সংবাদ শিরোনাম
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে পুলিশের অভিযান  » «   মাংস থেকে তীব্র দুর্গন্ধ, তোপের মুখে সিলেটের সুলতান’স ডাইন(ভিডিও সহ)  » «   গোয়াইনঘাটে মুজিব নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ  » «   পুলিশে এবার আসছে উপপরিদর্শক (এসআই) নিয়োগেরও বড় বিজ্ঞপ্তি  » «   ৪,২০০ কনস্টেবল নিয়োগ,সিলেট সহ ৬৪ জেলায় কত জন শূন্য পদে নিয়োগ নেওয়া হবে  » «   ধর্মপাশায় আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরে আগুনে একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু  » «   গোয়াইনঘাটে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ  » «   সিলেটের স্ট্রাইকার্সের মালিকানা জোর করে লিখিয়ে নেয়ার অভিযোগে মাশরাফির বিরুদ্ধে মামলা  » «   কানাডা থেকে দেশে ফিরেই আটক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ  » «   ছাতকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সাথে অশোভন আচরণে অভিযোগ  » «   অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস  » «   শিক্ষা ক্ষেত্রে অতীতের নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে : কাইয়ুম চৌধুরী  » «   ন্যায় বিচার ও সমাজ সংস্কারে নবীন আইনজীবীরা ভূমিকা রাখতে হবে-এ.কিউ.এম. নাছির উদ্দীন  » «   এবার অপসারিত হলেন সিলেট জেলা পরিষদের ১৮জন সদস্য  » «   সিলেট সহ ১২ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদেরও অপসারণ করেছে সরকার  » «  

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ভূয়া ঠিকানা ব্যবহার করে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::ভূয়া ঠিকানা ব্যবহার করে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক ১ নং ওয়ার্ডে নিয়োগ পাওয়া রুবিনা আমীন নামক এক চাকরি প্রার্থীর বিরুদ্ধে। তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া পূর্ব গ্রামের রুহুল আমীনের মেয়ে। যদিও নিয়োগে বলা হয়েছিল স্বাস্থ্য সহকারী পদের ক্ষেত্রে সাবেক ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে। যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ড (একই ইউনিয়ন) ভিত্তিক শূন্য ক ওয়ার্ড পদ পূরণ করা হইবে। তবে যোগ্য প্রার্থী থাকার পরও কেন সদর উপজেলার বাসিন্দাকে নিয়োগ দেওয়া হলো এসংক্রান্ত গত রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।

জানা যায়, গেল বছরের ৭ মে ২০২৪ ইং তারিখে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় ও এর নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের রাজস্ব খাতের আওতায় ১১ থেকে ১৭ গ্রেড ভুক্ত শূন্য পদে জনবল নিয়োগ এর লক্ষ্যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই সময় অসময়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে এই নিয়োগের বিরুদ্ধে। এদিকে অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পাওয়া রুবিনা আমীন এর পিতা বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার সুবাদে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ রুবিনা বেগমকে নাগরিকত্ব সনদপত্র প্রদান করেন। এতে কপাল পুড়ে স্থানীয় চাকরি প্রার্থীদের।

যদিও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল অসম্পূর্ণ/ ভুল তথ্য সংবলিত/ ত্রুটিপূর্ণ এবং চাকুরীর বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত ন্যূনতম যোগ্যতার সাথে যেমন-বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্থায়ী ঠিকানা, জাতীয়তা ইত্যাদি যে কোন বিষয়ে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য দ্বারা পূরণকৃত আবেদনপত্র নিয়োগের যে কোন পর্যায়ে বাতিল বলে গণ্য হবে। কোন প্রার্থী আবেদনপত্র পূরণে কিংবা নিয়োগ কার্যক্রম চলাকালীন অথবা নিয়োগ লাভের পর তার প্রদত্ত কোন তথ্য অসত্য বা মিথ্যা প্রমাণিত হলে নিয়োগ বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে নিয়োগ কারী কর্তৃপক্ষ যে কোন দরখাস্ত গ্রহণ অথবা বাতিল এবং এ নিয়োগ কার্যক্রমের আংশিক/সম্পূর্ণ পরিবর্তন/বাতিল এবং পদের সংখ্যা হ্রাস/বৃদ্ধির ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ কারী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে বলেও বলা হয়৷ তবে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় উল্লেখ করে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন অনেক চাকরিপ্রার্থীগন। রবিবারে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক ১ নং ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পাওয়া রুবিনা আমীন তিনি ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া পূর্ব গ্রামের বর্তমান ও স্থায়ী বাসিন্দা।

অভিযোগে চাকরি প্রার্থী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা তানিয়া আক্তার ও সোনিয়া আক্তার আরও উল্লেখ্য করেন, সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস কর্তৃক স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের লিখিত পরিক্ষায় উত্তির্ন হই এবং ভাইভা পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বিগত ০৭/০৫/২০২৪ তারিখে চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর দেখতে পাই যে,ভাইভায় চুড়ান্ত ফলাফলে আসা রোল দ্বারী ব্যক্তি (নামঃ রুবিনা আমিন, রোলঃ ২৪৫০১৯০২২৭১,পিতাঃ রুহুল আমিন, মাতাঃ সেলিনা বেগম, জাতীয় পরিচয় নংঃ ৬৪৫১৭৯১৮৪৯। জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী ঠিকানাঃ রংধনু -১, তেঘরিয়া পশ্চিম, তেঘরিয়া, সুনামগঞ্জ সদর,সুনামগঞ্জ।) আমাদের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার, ফতেপুর ইউনিয়নের, সাবেক ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন। তিনি সুনামগঞ্জ সদরের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কর্তৃক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলী ০৫ এবং ১৩ নং শর্তের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। এছাড়া টযভঢ়ড় ইরংযধিসনড়ৎঢ়ঁৎ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার, ফতেপুর ইউনিয়নের সাবেক ওয়ার্ডের তালিকাকে গোপন করে বর্তমান ফতেপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানের নিকট থেকে মনগড়া জালিয়াতি প্রত্যয়ন আনয়ন করেন। যা এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত সমূহের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এবং অন্যদিকে, ২৪৫০১৯০৬১৫০ রোল ধারী ব্যক্তি পেপার জালিয়াতি এবং ঘোষের মাধ্যমে নিয়োগের প্রস্তাবের মতো জঘন্য কাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে।  অথচ আমরা নিয়োগ পরিক্ষায় যাবতীয় শর্ত পালন করে লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হই এবং ভাইভা পরিক্ষায় ভালো করায় ( ভাইভা পরিক্ষায় পরিক্ষকগণ চাকরির আশ্বাস দেন এবং অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান) পরও অজ্ঞাত কারণে আমাদেরকে চাকরি নিয়োগ না দিয়ে ভুয়া প্রার্থীগণকে যোগ্য দেখিয়ে নিয়োগপত্র ইস্যু করা হয়। এছাড়াও নিয়োগের শর্তাবলী মোতাবেক ২৪৫০১৯০২২৭১ রোলধারী ব্যাক্তির স্থায়ী ঠিকানা এবং ২৪৫০১৯০৬১৫০ রোলধারী ব্যাক্তির পেপার জালিয়াতির বিষয়টি যাচাই পূর্বক তাদের নিয়োগ বাতিল ক্রমে ফতেপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দাদের যারা লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তাদেরকে নতুন করে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পাওয়া রুবিনা আমীনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার পিতা রুহুল আমীনের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি স্বীকার করেন দীর্ঘদিন ধরে তারা তেঘরিয়া পূর্ব গ্রামে বসবাস করে আসছেন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা হওয়ার পরেও কিভাবে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে নিয়োগ পেলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা হয়ে কিভাবে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিকত্ব সনদপত্র নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, সাধারণত ইউনিয়নের বাসিন্দারা কোনো ডকুমেন্টস ছাড়াই নাগরিকত্ব সনদপত্র নিতে আসেন, তিনিও (রুহুল আমীন) অফিসে আইসা বলছেন যে আমার মেয়ের জন্য একটা নাগরিকত্ব সনদপত্র লাগবে, পরে আমি দিয়ে দিছি৷ আমি জনি তিনি ফতেহপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা, উনার মেয়ে রুবিনা আমীন যে জাতীয় পরিচয়পত্রে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ঠিকানা দিয়েছেন বা বাসিন্দা তা আমি জানি না।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আমাদেরকে রিপোর্ট করবে, রিপোর্টে যদি উঠে আসে যে তিনি ঐ ইউনিয়ন বা উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন, তবে তার নিয়োগ বাতিল করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.