নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি::হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে খাল, বিল ও নদী- নালা দল নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে কয়েক বার লিখিত অভিযোগ দিয়েও আজ পর্যন্ত এই দখলদারদের কবল থেকে ডেবনা নদী-খালটি উদ্ধার না হওয়ায় অল্প বৃষ্টি বা বন্যার পানি আসার সাথে সাথেই নদী বা খাল ভরাট করায় পানি চলাচল করতে না পারায় আশপাশ এলাকার লোকজনের বাড়ি ঘরে বন্যার পানি আসলেই তলিয়ে যায়। ইনাতগন্জ ইউনিয়নের ফিংলী নদীর সীমানা হইতে আউশকান্দি ডেবনা ব্রীজ হয়ে গোপলা নদী পর্যন্ত সময়ের ব্যবধানে ডেবনা নদীর খালটি ক্রমেই পলি ও বালিমাটি জমে নবীগঞ্জ উপজেলার খরস্রোতা খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে বারবার নদী খননের আবেদন করেও সময়মতো নদী খাল ড্রেজিং না হওয়ায় এক সময় উপজেলাবাসীর আর্শিবাদ হলেও বর্তমানে খালটি ভরাট হয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে।গোপলা নদী হইতে ডেবনা ব্রীজ কুর্শি থেকে ফিংলী নদীর সীমানা পযর্ন্ত নদীর চর ও দু’কুল দখলে দীর্ঘদিন থেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এলাকার কয়েকজন ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের নেতৃত্বেই চলছে ডেবনা নদী দখলের প্রতিযোগীতা। তারা নদীর চরে গাছ লাগিয়ে কিংবা পাকা ও অর্ধপাকা টিনসেড ঘর তৈরি করে একের পর এক দখলে ব্যস্ত রয়েছেন এক শ্রেণীর ভূমিখেকোরা। দখল নিয়ন্ত্রনে নেয়ার পর এলাকার বিভিন্ন লোকদের কাছে উচ্চ হারে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই ভূমি খেকো চক্র। ফলে সরকার হারাচ্ছে ভূমি ও তার রাজস্ব এবং বর্ষা মৌসুমে মহাবিপদে পড়ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
এদিকে, নবীগঞ্জের আউশকান্দি-শেরপুর রোডের কুর্শীর নিকটবর্তী ডেবনা নদীর পূর্ব দিকে ব্রীজের নীচে নদী দখল করে টিনসেড সহ দালান ঘর নির্মাণ করেছেন আউশকান্দি ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য উস্তার মিয়া। এ বিষয়ে উস্তার মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার নিজেস্ব জায়গার উপরে ঘর নির্মাণ করেছি এবং রাস্তার উপরে আমার জায়গা রয়েছে। এছাড়া রায়পুর গ্রামের লোকজন ডেবনা ব্রীজ সংলগ্ন টং দোকান বসিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
উল্লেখ্য, উপজেলার আউশকান্দি -নবীগন্জ সড়কের ডেবনা ব্রীজ সংলগ্ন ডেবনা নদীতে এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তি ভবন নির্মাণ করে সরকারের সম্পত্তি দখলের উৎসব শুরু করেছেন। উল্লেখিত বিষয়ে অবৈধভাবে নদী তথা সরকারি সম্পত্তি দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী কয়েকবার লিখিত আবেদন করেন বলেও জানা যায়, এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অসংখ্যবার সংবাদ প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য, নদী, জলাশয়, উন্মুক্ত মাঠ, বিভিন্ন স্থান দখল ও পূনরুদ্ধার অধ্যাদেশ ১৯৭০ এর ৭(১) অনুযায়ী গুরতর অপরাধ।
এদিকে কিছু সংখ্যক ভুমিখেকো চক্র আউশকান্দি- নবীগঞ্জ সড়কের কুর্শীর নিকটবর্তী ডেবনা ব্রীজ থেকে প্রায় সম্পূর্ণ ডেবনা নদীর উভয়পার্শ্বে পাকা অর্ধপাকা ও টিনসেড গৃহ নির্মাণ এবং নদী ভরাট করে নদীকে জমিতে রুপান্তরিত করা ও নদী রক্ষা বাঁধ কেটে ফেলার কারনে এককালের খরস্রোতা ডেবনা নদীটি সংকোচিত হওয়ার পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে নদী দিয়ে নৌকা চলাচল ও পানি নিস্কাশনে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে পার্শ্ববতী কবরস্থান ভাঙ্গনসহ এ নদী দিয়ে নৌকা চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টি সহ বর্ষা মৌসুমে এলাকায় বিরুপ প্রভাব পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া নদ- নদীর দখল নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন ঝগড়া বিভাদ সহ নানান সমস্যা লেগেই রয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ডেবনা নদীর দুই পাশ সহ ডেবনা ব্রীজের নীচে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা অর্থ বিত্ত ও পেশীশক্তির প্রভাব দেখিয়ে নদীর চর ও নদী দখল করে নদীকে জমিতে রুপান্তর, বাড়ি-ঘর, দোকান পাট তৈরি করে কেউ কেউ নিজারাই ভোগকরে আসছেন, আবার কেউ কেউ অন্যদের কাছে বিক্রয় করছেন। এসব নদী ও খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জোর দাবী জানান সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।