সংবাদ শিরোনাম
সিলেটেের আবাসিক হোটেলগুলোতে চলছে অসামাজিক কর্মকাণ্ড: আধ্যাত্মিক ও সামাজিক অবস্থারও অবনতি  » «   সিলেট নগরীতে ছিনতাই আতঙ্ক বাড়ছে, সর্বস্ব কেড়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠছে ছিনতাইকারীরা  » «   সিলেটে আট তরুণ-তরুণীকে আটক করে বিয়ে নিযে সোশ্যাল মিভিযায তোলপাড়  » «   রিজেন্ট পার্ক রিসোর্ট থেকে ১৬ তরুণ-তরুণীকে আটক করে বিয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী  » «   খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক থাকা উচিত না: মির্জা ফখরুল  » «   খাদিমপাড়া ইউনিয়নের সিরাজনগরে নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্কের উদ্বোধন  » «   সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদীতে ৬টি বালুভর্তি নৌকা আটক  » «   ৪৫ বৎসর পর রুট শিন্নি অনুষ্টান পালন করল মিটাভরাং মজলিশপুরবাসী  » «   সিলেট বিমানবন্দর থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় অভিনেত্রী নিপুণকে আটকে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ  » «   তামাবিল মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধকল্পে হাইওয়ে থানা পুলিশের মতবিনিময় সভা  » «   দেশের কৃষকদের উন্নয়নে শহীদ জিয়া অবদান অপরিসিম: আনিসুল হক  » «   জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত  » «   মাস্ক পরে গোপনে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী পালন করতে গিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতা আটক  » «   দোয়ারাবাজারে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে ডিসি  » «   সমাজ সেবক ও প্রবাসী কমিউনিটি নেতা কাদিরকে সংবর্ধনা প্রদান  » «  

৩ বছর পার হলেও ফিরেননি ইলিয়াস আলী

স্ত্রী ও কন্যার সাথে ইলিয়াস আলী। ফাইল ফটো

স্ত্রী ও কন্যার সাথে ইলিয়াস আলী। ফাইল ফটো

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ ৩ বছরেও সন্ধান মিলেনি বিএনপির কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলীর। তার সন্ধান দাবিতে সিলেটে গড়ে উঠা আন্দোলনেও ভাটা পড়েছে। মা, স্ত্রী ও সন্তানেরা আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন তাদের প্রিয় মানুষটি ঠিকই ফিরবেন। গত ১৭ এপ্রিল ৩ বছর পূর্ণ হলো ইলিয়াস আলী নিখোঁজের। এ উপলক্ষে সিলেটে মিলাদ মাহফিল ছাড়া আর কোনো কর্মসূচি পালন করেনি তার অনুসারীরা।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ইলিয়াস আলীর ফিরে আসার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। তাদের যুক্তি গত বছরের ৪ মে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান মুজিব গাড়ি চালকসহ নিখোঁজ হন। এর প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে উঠে। প্রায় সাড়ে ৩ মাস পর আগস্টের ১৯ তারিখ ঢাকায় টঙ্গী ব্রিজ এলাকা থেকে তারা উদ্ধার হন। সুনামগঞ্জ বিএনপি নেতা মুজিবকে ফিরে পাওয়া তাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয় বলে দাবি করে বিএনপি নেতারা জানান, এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সরকারের ‘গুম’ নামের কারাগার থেকে ইলিয়াস আলীসহ নিখোঁজ হওয়াদের ফিরিয়ে দেবে সরকার। অন্যথায় তাদের চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ইলিয়াস আলীর সন্ধান না পাওয়ায় অনেকে “অমঙ্গল’ চিন্তাও শুরু করেছেন। আদৌ ইলিয়াস আলী বেঁচে আছেন কি না এ প্রশ্নও উঁকিঝুকি দিচ্ছে মনের কোনে। কিন্তু তার মা সূর্যবান বিবি, স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা ও সন্তানেরা ‘অপয়া’ সেই চিন্তা মাথায়ই আনতে চাচ্ছেন না। অনুসারীরাও তা ভূলে থাকার চেষ্টা করছেন। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত টানা অবরোধে সিলেট বিএনপি মাঠে নামতে না পারায় প্রিয় নেতার কথা সবাই স্মরণ করছেন। বিএনপিপন্থীরা বলছেন, ইলিয়াস আলী সরকারের ‘গুম’ নামক কারাগারে বন্দি না থাকলে হরতাল অবরোধে সিলেটের ভিন্ন চিত্র দেখা যেতো। হয়তো সরকার পতনের রোডম্যাপ সিলেট থেকেই রচিত হতো। আন্দোলনে ভিন্ন গতি দেখতো দেশবাসী।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক, সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, ইলিয়াস আলী থাকলে আন্দোলনে সিলেট বিএনপির চেহারা অন্যরকম দেখা যেতো। তার নেতৃত্ব গুণ ছিলো অসাধারণ। ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাবার আন্দোলন চলছে, চলবেই।

এ ব্যাপারে ইলিয়াস মুক্তি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রিয় সহ সভাপতি আবদুল আহাদ খান জামাল বলেন, ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ৩ বছর পূর্তিতে নগরীতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গত ৩ মাসে যে পরিস্থিতি ছিলো তাতে কর্মসূচি পালনে কিছুটা ঢিলেঢালা ভাব ছিলো। তবে ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাবার আন্দোলন চলছে, তাকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত তা চলবে।

ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা স্বামীর ফিরে আসার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, একদিন তিনি ফিরে আসবেন। সিলেটের কোটি মানুষের দোয়া বিফলে যেতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর স্মরণাপন্ন হয়েও কোনো ফল না পেলেও স্বামীর ফিরে আসার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

এদিকে ইলিয়াস আলীর ভাই আসকির আলী গতবছরের আগস্ট মাসে লন্ডনে একটি লাইভ টেলিভিশন শোতে দাবি করেন ইলিয়াস আলী ভারতের দমদম কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তার এ বক্তব্যে আশায় বুক বাধেন দলীয় কিন্তু পরবর্তীতে এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলী ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানী ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। তারপর থেকে তাকে বহনকারী গাড়ির চালক আনসার আলীকেও পাওয়া যায়নি। তবে দুটি মোবাইল ফোনসহ গাড়িটি রাস্তায় পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে নিঁেখাজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী। নিখোঁজ হওয়ার পর ইলিয়াস আলীর মোবাইল ফোন থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির ফোনে কল করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর তার মোবাইল থেকে বারবার বিভিন্ন ব্যক্তির ফোনে ফোন আসাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অনেকেই মনে করছেন ইলিয়াস আলীকে যারা গুম করেছে তারা এসব ফোন কলের মাধ্যমে জানাচ্ছেন, তিনি বেঁচে আছেন। তবে কোথা থেকে কে বা কারা ইলিয়াস আলীর ফোন ব্যবহার করছে তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে গত এক বছর ধরে ইলিয়াস আলীর মোবাইল থেকে ফোন আসা বন্ধ রয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.