নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেটপোস্ট
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক স্বরাস্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হরকাতুল জিহাদ প্রধান মুফতি আবদুল হান্নানসহ ৩২ আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। টানা নয়বার পেছানোর পর রোববার দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান মামলায় কারাবন্দি ও জামিনে থাকা ২২ আসামীর উপস্থিতিতে এ চার্জ গঠন করেন।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আলোচিত এ মামলার কারাবন্দি আসামী সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র জি কে গউছ, হরকাতুল জিহাদ প্রধান মুফতি আবদুল হান্নান, দেলওয়ার হোসেন রিপন, বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, হাফেজ নাঈম, মুহিবুল্লাহ, শরীফ শাহেদুল আলম, মুফতি মঈন উদ্দিন, আবদুল মাজেদ ভাট, শেখ মাওলানা আবদুল সালাম ও শেখ ফরিদসহ জামিনে থাকা ৮ আসামী।
মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী কিশোর কুমার কর জানিয়েছেন, মামলার আসামী আরিফুল হক চৌধুরী অসুস্থ থাকায় কয়েক দফা পিছিয়ে ছিলো আলোচিত এ মামলার চার্জ গঠন। মামলায় কারাবন্দি ও জামিনে থাকা ২২ আসামী উপস্থিতিতে মামলার চার্জগঠন হয়। এছাড়া পলাতক ১০ আসামীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
জানা গেছে, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এমএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জগঠনের তারিখ এর আগে ৯ বার পিছিয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর ছিল কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জ গঠনের সর্বশেষ তারিখ। তবে আসামী কারাবন্দী আরিফুল হক চৌধুরী অসুস্থ থাকায় এবং তাকে আদালতে হাজির না করায় ঐ দিন চার্জ গঠন হয়নি। এর আগে গত ২১ জুন, ৬, ১৪ ও ২৩ জুলাই এবং ৩, ১০, ১৮, ২৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর আলোচিত এই হত্যা মামলার চার্জ গঠনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সকল আসামী আদালতে হাজির করতে না পারায় চার্জ গঠনের তারিখ পিছিয়ে যায়।
সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামলার আসামীদের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সমর্থকরা আদালত চত্বরে মিছিল করেন। সকাল ১০টা ৫৭ মিনিটে আসামীদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আদালতে মামলার আসামীরা অব্যহতির আবেদন জানান। শুনানী শেষে বেলা পৌনে ৩টায় বিচার অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে আলোচিত এ মামলার চার্জগঠন করেন বিচারক।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। হামলায় নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন। এ হত্যা মামলার ৩২ আসামীর মধ্যে ১৪ জন কারাগারে, ৮ জন জামিনে এবং ১০ জন পলাতক রয়েছেন।