সিলেটপোস্টরিপোর্ট:সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অন্য কোনো বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, বিদ্রূপ বা অবমাননা করা যাবে না অনলাইন গণমাধ্যমে। অপরাধ নিবারণ ও নির্ণয়ে অথবা অপরাধীদের দণ্ড বিধানে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করে এমন তথ্য-উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করা যাবে না। এমন তথ্য প্রচার-সম্প্রচার করা যাবে না, যা রাষ্ট্রদ্রোহমূলক ও হিংসাত্মক ঘটনা প্রদর্শন করে। এসব বিধিনিষেধ রেখে জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৫-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ জন্য গঠিত কমিটি খসড়াটি চূড়ান্ত করে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় জনমত যাছাইয়ের পর নীতিমালা পুরোপুরি চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে পাঠাবে। অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি ও তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারের জন্য গত বছরের ৫ আগস্ট তথ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। ওই নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠন করা হবে। এর জন্য বিধিমালা চূড়ান্ত হয়েছে কয়েক দিন আগে। এই জাতীয় সম্প্রচার কমিশনই জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা পেতে পারে বলে জানা গেছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মরতুজা আহমদ বলেন, অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে ধাপে ধাপে এই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। নীতিমালা সংশ্লিষ্টদের নিয়েই তৈরি করা হচ্ছে। খসড়া নীতিমালা তৈরির লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বারকে প্রধান করে একটি উপকমিটি করা হয়েছিল। মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমরা কয়েক মাস আগে খসড়া চূড়ান্ত করেছি। জনমত নেওয়ার পর এটি চূড়ান্ত করা হবে। অনলাইন গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনতেই এটি করা হচ্ছে।’
‘ভুঁইফোর অনলাইন গণমাধ্যম সম্পাদকদের নিয়ে নীতিমালা’ : প্রতিষ্ঠিত অনলাইন গণমাধ্যম সম্পাদকদের বেশির ভাগই এই খসড়া নীতিমালা ও তা প্রণয়নের প্রক্রিয়া নিয়ে নাখোশ। তাঁরা বলছেন, এটি করা হয়েছে ভুঁইফোর কিছু অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে। এই নীতিমালা অনুমোদন হলে সরকার এই খাত যথেচ্ছ নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পাবে। নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য এক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘একটি সভায় আমি গিয়েছিলাম। এরপর আর যাইনি।’ দ্য রিপোর্ট ২৪ডটকমের সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘আন্ডারগ্রাউন্ড অনলাইন পত্রিকার সম্পাদকদের নিয়ে নীতিমালা করা হয়েছে। নীতিমালায় আরো বিভিন্ন বিষয় সংযোজন-বিয়োজন করা উচিত।’
নিবন্ধন লাগবে : চূড়ান্ত খসড়া নীতিমালা অনুসারে, অনলাইন গণমাধ্যম বলতে বাংলা ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে ভিডিও, অডিও, টেক্সট বা মাল্টিমিডিয়ার অন্য কোনো রূপে উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারকারী ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে। সব অনলাইন গণমাধ্যমকে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বিধি অনুসরণ করে নিবন্ধন দেবে। অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য কোনো ধরনের জামানত রাখতে হবে না। সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, আর্থিক সংগতি, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন সাপেক্ষে নিবন্ধন দেওয়া হবে। কাগজ বা সম্প্রচারের জন্য নিবন্ধিত, ডিক্লারেশন বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকে অনলাইন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচারের জন্য নিবন্ধিত হতে হবে। সরকার অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করে বিধান প্রণয়ন করবে। বিধিমালা প্রণয়নের আগ পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়গুলো দেখভাল করবে।