সংবাদ শিরোনাম
সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাব’র সভাপতির মোবাইল চোরি :উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন  » «   সিলেটেের আবাসিক হোটেলগুলোতে চলছে অসামাজিক কর্মকাণ্ড: আধ্যাত্মিক ও সামাজিক অবস্থারও অবনতি  » «   সিলেট নগরীতে ছিনতাই আতঙ্ক বাড়ছে, সর্বস্ব কেড়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে ছিনতাইকারীরা  » «   সিলেটে আট তরুণ-তরুণীকে আটক করে বিয়ে নিযে সোশ্যাল মিভিযায তোলপাড়  » «   রিজেন্ট পার্ক রিসোর্ট থেকে ১৬ তরুণ-তরুণীকে আটক করে বিয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী  » «   খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক থাকা উচিত না: মির্জা ফখরুল  » «   খাদিমপাড়া ইউনিয়নের সিরাজনগরে নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্কের উদ্বোধন  » «   সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদীতে ৬টি বালুভর্তি নৌকা আটক  » «   ৪৫ বৎসর পর রুট শিন্নি অনুষ্টান পালন করল মিটাভরাং মজলিশপুরবাসী  » «   সিলেট বিমানবন্দর থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় অভিনেত্রী নিপুণকে আটকে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ  » «   তামাবিল মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধকল্পে হাইওয়ে থানা পুলিশের মতবিনিময় সভা  » «   দেশের কৃষকদের উন্নয়নে শহীদ জিয়া অবদান অপরিসিম: আনিসুল হক  » «   জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত  » «   মাস্ক পরে গোপনে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী পালন করতে গিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতা আটক  » «   দোয়ারাবাজারে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে ডিসি  » «  

নান্দনিক বইমেলা

vbআহমেদ আকবর:

 একুশ আমার প্রাণের, একুশ আমার আবেগের, একুশ আমার ভালোলাগার, একুশ আমার ভালোবাসার। আমাদের মুখে হাসি ফোটায় অমর একুশের বইমেলা। নজরকাড়া কারুকার্যময় বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে আমাদের হৃদয় দোলে ওঠে। মন নেচে ওঠে। বইকে নিয়েই আবর্তিত হয় বইপ্রেমী মানুষের জীবন। রসনাপ্রিয় মানুষ যে রকম মাছ, ভাত, ডাল, গোশতের স্বাদ পেয়ে পরিতৃপ্ত হয় তেমনি বইপ্রেমী মানুষও নতুন নতুন বই পাঠ করে জ্ঞান লাভ করে। নতুন বই পাঠ করতে না পারলে তাদের কাছে ভালো লাগে না। মন পরিতৃপ্ত হয় না, দিলে শান্তি আসে না। তাই তাদের চাই নতুন নতুন বই।
বই মানুষের মনের খোরাক জোগায়; বিবেকের অন্ধকার ঘুচিয়ে হৃদয়ে আলোর চেরাগ জ্বালায়। বইকে সঙ্গী করতে পারলে মানুষের মনে কোনো দুঃখ থাকে না। সব কিছু প্রতারণা করলেও বই কখনো মানুষের সাথে প্রতারণা করে না। বিখ্যাত কবি ওমর খৈয়াম বলেছেন- ‘প্রিয়ার মায়াবী চোখ ঘোলাটে হয়ে যাবে রুটি ও মদ ফুরিয়ে যাবে কিন্তু বই হলো অনন্ত যৌবনা’।
ফেব্রুয়ারি মাস এলে বাংলা একাডেমি পরিণত হয় উৎসবের আঙ্গিনায়। বাংলা একাডেমি তখন আর আগের রূপে থাকে না। তখন নতুুন বইয়ের গন্ধ আর একাডেমি প্রাঙ্গণের গোলাপ, গাঁদা মিশে একাকার হয়ে যায়। নতুন বইয়ের ম ম গন্ধে আমোদিত হয় চার দিক। সব শ্রেণীর সব পেশার মানুষ বইমেলাতে আসে। মেলায় এসে হাজির হন বরণ্যে কবি সাহিত্যিক, শিল্পী, কলাকুশলীরা। লাঠিতে ভর দিয়ে আসে বয়স্ক মানুষ। মায়ের হাত ধরে আসে কোমলমতি শিশুরা। সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় এই বইমেলা। মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ।
বইমেলাকে ঘিরে অনেক মানুষেরই ভাগ্য বদল হয়। এই একটি মাত্র বইমেলার জন্য সারা বছর মুখিয়ে থাকে লেখক আর প্রকাশকবৃন্দ। বইপাগল মানুষেরা ছুটে আসে বইমেলায়। বইপ্রেমীরা অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে বইমেলার জন্য। কখন আসবে ফেব্রুয়ারি মাস। কখন বসবে বইমেলা। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এক সময় ফেব্রুয়ারি মাস এসে তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটায়। তখন ঘরের ভেতর বসে থাকা দায়; মন শুধু ছুটে যেতে চায় প্রাণের বইমেলায়।
বইমেলার সাথে জড়িয়ে রয়েছে অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্য। ফেব্রুয়ারি এলে আমাদের মনে পড়ে ভাষা আন্দোলনের কথা। শহীদ রফিক, সালাম, জব্বার, শফিউরের রক্তে ভেজা শার্ট ভেসে ওঠে চোখের সামনে। রক্ত দিয়ে কিনেছি আমরা
ভাষার অধিকার। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ লিখেছেন অমর কবিতা। ‘মাগো, ওরা বলে সবার কথা কেড়ে নেবে তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না, বলো, মা তাই কি হয়’? কবিতাটি ভাষা আন্দোলনের অন্যতম এক স্মারক। বীর শহীদদের রক্তের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে আজকের এই বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের মানুষ বইকে কত যে বেশি ভালোবাসে বইমেলা এলে তা দেখা যায়। লম্বা লাইন ধরে বইমেলায় ঢোকে। বইমেলা এখন আর নিছক সাধারণ কোনো মেলা নয়। এটি এখন পরিণত হয়েছে সর্বজনীন মেলায়। বইমেলা বাংলার অপরিহার্য এক সাংস্কৃতিক অংশ। যারা বই পড়ে না তারাও বইমেলায় এসে ঘুরে যায়। দুই একটি বইও কিনে নিয়ে যায়। প্রিয় মানুষের হাতে তুলে দেয় নতুন বই। নতুন বইয়ের নজরকাড়া প্রচ্ছদ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। যে বইয়ের মলাট একটু সুন্দর সে বইটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে অনেকে। বইয়ের গন্ধ শোঁকে।
বইমেলার সাথে জড়িয়ে রয়েছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। চিত্তরঞ্জন সাহার স্মৃতিবিজড়িত বইমেলা। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর স্বপ্নের বইমেলা। ভাষা আন্দোলন আর স্বাধীনতা যুদ্ধ একই সুতোয় গাঁথা। বইকে শুধু ভালোবাসলেই হবে না পড়তেও হবে। বুক সেলফে সাজিয়ে রাখার ভেতর বইয়ের কোনোই সফলতা নেই। কেননা বই মানুষের বিবেককে জাগিয়ে তোলে, আত্মাকে উন্নত করে, মনুষ্যত্বকে বিকশিত করে, ব্যক্তিত্বকে দৃঢ় করে, অজ্ঞতাকে দূরীভূত করে, চলার পথকে সুগম করে। আগামীর পথে চলার দিক নির্দেশনা দেয় বই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বই পড়ার লোক দিন দিন কমে যাচ্ছে। স্বার্থবাদী আর ভোগবাদী এই পৃথিবীতে বই পড়ার মতো লোকের আজ বড়ই অভাব।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.