সিলেটপোস্ট ডেস্ক::আওয়ামী ফ্যাসিস্ট,গণহত্যার দোসর অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দানকারী প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিনকে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হকৃবি) নতুন ভিসি হিসেবে নিয়োগ প্রদানের প্রতিবাদ জানিয়ে ও নিয়োগ বাতিলের দাবিতে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সিকৃবির আজিজুল হক,মো. ফয়েজ আহম্মেদ, মো. নেয়ামত উল্যাহ,প্রফেসর ড. সামিউল আহসান তালুকদার , প্রফেসর ড. মাছুদুর রহমান, প্রফেসর ড. মাহবুব ইলাহী,প্রফেসর ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলাম ও শাবিপ্রবির প্রফেসর ড.মো. মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন,বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দানকারী পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের দোসর সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের (গশিপ) সাবেক সভাপতি, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য, গশিপ মনোনিত প্যানেল থেকে বিএনপি পন্থী সাদা দলকে ভয় দেখিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি, সাবেক ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক, সাবেক পরিচালক গবেষণা প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ একজন কট্টর আওয়ামী সমর্থক। তিনি জুলাই -আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র – জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকদের শান্তি সমাবেশের উদ্যোক্তা ছিলেন সায়েম উদ্দিন।
তিনি পতিত সরকারের আমলে সিকৃবিতে নিয়োগ প্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ ভাইস-চ্যান্সেলরদের ব্যবহার করে সিকৃবিতে নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির নজির স্থাপন করেন। এ সময় তারা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দানকারী প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদকে হকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে যা জুলাই-আগস্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করার সামিল। এই নিয়োগ কোন ভাবে মেনে নেয়া যায় না। তারা অবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ নিয়োগের পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানান, যে খুনি হাসিনা হাজার হাজার ছাত্রজনতাকে হত্যা করে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে সেই খুনি হাসিনাকে ৪ আগষ্ট পর্যন্ত সমর্থন দিয়ে ছাত্র জনতার বিপক্ষে আন্দোলন কারী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের সাবেক সভাপতি সায়েম উদ্দিনকে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ করা জুলাই গনহত্যার শহিদদের সাথে বেঈমানীর সমতুল্য। সুতরাং কালকের মধ্যে এই নিয়োগপত্র বাতিল করতে হবে।
এছাড়াও আওয়ামী পন্থী এই শিক্ষককে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ক্যাম্পাসে চাউর রয়েছে, হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের বাসিন্দা আওয়ামী পরিবারের সদস্য প্রফেসর সায়েম পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মাধবপুর ও চুনারুঘাট থেকে বিনা ভোটে নির্বাচিত ৫ আগস্টের পর ছাত্র জনতার রোষানলে থেকে বাঁচতে বিদেশে পলায়নকৃত সংসদ সদস্য ব্যরিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের নিকটাত্মীয় এবং প্রফেসর সায়েমের শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয় হলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। এদের মাধ্যমে তার নিয়োগ চুড়ান্ত হয়েছে বলে দাবী করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-সচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে সায়েম উদ্দিনকে হকৃবির ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।