সংবাদ শিরোনাম
তারেক রহমানের খালাসের খবরে সিলেটে আনন্দ মিছিল  » «   সিলেটে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি’র উদ্যোগে মাসিক পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত  » «   কুলাউড়ায় মানব পাচারকারীর বাড়িতে বিজিবির অভিযান,আটক-৮  » «   চিনিকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি আলোচিত অঞ্চল সিলেট  » «   বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়াতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে: কয়েস লোদী  » «   এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই  » «   জাদুকাটায় সাড়ে ১৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনি-আনার জব্দ  » «   সিলেট বিএনপি দুই গ্রুপে বিভক্ত! ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নিতে উভয়েই এখন মরিয়া  » «   যেকোন মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব : তারেক রহমান  » «   সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও পুলিশী হয়রানি থেকে বাঁচতে চাই-সংবাদ সম্মেলনে রাসেল রবি  » «   ফসল রক্ষা বাঁধের বরাদ্দের নামে অহেতুককোন প্রকল্প নেয়া হবে না- উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান  » «   গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে আছে সিলেটের আওয়ামী লীগের নেতারা :কার্যক্রম নিরব  » «   সিলেট সীমান্তে (১৯ বিজিবি) প্রায় ৬৩ লক্ষ টাকার চোরাই পণ্যসহ ২ জনকে আটক  » «   স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ১৭টি বছর শ্রমিকদলের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন করেছে-কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেন  » «   অন্তরবর্তীকালীন সরকার এক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখালে জনগণের আস্থা ও সমর্থন হারাবে-শায়খ জিয়া উদ্দীন  » «  

বন্যায়ও থেমে নেই ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা চিনির চোরাচালান

সিলেটপোস্ট ডেস্ক::মে মাসের শেষ দিক থেকে সিলেটে শুরু হয়েছে দফায় দফায় বন্যা। আর এ বন্যায়ও থেমে নেই ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা চিনির চোরাচালান। প্রতিদিনই বড় ছোট একাধিক চালান ধরা পড়লেও মূলহোতারা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কখনো নৌকায়, কখনো ট্রাক, পিকআপ কিংবা সিএনজি অটোরিক্সায় করে চিনি পাচার হচ্ছে। মূলত চিনির বাহকরা দফায় দফায় আটক হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সিলেটে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬শ কেজি ভারতীয় চোরাই জব্দ করেছে ডিবি পুলিশ। যার মূল্য প্রায় দেড়কোটি টাকা। এসময় ৭ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোরে সিলেটের শাহপরান ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ ৭টি ট্রাক আটক করে। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে ভারত থেকে চোরাই পথে আনা অবৈধ চিনির চালান জব্দ করে।
আটকৃতরা হলেন- পাবনা জেলার সুজানগর থানার আন্দরকুটা গ্রামের মৃত রহিম প্রামানিকের ছেলে মো. হাফিজুর রহমান (২৭), পাবনা সদর থানার নাজিরপুর (কাজিপাড়া) গ্রামের বাদল প্রামানিকের ছেলে মো. রফিক হোসেন (৩২), একই গ্রামের মো. সিরাজ সিরাইয়ের ছেলে মো. হাফিজুর রহমান (২৮), রাজশাহী জেলার চারঘাট থানার খরের বাড়ি গ্রামের মো. আত্তার আলীর ছেলে মো. শিমুল হক (২৯), নাটোর জেলার সদর থানার মো. রমজান আলীর ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম (২৫), পাবনা সদর থানার জালালপুর গ্রামের আব্দুস ছাত্তার বিশ্বাসের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩২) ও একই থানার বাবুল চারা গ্রামের জাহান শেখের ছেলে শাকিল শেখ (২০)।
অভিযোগ রয়েছে- চিনিসহ ভারতীয় পণ্য চোরাচালানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা থেকে শুরু করে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী- এমনকি স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের সরাসরি মদদে সিলেট সীমান্ত দিয়ে একের পর এক আসছে চিনিসহ ভারতীয় নানা পণ্য। গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই ধরা পড়ছে লাখ লাখ টাকার চিনিসহ ভারতীয় বিভিন্ন চোরাই পণ্য।
গত ৬ জুন সিলেটের জালালাবাদ থানার হাটখোলা ইউনিয়নের উমাইরগাঁওয়ে পুলিশ ১৪টি ট্রাক ভর্তি ২ হাজার ১১৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে। প্রায় পৌণে দুই কোটি টাকা মূল্যের চিনির ওই চালানের ঘটনায় ৪ জন চালক আটক হলেও মূল হোতাদের একজনও ধরা পড়েনি। গত কয়েক মাসে সিলেটে অন্তত অর্ধশত কোটি টাকার চোরাই চিনি জব্দ করেছে পুলিশ, বিজিবি।
সিলেটের সীমান্তবর্তী চার উপজেলার মধ্যে চোরাই চিনি চোরাচালানের রুট গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট। আর এসব চিনি চোরাচালানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা থেকে শুরু করে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এমনকি স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদেরও নাম উঠে এসেছে। চোরাই চিনি ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পিয়াইন নদী, ডাউকি নদী, জিরো পয়েন্ট, লামাপুঞ্জি, গুচ্ছগ্রাম, সংগ্রামপুঞ্জি, তামাবিল, নলজুরী দিয়ে ভারতীয় চোরাই চিনি প্রবেশ করে। বন্যার আগে এসকল সীমান্ত দিয়ে আসা চোরাই চিনির চালান হাদারপাড়ে নেওয়া হতো। এরপর ট্রাক, পিকআপ কিংবা অন্য ছোটো যানবাহনের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হতো হরিপুরে। আর বন্যায় গোটা উপজেলা প্লাবিত থাকায় বর্তমানে সীমান্ত থেকে সরাসরি নৌকাযোগে চোরাচালান নিয়ে যাওয়া হয় জৈন্তাপুরের হরিপুরে। জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি, আলুবাগান শ্রীপুর। আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, কেন্দ্রী, ডিবির হাওর, আসামপাড়া, টিপরাখলা, করিমটিলা, নয়াগ্রাম, অভিনাশ টিলা, বাঘছড়া, রাবারবাগান, বালীদাঁড়া সীমান্ত এলাকা দিয়েও আসে চোরাই চিনি।
এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের বরম সিদ্ধিপুর, মাঝেরগাঁও, উৎমা, লামাগ্রাম, নারাইনপুর, চিকাডহর ও ছনবাড়ি দিয়েও চিনির চোরাচালান আসে। অপরদিকে কানাইঘাট সীমান্ত এলাকা চিনি চোরাচালানের নিরাপদ রুট। এ উপজেলার সুরইঘাট সুনাতনপুঞ্জি, বাউরবাগ ২য় খণ্ড, বাউরবাগ ১ম খণ্ড, নয়াখেল, বড়বন্দ, লোভা, নুনছড়া আলুবাড়ী, নিহালপুর ও নিহালপুর আমরতল দিয়েও আসে ভারতীয় চিনি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশে অতিরিক্তি উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চোরাই পণ্য ঠেকাতে মহানগর এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ৬টি থানা ও গোয়েন্দারা। চোরাই পণ্য জব্দ করার সময় আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয় এবং পরবর্তীতে চার্জশিভুক্ত আসামিও করা হয় তাদের। এছাড়া তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অন্য যাদের নাম আসে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে পুলিশ। চলতি বছরের ৬ মাসে সিলেট জেলা পুলিশ ও  সিলেট মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় চোরাই চিনি চোরাচালানের ঘটনায় মোট ৬১টি মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ১৪৭ জনকে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.