ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি::সিলেটের ওসমানীনগরে এক ইউপি সদস্যের বিরোদ্ধে জমি দখল,ভূমি দখল,অযথা মানুষকে মামলায় জড়ানো সহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগটি করেছেন এলাকার ভূক্তভোগী জনসাধারণ ও সাধারাণ মানুষ। এ বিষয়ে ১০ সেপ্টেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসক ও সিলেটের পুলিশ সুপারের কাছে ৯ জনকে অভিযোক্ত করে একটি অভিযোগ দিলেও এখনও তদন্ত হয়নি। এর আগে উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে সংম্লিষ্ট ব্যক্তির বিরোদ্ধে একাধিক ব্যক্তি তার নানা অপকর্মের বিরোদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ জমা দিলেও দলীয় প্রভাবে বেঁচে যায়।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের বড় ইসবপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা আব্দুল নূর এর স্ত্রী সায়দা বেগম। তিনি দির্ঘ দিন থেকে সৌদি আরবে প্রবাসী ছিলেন। বিগত ৮ মাস আগে তিনি দেশে আসেন। দেশে আসার সময় নগদ ৫ হাজার রিয়ালসহ বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রী সাথে নিয়ে আসছিলেন। প্রবাস থেকে নিয়ে আসা রিয়াল অন্যান্য সামগ্রী তার তিন ছেলের স্ত্রীকে সমান ভাগে ভাগ করে দেন। বড় ছেলে কওছর মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগমের কাছে রক্ষিত রাখার জন্য ৩ হাজার রিয়াল জমা রাখিলে বিষয়টি স্থানীয় উমরপুর ইউপির ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মুকিদ জেনে যান। তেরাব মিয়া নামের এক ব্যক্তি ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী আব্দুল মুকিদ পুত্রবধু ফাতেমা বেগমকে সাথে নিয়া রিয়াল আত্মসাৎ করিতে পারিবারিক সমস্যার সৃষ্টি করেন। ফাতেমা বেগমের কাছে রক্ষিত অবস্থায় রিয়াল থাকাবস্থায় তার বাবার বাড়ি বোনের বিয়েতে যান। ১৫ দিন পর ফাতেমা বেগম ও তার বোন জেনি বেগম বাড়িতে ফিরলে তার রক্ষিত রিয়াল ফিরত চাইলে ফাতেমা বেগম রিয়াল দিতে অস্কৃতি জানায়। আব্দুল মুকিদের প্ররুচনায় তার সাথে খারাপ আচরণ করে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। সংঘবদ্ধ হয়ে ফাতেমা বেগমের স্বামী কওছর মিয়া তাকে হত্যার উদ্যেশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তেড়ে এসে শক্ত কাঠ দিয়ে মাথায় ও পিঠে আঘাত করে। এসময় শাপলা বেগম ও জেনি বেগম নামের আরো দুই মহিলা তার চুল টেনেহিচড়ে পেটের নিচে লাথি মারে। শাপলার স্বামী কয়েছ মিয়া ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়া তাকে কুপ দেয়ার চেষ্টা করিলে আঙ্গুর মিয়া নামের এক মধ্যস্তকারীর সহায়তায় তিনি বেঁচে যান। তবে তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন সন্ত্রাসীরা তাকে যেকোন সময় হত্যা বা অপহরণ এমনকি র্ধষণের মতো জগণ্য অপরাধে লিপ্ত হতে পারে।
জানাযায়,গত এক তরফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উমরপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় বেপারোয়া হয়ে উঠেন আব্দুল মুকিদ ও তার সহযোগীরা। জনপ্রতিনিধি ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এরাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করে। গ্রামের নিরীহ মানুষের নানাভাবে অত্যাচার,পারিবারিক ঝগড়াকে কেন্দ্রে করে শালিশের নামে নানা হয়রানীসহ থানা পুলিশের ভয় দেখিয়ে অর্থ আত্বসাৎ করে আসছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ ব্যাবহার ও নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে মানুষের জমি থেকে ধান,সবজি কেটে নেয়া ও নিরীহ মানুষদের উপর হামলাসহ মামলা দায়ের করে বাড়ি ছাড়া করে আসছে। এসব বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলেও অদৃশ্য কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় না। ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়, সিলেট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আব্দুল মুকিদ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
ভোক্তভোগী আঙ্গুর মিয়া, তিনি একজন কৃষক। বড় ইসপুর গ্রামে ৭৫ শতাংশ জমিতে ধান চাষাবাদ করলে সেই ধানের দিকে কু-নজর পরে আব্দুল মুকিদের। ২০২২ সালের ৩ মার্চ ও ১৯ মার্চ দুই ধাপে রোপকৃত ধান জুরপূর্বক কটে নেয় আব্দুল মুকিদের ভাই আলাউর ও তার সহযোগীরা। এই বিষয়টি স্থানীয়রা সমাধানের চেষ্টা করলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের তুচ্ছু-তাছিল্ল করে মামলার ভয় দেখানো হয়।
আরেক ভোক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুকিদের এক ঘনিষ্ট সহযোগী জানায়,ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আব্দুল মুকিদ বেশ কিছু কৌশলী হয়ে উঠে। থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এলাকার ছোট বড় নানা অপ্রতীকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পক্ষ-বিপক্ষে পুলিশের ভয় দেখিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রবাসী মহিলা সাহেদা বেগমও তার ষড়যন্ত্রেরে স্বীকার।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপমা দাশকে তার সরকারী মুঠোফোনে কয়েক দফা ফোন দিলেও তিনিও রিসিব করেনি।
এদিকে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, পিপিএম, বলেন সিলেটের মাননীয় পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন,আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।