সলমান আহমদ চৌধুরী : ঋতু অনুযায়ী ফাল্গুন-চৈত্র বসন্ত কাল। এ বছর চৈত্র মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়েই আবহাওয়ায় অনুভূত হয় গ্রীষ্মের আবহ। কাল হিসেবে সেটি বসন্ত হলেও তাপমাত্রা বলে দিয়েছিল গ্রীষ্মের শুরুমাত্র। যদিও বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মের তাপমাত্রা অনুভূত হওয়ায় ঘরে ঘরে দেখা দিচ্ছে জ্বর, সর্দি, কাশি, গা-ব্যথা এমনকি নানারকম পেটের পীড়া। এ সকল অসুখে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। অনেকের জ্বরের সাথে বমিও হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন দিনে প্রচণ্ড গরম এবং গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত কিছুটা ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় পড়ছে মানুষ। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। একটু নিয়ম মেনে এবং স্বাস্থ্যসম্মতভাবে চললে তেমন কোনো আশংকা নেই। তবে শূন্য থেকে ১ বছর বয়সী শিশুদের জ্বর সর্দি কাশি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে ওষুধ খাওয়ানো প্রয়োজন। কখনোই নিজে বা অন্য কারও কাছে শুনে ওষুধ সেবন উচিত হবে না। বিশেষ করে জ্বরের ওষুধ এবং এন্টিবায়োটিক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা কোনোভাবেই সমীচীন হবে না। অপরদিকে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিগত বেশ কয়েক বছর যাবত আবহাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকতার পরিবর্তে বৈচিত্র দেখা যাচ্ছে। গ্রীষ্মের আগেই অতি গরম এবং শীতকাল যথাযথভাবে স্থায়ী না হওয়া ও বর্ষাকালে কাক্সিক্ষত পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে না।
সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেল, বিভিন্ন বাড়িতে জ্বর,সর্দি,কাশিতে ভুগছেন অনেকেই। জ্বরে আক্রান্তদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা ঠিকমত খেতে পারছেন না। মুখ তেতো এবং কোনো রুচি নেই। জ্বরের সাথে অনেকের বমি হচ্ছে। জ্বরের সাথে সাথে অনেকের শরীরে ব্যথা হচ্ছে। অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই নিজ উদ্যোগে প্যারাসিটিমল, নাপাসহ বিভিন্ন ওষুধ এবং এমনকি এন্টিবায়োটিক ওষুধও খাচ্ছেন। ফলে নানারকম শারীরিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এ সকল জটিলতা নিয়ে পরবর্তীতে দ্বারস্থ হচ্ছেন চিকিৎসকদের কাছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অনেকের শরীরের চামড়ায় নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। অনেকের চোখের নীচে প্রদাহ তৈরি হচ্ছে। সবমিলিয়ে আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে নানা সম্যসায় পড়ছে মানুষ।
এ ব্যাপারে এক শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে জানা গেল, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে জ্বর, সর্দি,কাশি এমনকি পেটের পীড়াও হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঘাম যেন শরীরে বসে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশু ও বৃদ্ধদের রোদে বেশি সময় ঘোরাঘুরি না করা ভালো। খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক খাবারের সাথে শাক সবজি ও তরিতরকারী বেশি বেশি খাওয়া প্রয়োজন এবং প্রয়োজন মতো পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।