সিলেটপোস্ট ডেস্ক::নৈরাজ্য, দূর্নীতি, বলপ্রয়োগ প্রতিরোধ করে খনিজ সম্পদ সুষ্ট ব্যাবস্থাপনার জোর দাবী জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পাথর ও বালু মহালে অবৈধ চঁাদাবাজী বন্ধের দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি আজ মঙ্গলবার বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকীর কাছে প্রদান করা হয়।
তিনি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন। গোয়াইনঘাট বৈষম্যবিরোধী গণআন্দোলনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপিতে দুইদফা দাবী উপস্থাপন করা হয়। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ১৬জন নাগরিক স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর দেন। জাফলং ও বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারী বিগত সরকারের আমলে পরিবেশের দোহাই দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে পাথর আমদানী চালু রেখে দেশীয় পাথর সম্পদ উত্তোলন রহস্যজনকভাবে বন্ধ রাখার কারনে জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপর্যোপরি বন্যায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হওয়ার কারনে অনন্যোপায় হয়ে গরু-মহিষ, চিনিসহ বিভিন্ন ভারতীয় পন্যের চোরাচালানী পেশায় যুক্ত হতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে।
জনস্বার্থে সনাতন পদ্ধতিতে হলেও পাথর কোয়ারী খোলে দেওয়ার জন্য জোর দাবী জানানো হয়। সেইসাথে অদৃশ্যভাবে আহরনকৃত এবং ব্যবসায়ীদের মজুদকৃত পাথর উপজেলার সীমানা অতিক্রম হলে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় সিন্ডিকেটরা অবৈধ টেক্স আদায় করে আসছে তা বিধিমোতাবেক বন্ধ করার দাবী জানানো হয়।
পিয়াইন, গোয়াইন, জাফলং তথা সারী নদীর গোয়াইনঘাট অংশে অবৈধভাবে ১৫/১৬ বছর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে গভীর রাতে বালু উত্তোলনের কারনে নদীর নাব্যতা হারিয়ে প্রাকৃতিক দূর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে। নদী ভাঙ্গনের কারনে জাফলং চা বাগানসহ বিভিন্ন লোকালয় হুমকির সম্মুখিন। বিগত সরকারের দুর্বৃত্তায়নের কারনে বালু বহনকারী নৌযানগুলো থেকে প্রতি রাতে লক্ষ লক্ষ টাকা রয়েলিটির নামে অবৈধ চঁাদা আদায় করা হচ্ছে। রাষ্টীয় কোষাগারে নামমাত্র টাকা জমা দিয়ে কোটি কোটি টাকা আওয়ামীলীগের কতিপয় দুসররা হাতিয়ে নিয়েছে। ব্যক্তি পরিবর্তন করে পর্দার আড়ালে থেকে রাষ্ট্র বিরোধী অপকর্ম অব্যাহত রয়েছে। পেশীশক্তির মাধ্যমে বালুমহাল দখলকে কেন্দ্র করে অনেক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে। বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিবেশে আইনশৃংখলা বিঘ্নিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষে অনতিবিলম্বে বালু মহালগুলো বন্ধ করে যথাযত কতর্ৃপক্ষের মাধ্যমে বৈধ প্রক্রিয়ায় চালু করার জোর দাবী জানানো হয় লিপিতে। স্বাক্ষর করেন সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আল আসলাম মুমিন, সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এম এ রহিম, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি এডভোকেট নূর আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর, জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট লিয়াকত আলী, মুকতলা পাথর বালু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন মেম্বার, গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক এডভোকেট সাহেদ আহমদ, এডভোকেট মুজাম্মিল আলী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম উদ্দিন বকসী, লিয়াকত আলী আজাদ ও সাংবাদিক আমির উদ্দিন প্রমুখ। দাবী সমূহের কপি জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।