সিলেটপোস্ট ডেস্ক : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫। এই সময়সীমার পারফরম্যান্সই বিবেচনা করা হয়েছে আইসিসির একাদশ নির্বাচনে। আইসিসি ওয়ানডে একাদশে মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে আছেন ট্রেন্ট বোল্ট। কিউই পেসার ১৯ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৪০ উইকেট। বোল্ট ম্যাচগুলো খেলেছেন ২১ অক্টোবর থেকে ১২ জুনের মধ্যে।
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ২২ ওয়ানডেতে ৪৭ উইকেট নিয়ে মিচেল স্টার্কও জায়গা করে নিয়েছেন একাদশে। অস্ট্রেলীয় পেসারের ৪৭ উইকেটের ৪০টিই ১৮ জুনের আগে।
‘১৮ জুন’ কেন? ওয়ানডেতে মুস্তাফিজের অভিষেক যে এই তারিখটিতেই। প্রতিযোগীরা যখন অনেকখানি দৌড়ে ফেলেছেন, তখন ‘ট্র্যাকে’ নেমেছেন বাঁহাতি পেসার। অভিষেক ম্যাচ থেকেই আলো ছড়িয়েছেন ধারাবাহিকভাবে। উইকেট, গড়, ইকোনমি, স্ট্রাইক রেট—সব মানদণ্ডে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তিনিই এগিয়ে। উৎসুক মনে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, মুস্তাফিজের সাফল্যের রহস্য কী? স্লোয়ার-কাটার তো আছেই। বাউন্সার, ইয়র্কার, গতি—তিনটিই বেড়েছে আগের তুলনায়। তবে তাঁর সাফল্য মূলত ‘পুরোনো বলে’ই।
৯ ওয়ানডেতে বোলিং করেছেন মোট ৭৫.২ ওভার। পেয়েছেন ২৬ উইকেট। নতুন বলে উইকেট ৭টি। বাকি ১৯টি বল একটু পুরোনো হয়ে এলে। নতুন বলে প্রতিটি উইকেট পেতে খরচ হয়েছে ২৫ রান। পুরোনো বলে তা মাত্র ৭.৩৭। নতুন বলে প্রতিটি উইকেট পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৪.২৮ বল। পুরোনো বলে ১১.১৫।
নতুন বলে সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছেন ভারতের বিপক্ষে—৩ ম্যাচে ১৪ ওভারে ৮৪ রানে পেয়েছিলেন মাত্র ২ উইকেট। নতুন বলে মুস্তাফিজের ওপর ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা একটু চড়াও হতে পারলেও খাবি খেয়েছেন মূলত পুরোনো বলেই। নতুন বলে মুস্তাফিজের যা একটু সাফল্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ৩ ম্যাচে ১৩ ওভারে ৩৪ রানে পেয়েছিলেন ২ উইকেট। সিরিজে মোট উইকেট ৫টি। বোঝাই যাচ্ছে, ভারতের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য সাফল্য পাওয়ায় মুস্তাফিজকে নিয়ে ভালোই ‘হোমওয়ার্ক’ করে এসেছিল প্রোটিয়ারা। আর সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ ম্যাচে নতুন বলে ১৩ ওভারে ৬৩ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট।
বল কিছুটা পুরোনো হলে তূণের সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্র কাটার দিতে পারেন ভালো। তাঁকে যথার্থভাবে ব্যবহার করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। পুরোনো বলে মুস্তাফিজের সাফল্য নিয়ে অধিনায়কের বিশ্লেষণ, ‘ও যে কাটার মারে, সেটা পুরানো বলে গ্রিপ করেই। নতুন বলে কাটার গ্রিপ করে না। নতুন বলে কাটার স্কিড করে ব্যাটে চলে আসে। এ কারণে ওকে নতুন বলে কম ব্যবহার করি। দুই-চার ওভার করিয়ে রেখে দিই। ও আমাদের মূল উইকেটশিকারি বোলার। যখন উইকেট দরকার হয়, তখন আনি। সর্বশেষ তিন সিরিজে কৌশল সফল। যখন প্রয়োজন তখনই উইকেট এনে দিয়েছে। বল একটু পুরোনো হয়ে এলে ওর বল গ্রিপ করে। তখন ড্রাইভ খেলতে গিয়ে তুলে দেয় ব্যাটসম্যানরা। ওই সময় শট খেলার তো প্রশ্নই আসে না। এক অবিশ্বাস্য স্কিল! পুরোটাই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। স্কিলটা ধরে রাখতে পারলে ইনশা আল্লাহ আরও ওপরে যাবে মুস্তাফিজ।’প্রথম আলো।
মুস্তাফিজুর রহমানের ওয়ানডে বোলিং
ওভার রান উইকেট গড় ইকোনমি স্ট্রাইক রেট
৭৫.২ ৩২১ ২৬ ১২.৩৪ ৪.২৬ ১৭.৩
নতুন বলে
ওভার রান উইকেট গড় ইকোনমি স্ট্রাইক রেট
৪০ ১৮১ ৭ ২৫.৮৬ ৪.৫২ ৩৪.২৮
পুরোনো বলে
ওভার রান উইকেট গড় ইকোনমি স্ট্রাইক রেট
৩৫.২ ১৪০ ১৯ ৭.৩৭ ৩.৯৭ ১১.১৫