![]() সিইসি বলেন, পৌর নির্বাচনে প্রথমবারের মত মেয়র পদে দল মনোনীত প্রার্থী অংশ নেয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, মেয়র পদে দল মনোনীত প্রার্থীর পাশাপশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও অংশ নেয়ার সুযোগ আছে। সাধারণ আসনের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে নির্দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন। ২৩৪টি পৌরসভায় মোট পদ ৩ হাজার ৯২৪টি। ২৩৪ জন মেয়র ছাড়াও ৭৩৮ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও ২ হাজার ৯৫২ জন সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৮২টি। নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন ৬১ হাজার ১৪৩ জন। এসব পৌরসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা ৭১ লাখ ৬২ হাজার। এরমধ্যে ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার পুরুষ ও ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার নারী ভোটার। এ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ৪১ জন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ৬০ জন ও ১৩৩ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক নির্বাচনের আপিল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন। স্থানীয় সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্তর পৌরসভায় নতুন পদ্ধতির এই নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের রাজনীতিতে উত্সবের আমেজ বইতে শুরু করেছে। প্রথমবারের মত মেয়র পদে সরাসরি রাজনৈতিক দল মনোনীত প্রার্থী দেয়ার সুযোগ থাকায় জাতীয় রাজনীতিতেও এই নির্বাচনে ভিন্ন মাত্রা যোগ হতে যাচ্ছে। একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া যাবে না সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একই পৌরসভায় একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হলে ওই দলের সকল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে। মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমমর্যাদার ব্যক্তি বা তাদের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে নির্বাচনী এলাকার ১০০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। তবে এর আগে যারা কোনো এক সময় মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। তারা সরাসরি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন। প্রচারে নামতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপি
সিইসি বলেন, নতুন পদ্ধতির এই নির্বাচনে আচরণবিধিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী, সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সংসদ সদস্য এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনী প্রচার বা কার্যক্রমে নামতে পারবেন না। এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সব দলের জন্যই পৌরসভা নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরি করবো। আশা করি সব দলই অংশ নেবে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবো। ব্যালট চুরি, ছিনতাই, এগুলোর কোনো রকম তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেবো।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই কেন দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সময় খুব কম। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে না পারলে, জুনে নির্বাচন করতে হতো। কেননা, এর মধ্যে এসএসসি (মাধ্যমিক) ও এইচএসসি (উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষা আছে। আবার জুনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হবে। আমাদের হাতে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করার সময় ছিল না। এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ, মো. শাহ নেওয়াজ, ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। এসব পৌরসভার তফসিল ঘোষণার জন্য অনেক আগ থেকেই পরিকল্পনা নিয়েছিল ইসি। কিন্তু ১২ অক্টোবর দলভিত্তিক পৌরসভা নির্বাচন করতে আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। এরপর ৩ নভেম্বর এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি হয়। দলীয়ভাবে সকল পদে পৌর নির্বাচনের অধ্যাদেশ হাতে পেয়ে এক দফা বিধিমালায় সংশোধন আনে ইসি। ৫ নভেম্বর তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় ভেটিংয়ের জন্য। কিন্তু ১৫ নভেম্বর অধ্যাদেশ বাতিল করে নতুন বিল সংসদে উত্থাপন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। সেখানে দলীয়ভাবে শুধু মেয়র পদে নির্বাচনের বিধান রাখা হয়। এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয় ২১ নভেম্বর। এরপর পুনরায় বিধিমালা সংশোধন করে ইসি। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে ২৩ নভেম্বর বিধিমালা ইসির হাতে পৌঁছায়। সর্বশেষ ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ২৬৯টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করেছিল কমিশন। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে চার ধাপে পৌরসভাগুলোতে ভোট নেয়া হয়। পৌরসভার বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের মেয়াদ রয়েছে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বিধান অনুযায়ী, মেয়াদ শেষের আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল মেয়র পদে প্রার্থী দিতে পারবে। ইত্তেফাক সিলেটপোস্ট২৪ডটকম/ফয়ছল আহমদ/২৫.১১.২০১৫ |