সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সিলেট নগরীতে প্রকাশ্য ঘুরাফেরা করছেন একাধিক মামলার আসামি ১০নং ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান হীরা। নগরীর ঘাসিটুলা এলাকার বি-ব্লকের বাসিন্দা লিলু মিয়ার পুত্র আব্দুর রহমান হীরা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্য যুবলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় থাকাকালিন সময় এলাকার সাধারণ মানুষসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ভাবে করেছেন হয়রানি। হীরা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও অনেক নিরীহ লোককে ভয় দেখিয়ে করেছেন নির্যাতনসহ নানান প্রতারণা। তার জন্য এলাকায় সাধারণ মানুষ কোন কিছু করতে হলে মোটা অংকের চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হতো। চাঁদা না দিলে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হতো। তবে হীরার কৌশলে প্রতারণার শিকার এসকল লোকজন তার ভয়ে মুখ খুলতেও সাহস পাননি। হীরার হাত রেহায় পাননি তার আপন ভাই মাহবুবুর রহমান আফাজসহ বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা নেতাকর্মীরাও।
প্রতারণার শিকার লোকদের অভিযোগ, অদৃশ্য কারণে আব্দুর রহমান হীরাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। নেজেকে এখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে গ্রেফতার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আব্দুর রহমান হীরা। তার
৫ আগস্টের পূর্বে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নিজ এলাকায় পুলিশের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে করিয়েছেন গ্রেফতার। রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জায়গা দখলসহ নানান অপরাধ মূলক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন আববদুর রহমান হীরা। স্থায়ী আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কাউন্সিলর তাজ উদ্দিন তাজ ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তির ছত্রছায়ায় অপরাধের স্বর্গরাজ্যে গড়ে তুলেছিলেন ঘাসিটুলার বাসিন্দা এই হীরা। এদের মধ্যে তাজ উদ্দিন তার নিকট আত্মীয় হওয়ার সুবাদে বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন আব্দুর রহমান হীরা। সকল অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে বিগত দিনও তার বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজি মামলাও হয়। তার আপন ভাই মাহবুবুর রহমান আফাজও তার বিরুদ্ধে করেছেন চাঁদাবাজির মামলা। যাহার নং- ৪৯ (৩১.১২.২০১৭। সেই মামলায় আব্দুর রহমান হীরাকে অভ্যাসগত চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেন তার আপন ভাই। ২০১৫ সালে ঘাসিটুলা সবুজসেনা ৭১নং বাসার রকিব আল মাহমুদ স্ত্রী লাকী আক্তার বাদি হয়ে করেন আরেকটি চাঁদাবাজি মামলা। যাহার নং- ১১(১০.০৭.২০১৫)। মামলায় লাকী বেগম বলেন তার স্বামী রকিব আল মাহমুদ একজন কয়লা ব্যবসায়ী। তাকে কয়লার ব্যবসায় করতে হলে আব্দুর রহমান হীরাকে চাঁদা দিতে হবে তা না হলে তিনি ব্যবসা করতে পারবেন না। হীরার বিরুদ্ধে ২০২২ সালে মারধর করে দোকানের ক্যাশ লুটপাট করে টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করেন ঘাসিটুলার সবুজসেনা-৯২, এ- ব্লকের মৃত মহরম মিয়ার পুত্র এখলাছুর রহমান ইরান। যাহার নং- ৬৮(২৩.০১.২০২২)। ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানীর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট আব্দুর রহমান হীরার বিরুদ্ধে ৪ আগস্ট কোট পয়েন্টে দেশী-বিদেশী অস্ত্র নিয়ে মিছিল সহকারে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি থানা একটি মামলা দায়ের করেন বড়কাঞ্চি গ্রামের মায়ারবাড়ি এলাকার এবাদুল হকের পুত্র মামুনুর রশিদ। এধনের ঘটনায় ০৩ নভেম্বর ২০২৪ইং তারিখে নগরীর কলাপাড়া এলাকার আব্দুল করিমের পুত্র জুম্মা মিয়া বাদি হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। যাহার নং- ০৬(০৩.১১.২০২৪)।
আব্দুর রহমান হীরার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও রয়েছে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তার স্ত্রী বিগত সময় গুলোতে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করেছেন এলাকার মুরব্বী ও যুবকদের। হীরার অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করলেই তার স্ত্রী মামলা দিয়ে হয়রানী করতেন এলাকার মানুষকে। সেই ভয়ে বিগত দিনগুলোতে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে না। আব্দুর রহমান হীরা যুবলীগ নেতা হওয়ার পাশাপাশি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মানুষকে হয়রানী করছেন বলে রয়েছে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ।
২০০৪ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন থেকে জরিপ চলাকালীন সময়ে প্রয়াত কাউন্সিলর এডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরীর নাম ব্যবহার করে জরিপ কর্মকর্তাকে অপহরণ করে লাক্কুরতলা চা বাগানে নিয়ে মুক্তিপন আদায় করেন আব্দুর রহমান হীরা। বিষয়টি এলাকার লোকজন জানলে ১০নং ওয়ার্ডবাসী জালালাবাদ বাঁশ বেত ফ্যাক্টুরীতে হীরার বিরুদ্ধে সালিশ হয়। সেই সালিশে তাকে জুতার মালা পরিধান করানো হয়।
এলাকাসীর দাবী আব্দুল রহমান হীরাকে প্রশাসন যেনো গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। হীরাকে গ্রেফতার করলে এলাকায় স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।