেখাপড়া করে বড় হওয়ার স্বপ্ন, কিন্তুু তা বাস্তবায়নের কোন উপায় ছিলোনা। আজ ইউসেপ এর সাহায্যে তারা স্বপ্ন দেখে বড় হওয়ার, দেশ ও জাতীর সেবা করার।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, চরম দরিদ্রতার কারণে কোনশিক্ষার্থী যাতে শিক্ষাকার্যক্রম থেকে ঝড়ে না পড়ে ইউসেপ বাংলাদেশ সে উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এ ইউসেপ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় হতে আজ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক যুবক এবং যুবতীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের আর্থিকভাবে সচ্ছল এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ইউসেপ এর অবদান বিষয়ক আলোকপাত করেন।