সংবাদ শিরোনাম
সমাজে সাম্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায়  রাসুল (সা.) এর আদর্শের কোনো বিকল্প নেই-সিলেট বিভাগীয় কমিশনার  » «   সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি- লুৎফুর, সাধারণ সম্পাদক-জহুরুল, কোষাধ্যক্ষ ফয়সল  » «   ডিম, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার  » «   মাজারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার  » «   আজকে সিলেটে বিএনপির র‍্যালি-সমাবেশ স্থগিত পরবর্তী ১৭ তারিখ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে  » «   গণতন্ত্র হত্যাকারীরা যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে, খেয়াল রাখতে হবে: কাইয়ুম চৌধুরী  » «   ওসমানীনগরে আ,লীগ নেতা মুকিদের বিরোদ্ধে প্রবাসী মহিলার টাকা আত্নসাতের অভিযোগ!  » «   শান্তিগঞ্জের টাইলা গ্রামে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিনমুজুরের বসতভিটা দখল করেছে ভূমিখেকোচক্র  » «   সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ভূয়া ঠিকানা ব্যবহার করে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ  » «   সিলেটসহ ২৫ জেলার নতুন ডিসিদের কর্মস্থলে যাওয়া মানা, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিফিং স্থগিত  » «   সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে স্বামীর ছুরিকাঘাতে প্রাণগেল স্ত্রীর   » «   সিলেটের শাহপরাণ (রাহ.) মাজারে আলেম-জনতার সঙ্গে গভীর রাতে ওরসপন্থীদের সংঘর্ষ  » «   সারাদেশের সাত বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৬১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি, একজনের মৃত্যু  » «   সিলেটে জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেলেন পি. কে. এম এনামুল করিম  » «   গোলাপগঞ্জে নির্দোষ ব্যক্তিকে আন্দোলনের মামলায় আসামি দিয়ে হয়রানির অভিযোগ  » «  

রমজানে খাদ্যাভাস: ভাজা-পোড়ার বিকল্প কি আছে?

2সিলেট পোস্ট রিপোর্ট:  বছর ঘুরে আবারো চলে এসেছে রমজান মাস। রমজান আসার সাথে সাথেই প্রতি বিকেলে পুরনো ঢাকার চকবাজারে শুরু হয়ে যায় ইফতার বিক্রেতাদের হাক-ডাক, আর পুরো রাস্তাজুড়ে ভ্যানে-টেবিলে সাজানো থাকে শত রকমের ইফতারির খাবার।

 

চিকেন রোস্ট, চিকেন ফ্রাই, শামি কাবাব, সুতি কাবাব, শাহি জিলাপি থেকে শুরু করে হরেক রকম খাবার মিশিয়ে বড় বাপের পোলায় খায় নামের অদ্ভূত এক খাবার। কি নেই চকবাজারে!

 

সারাদিন রোজা রাখার পর মানুষ একটু ভাজা-পোড়া খেতেই পছন্দ করে। রমজানে ভাজা-পোড়া খাবার বিক্রির কারণ হিসেবে বললেন চকবাজারের আমানিয়া হোটেলের স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ হানিফ।

তার কথা অবশ্য ভুল নয়। শুধু পুরনো ঢাকার মানুষেরা না, এই এলাকার বাইরে থেকেও মানুষজন চকবাজার থেকে ইফতারি কিনে নিয়ে যান। পুরো মাসে সম্ভব না হলেও, মাসে অন্তত একদিন চকবাজার থেকে ইফতার কিনে বাসায় ফেরেন। তবে চকবাজারের বাইরেও যেখানেই ইফতারির খাবার কিনতে যান না কেন, সেখানেই পাবেন তেলে ভাজা পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ কিংবা জিলিপি।

 

কিন্তু সারাদিন না খেয়ে থাকার পর এধরণের খাবার স্বাস্থ্যের ওপর কি প্রভাব ফেলে?

 

তেলটা যদি খারাপ হয় তাহলে এসিডিটি থেকে শুরু করে ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে। প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যদি বেশি পোড়ানো হয় তাহলে সেটি আর পরিপাক হয় না। বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য এবং পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম মাওলা।

 

তবে শুধুমাত্র দোকানের ইফতারি নয়, রমজানে বাসায় বানানো ইফতারিতেও থাকে ভাজা-পোড়ার প্রাধান্য।

 

ঢাকার একজন গৃহিনী আফরোজা শিল্পী বলেন, তার বাসায় ইফতারের মূল খাবার হিসেবে থাকে ভাজা ছোলা, পেঁয়াজু এবং বেগুনী। যদিও এর বাইরে শরবত এবং ফলমূলও থাকে কিন্তু তার ৩ শিশুসন্তানের কথা চিন্তা করে পেঁয়াজু-বেগুনির মতো কিছু খাবার বানাতেই হয়।

 

এসব খাবারতো আমরা রোজার সময়ই খাই। মায়ের কথায় সায় দিয়ে বললো কন্যা নিঝুম।

 

ভাজা-পোড়া বাচ্চারা পছন্দ করবেই। তবে বড়রাও যে পছন্দ করে না তা নয়।

 

অধ্যাপক মাওলা বলছিলেন, ইফতারের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, শরীরে যেন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব না হয়। আর সেজন্যে একটি সুষম খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে।

 

আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালরি আসতে হবে সুষমভাবে। আমিষ, চর্বি এবং শর্করা সবগুলো থেকেই আসতে হবে।

 

ইফতারে চিকেন স্যুপ খাওয়া যায়, তবে নন-স্পাইসি। কিছু সব্জি রাখতে হবে, ফল-মূল রাখতে হবে। দধিটা শরীরের জন্য খুবই ভাল কারণ এতে প্রোটিন থাকে এবং পরিপাকেও সাহায্য করে। এমন খাবার খেতে হবে যা সহজে হজম হয়। বলেন অধ্যাপক মাওলা।

 

বাংলাদেশে ইফতারের এই ভাজা-পোড়া খাবারগুলো কোথা থেকে এলো? সঠিকভাবে কেউ না বলতে পারলেও চকবাজারের শতবর্ষ পুরনো খাবার দোকান, আলাউদ্দিন সুইটমিটের মোহাম্মদ আমিরুদ্দিন বলেন, প্রায় ৫ প্রজন্ম আগে তার পূর্বপুরুষেরা এসেছিলেন ভারতের লক্ষ্ণৌ থেকে। তখন থেকেই তারা পুরনো ঢাকায় ইফতারের জন্য এধরণের খাবার বানিয়ে আসছেন।

 

ব্রিটিশ আমল থেকেই আমাদের পূর্বপুরুষেরা এভাবেই খাওয়া-দাওয়া তৈরি করতো। সেই ঐতিহ্যই আমরা ধরে রেখেছি। বলেন আমিরুদ্দিন।

 

তবে ইফতারের প্লেটে যাই থাকুক না কেন, পুষ্টিবিদদের মতে ইফতারিতে একটি উপাদান সেখানে অবশ্যই থাকতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে থাকতে হবে। সেই উপাদান হচ্ছে পানি।

 

অধ্যাপক গোলাম মাওলা বলেন, সারাদিন রোজা রাখার ফলে শরীরে যে পানিশূণ্যতার তৈরি হয়, তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

 

তিনি বলেন, শরবত, ফলের রস, পানির সাথে গুড় মিশিয়ে কিংবা অন্য যে কোন পানিসমৃদ্ধ খাবার খেয়ে শরীরের পানিশূণ্যতা পূরণ করা যায়।

 

এদিকে গত কয়েক বছরে ইফতারের পাশাপাশি সেহরিতেও বাইরে খাওয়ার একটি প্রচলন হয়েছে।

 

ভোররাতেও শখ করে অনেকে ভিড় করেন শহরের রেস্তোরাগুলোয়। যদিও এ সংখ্যা এখনো খুব বেশি নয়।

 

পুষ্টিবিদ অধ্যাপক মাওলা বলেন, সেহরিতে এমন খাবার খেতে হবে যেটি অনেক্ষন পেটে থাকবে।

 

চিড়া-দধিটা ভোররাতের জন্য খুব ভালো খাবার। এর আগে মাছ-মাংস এবং সব্জি খাওয়া যায়। ভোররাতে এর বেশি খাবার দরকার নেই।

 

মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়লেও শুধু স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ইফতারে ভাজা-পোড়া খাওয়া একদম বাদ দিয়ে দেবে এমন মানুষ মনে হয় খুজে পাওয়া দুষ্কর।

 

বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, পুরোপুরি বাদ দেয়ার প্রয়োজন নেই, তবে খাওয়া উচিত পরিমিতি বজায় রেখে। রমজানের মূল নীতিতেও আছে যেই সংযমের কথা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.