সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সিলেট নগরী থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের ছালিয়া গ্রাম। ওই গ্রামের প্রত্যন্ত একটি এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে একটি প্রকল্প। নাম দেওয়া হয়েছে দ্যা গার্ডিয়ান অর্ফানেজ ভিলেজ। শতাধিক অনাথ শিক্ষার্থীকে সেখান থেকে হাতে কলমে দেওয়া হবে শ্ক্ষিা।
পুরোপুরি সাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে দেখাশোনা করবে সেবামুলক সংস্থা কমিউনিটি এগেইনেস্ট পভারটি-ক্যাপ ফাউন্ডেশন। রোববার ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন সাবেক পররাষ্টমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমনেসহ অতিথিরা। আগামী ডিসেম্বর থেকে শিক্ষাথী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে।
ছালিয়া গ্রামের ভেতর আকাঁবাকা সড়ক পেরিয়ে অর্ফানেজ ভিলেজ। উপর থেকে দেখলে মনে হবে ছোট ছোট লাল কুটির। কোথাও চলছে নির্মাণ কাজ আবার কোন কোন কুটিরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভেতরে প্রবেশ করার পর আরো মনোমুগ্ধকর লাগবে। সবকিছু পরিপাটি করে তৈরী করা হয়েছে। শত অনাথ শিক্ষার্থী অনায়াসে যেন থাকতে পারে সেজন্য প্রায় ৭ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয়েছে এই গ্রামটি। শিক্ষা জীবন শেষে তারা যেন কারো মুখাপেক্ষী না হন সেজন্যই দীর্ঘমেয়াদী ফাউন্ডেশনের এই প্রকল্প।
ভেতরে গিয়ে দেখা যায় অনাথ শিশুদের থাকার জন্য তৈরী করা হয়েছে নান্দনিক রুম। নির্মাণ কাজ চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল, টেকনিক্যাল কলেজ, লাইব্রেরি, খেলার মাঠ ও মসজিদের। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবছরের শেষের দিকেই শুরু হবে অনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।
রোববার দুপুরে অনাথ শিক্ষার্থীদের গ্রামটি ঘুরে দেখেন সাবেক পররাষ্টমন্ত্রী সিলেট-১ আসনের এমপি ড.এ.কে আব্দুল মোমেন। তিনি তাদের কর্মকান্ড দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন। দেশের প্রতি ব্রিটিশ কিছু তরুণের এমন উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান। বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সোনার বাংলা গড়ে উঠবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড.এ.কে আব্দুল মোমেন বলেন, দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়তে অনেক সংগঠন নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে এসেছে, এর মধ্যে ক্যাপ ফাউন্ডেশন অন্যতম। ক্যাপ ফাউন্ডেশন দেশের দরিদ্র ও অনগ্রসর মানুষের কল্যাণে কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, এর আগেও ক্যাপ ফাউন্ডেশন দরিদ্র মানুষকে ৫০টি নৌকা দিয়ে তাদের অর্থ উপার্জনের পথ তৈরী করে দিয়েছিল। একটি দরিদ্র পরিবারকে ভিক্ষা না দিয়ে অর্থ উপার্জনের একটি মাধ্যম করে দিলে সেই পরিবার সারা জীবনের জন্য স্বাবলম্বী হয়। তিনি তাদের এই কার্যক্রমে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে বলেও জানান।
ক্যাপ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুস সহিদ মুহিতের সভাপতিত্বে ও প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো. দেলওয়ার হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু, সিলেট চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্টির সভাপতি তাহমিন আহমদ, পরিচালক ফখরুছ সালেহীন নাহিয়ান, বাংলাদেশ ফিমেইল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা জামিল চৌধুরী, ফাউন্ডেশনের সিইও আব্দুল নুর হুমায়ুন, ক্যাপ’র লিগ্যাল এডভাইজার ব্যারিষ্টার ময়নুল ইসলাম। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য দেন ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক আরিফ আহমদ সুমন, দিপক অধিকারী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও আর্ত মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি সংস্থা কমিউনিটি এগেইনেস্ট পভারটি-ক্যাপ ফাউন্ডেশন। ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অর্ফানেজ ভিলেজের ভিত্তিপ্রস্থর করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।