সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার পশ্চিম ধরাধরপুর জামে মসজিদটি এক ব্যক্তি কুক্ষিগত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যক্তি মসজিদটি এক ওয়াকফ এস্টেটের অধীনে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এছাড়া জোরপূর্বক তিনি মোতায়াল্লির পদ আকড়ে ধরে করছেন নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা ২টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন পশ্চিম ধরাধরপুর এলাকাবাসী।
সবার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. আব্দুল মালিক নামের মুরুব্বি। তিনি বলেন, ‘আমাদের শতবর্ষী মসজিদটি পশ্চিম ধরাধরপুর জামে মসজিদ নামেই পরিচিত। মসজিদটি দিনের পর দিন একটি কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০১০ সালের নভেম্বরে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা ওয়াকফ পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে মসজিদ পরিচালনা কমিটিকে দেওয়া চিঠিতে ‘ইসি নম্বর ১৩৭৬৪ ধরাধরপুর জামে মসজিদ ওয়াকফ এস্টেট’ বলে উল্লেখ করা হয়। এসময় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেসময়ে সরকারের উপসচিব পদে কর্মরত পশ্চিম ধরাধরপুরের সৈয়দ মাহবুব-ই-জামিলের তদবিরে ওয়াকফ অফিস থেকে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আরও জানা যায়, এই মসজিদকে কথিত ‘সৈয়দ তবারক আলী এস্টেট’র আওতাধীন বলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মসজিদ নিয়ে মারামারি না হওয়ার স্বার্থে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সবার সিদ্ধান্তে সৈয়দ মাহবুব-ই-জামিলকে মোতাওয়াল্লি নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর মসজিদের নাম পরিবর্তনের চক্রান্ত শুরু করেন। এ লক্ষ্যে তিনি মসজিদের জন্য চাঁদা আদায়ের বইয়েও মূল না নাম ব্যবহার না করে মসজিদের বিভিন্ন নাম ব্যবহার করেন। সর্বোপরি তিনি মোতাওয়াল্লির দায়িত্ব লাভের পর মসজিদ পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতা এবং মসজিদে ধর্মীয় বিভিন্ন কাজেও তার খেয়ালখুশি নীতি চাপিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসী আরও জানান- ধরাধরপুরে ‘বাঘের বাড়ি শাহি ইদগাহ’ নামে একটি প্রাচীন ঈদগাহ রয়েছে। এতে শুরু থেকেই বছরে দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ফলে পশ্চিম ধরাধরপুর জামে মসজিদে ঈদের জামাত হয় না। কিন্তুসৈয়দ মাহবুব-ই-জামিল ২০২৩ সালের ২১ এপ্রিল শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ না করে ঘোষণা করেন যে, এবার ইদগাহে নয়, এ মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণায় গ্রামবাসীর মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে সালিশ বৈঠকের ফলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো সম্ভব হলেও জামিল গ্রামবাসীকে মামলার ভয় দেখান। এমনকি বিষয়টি নিয়ে তিনি বাদি হয়ে একটি এবং তার পক্ষের লোকজন দিয়ে আরও ৪টি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে দক্ষিণ সুরমা থানার মামলাটি মিথ্যা বলে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে এবং পরে আদালত সেটি ডিসমিস করে দেন।
এলাকাবাসী বলেন- ‘আমাদের একমাত্র দাবি হচ্ছে- আমাদের গ্রামের প্রাচীন জামে মসজিদকে কথিত ওয়াকফ এস্টেট তথা সৈয়দ মাহবুব-ই-জামিল চক্রের কবল থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা কতর্ৃপক্ষ যেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলে মসজিদের সহকারী মোতাওয়াল্লি মো. হোসাইন আহমদ, মো. ফজলে এলাহী ও মো. কুতুব উদ্দিন, যুগ্ম-সম্পাদক মো. আব্দুল খালিক, কোষাধ্যক্ষ মো. মুহিবুর রহমান মুহিন, সদস্য অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন জিতু, মো. জাহাঙ্গীর আলম চিকন, মো. আজিজুর রহমান, মো. তাজ উদ্দিন, বাবুল আহমদ, মো. আব্দুল জব্বার, রায়হান আহমদ কয়েছ, রুহুল আমীন, আক্তার হোসেন, আব্দুল মুকিত, বাচ্চু মিয়া, শামছুর রহমান শমছু ও মো. শফিকুল ইসলাম।