২০ দলীয় জোট না ভাঙ্গলেও কার্যকারিতা থাকছে না

সিলেট পোস্ট ২৪ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুন ২০১৫, ৫:১৫ অপরাহ্ণ
এদিকে জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটের বিষয়ে সম্প্রতি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে বিষোদ্গার করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। গত ২৮শে মে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রকাশ্যে জোট ভেঙ্গে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। ওই সভায় উপস্থিত খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য জিয়াউর রহমানও একসময় জোট গঠন করেছিলেন। পরে তিনি ওই জোট ভেঙ্গে দিয়ে তাদের বিএনপিতে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমি মনে করি, এখন আর ২০ দলীয় জোটের প্রয়োজন নেই। কারণ যেসব জেলায় জোটের শরিক দলের আসন রয়েছে, সেসব জেলায় বিএনপির নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই দলের টানাপড়েনের মধ্যেই গত বছরের জানুয়ারিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এক প্রস্তাবে বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ার কথা বলা হয়েছে। পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সুনাম আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত সেই সুনাম ধরে রাখা এবং একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার সংস্কৃতি বৃদ্ধি করা। বিএনপির উচিত জামায়াতে ইসলাম এবং হেফাজতে ইসলাম থেকে নিজেদের দূরে রাখা।জোট নেতাদের কারো কারো মতে, বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় আনতে হবে। প্রয়োজন হলে অবশ্যই নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। তবে তারা (বিএনপি) একা নয়। সবার সঙ্গে আলোচনা করে নেয়া উচিত। তাদের মতে, বিএনপি হুটহাট সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। শরিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার প্রয়োজন মনে করে না তারা।২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে আগেও যতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এখনও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের বৈঠক এটাই প্রমাণ করে। তবে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে তাদের আরও সুসংগঠিত হতে হবে। তিনি দাবি করেন, বিএনপি সঠিক পথেই চলছে।
জাতীয় পার্টি- বিজেপি সভাপতি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আমাদের রাজনীতি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে । জামায়াত দাবি করে তারা ইসলামিক দল। আগের মতো এসব ইসলামি দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবস্থান নেই। বিএনপি যদি জামায়াতকে ছেড়ে দেয়, সে ক্ষেত্রে তারা তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ ২০ দলের সবারই জোট হয়েছে বিএনপির সঙ্গে। এখানে যদি জামায়াতকে জোট থেকে বিএনপি বের করে দেয়, তাহলে ১৯ দলীয় জোট হবে। কারণ ২০০১ সালের রাজনীতি ও প্রেক্ষাপট আর বর্তমান এক নয়। জনপ্রিয়তা থাকলেই হবে না, এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমর্থনসহ আরও বেশকিছু উপাদান থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপিকে নিয়ে চারদলীয় জোট গঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে গঠন করা সরকারের মন্ত্রিসভায় জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ মন্ত্রী হন। জোট সরকারের বিদায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক জমানায় এ জোটের তেমন তৎপরতা না থাকলেও ২০০৯ সালের নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবেই অংশ নেয় বিএনপি-জামায়াত।