সিলেটপোস্টরিপোর্ট:যৌতুকের জন্য নববধু তাসলিমার চুল কেটে নিয়েছেন তার স্বামী রহিম। এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে। শশুরালয়ে গিয়েছেন ৬ নভেম্বর। ৯ নভেম্বর রাতেই নববধূর ওপরে নেমে এসেছে যৌতুকের অভিশাপ। স্বামী-স্বজন মিলে বিবস্ত্র করে চালিয়েছেন নির্যাতন। কেটে ফেলেছেন চুল। চোখের জলে আর অপমানে বিয়ের সাজ মুছে গেছে ওই নববধুর। এমন নির্মমতার শিকার হয়েছেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পিতৃহীন তাসলিমা জান্নাত কলি। এই ঘটনায় মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নববধুর মামা তেরা মিয়া। অভিযোগে বলা হয়, বিবস্ত্র করে স্পর্শকাতর অঙ্গে লোহার রড দিয়ে নির্মমভাবে পেটানো হয় কলিকে। এতে তার শরীরে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এটুকুতেই ক্ষান্ত হননি তারা, চুল কেটে ফেলেছেন তার। এরপর রাতভর তাকে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে সকালে তাকে উদ্ধার করা হয়। প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে নিয়ে যাওয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।জানা গেছে, জন্মের আগেই কলির বাবা মাহমদ আলী মারা যান। তারপর থেকে ভোলাগঞ্জে মামা তেরা মিয়ার কাছে বড় হচ্ছিলেন তিনি। চলতি বছরের ৫ এপ্রিল উপজেলার নারাইনপুর গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহিমের সাথে আকদ হয় কলির। গত ৬ নভেম্বর তাকে শশুড়ালয়ে উঠিয়ে নেওয়া হয়। ৯ নভেম্বর স্বামীকে নিয়ে কলি মামার বাড়িতে বেড়াতে (ফেরা যাত্রা) আসেন। তখনই তার স্বামী মোটর সাইকেল ও সিএনজি অটোরিকশা কেনার জন্যে দশ লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে বসেন। এই টাকা দিতে সময় চান কলির মামা। ওই দিন সন্ধ্যায়ই তারা ফের শশুড়ালয়ে ফিরে যান। রাতেই তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচ লাখা টাকা আদায়ের জন্যে স্বামী ও তার স্বজনারা কলির ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে মারধোরের এক পর্যায়ে তার চুল কেটে দেন স্বামী ও স্বজনরা। কলিকে নির্যাতনের নিকটাত্মীয় আতাউর রহমান (৪০) ও ছৈইফ উল্লাহর (৫৮) প্ররোচনা রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো: রুহুল আমিন বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তের জন্য উপ-পরিদর্শক (এসআই) শংকর নন্দি মজুমদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বিবাদীর বাড়িতে গিয়েছিলেন, তবে ঘটনাকারী কাউকে সেখানে পাননি। বর্তমানে তিনি রোগীকে দেখতে সিলেট ওসমানীতে অবস্থান করছেন।