সিলেটপোস্ট২৪রিপোর্ট :মাত্র এক মাসের মধ্যে বড়পুকুরিয়ায় কয়লার মূল্য দুদফা কমানোর পরেও ক্রেতা মিলছে না। এতে খনি চত্বরের কয়লার বিপুল মজুদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খনি কর্তৃপক্ষ।গত ইটভাটা মৌসুমে আন্তর্জার্তিক ও স্থানীয় বাজারে কয়লার চাহিদা বেশি থাকায় বড়পুকুরিয়ার প্রতি টন কয়লা বিক্রি হয়েছে ১৩ হাজার ৬৮০ টাকায়। আর আমদানী করা নিম্নমানের (অধিক সালফারযুক্ত) কয়লা বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায়।
এবছর ইটভাটা মৌসুমের শুরু থেকে বিদেশ হতে আমদানী করা কয়লার মূল্য কম থাকায় (প্রতি টন ৭ হাজার ৮শ টাকা) এর সাথে তাল মিলিয়ে বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষ গত ২৯ নভেম্বর প্রতিটন কয়লার দাম ২ হাজার ৬৮০ টাকা কমিয়ে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ তা ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে। এতেও গ্রাহকদের কাছ থেকে ভাল সাড়া না মেলায় গত ২৫ ডিসেম্বর কয়লার দাম আরেক দফা কমিয়ে ৯ হাজার টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। এনিয়ে দুদফায় বড়পুকুরিয়ার কয়লার দাম টনপ্রতি সাড়ে ৪ হাজার টাকা কমানো হল।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইটভাটা মালিক জানান, প্রায় দুমাস আগে ভাটায় ইটপোড়ানো শুরু হয়েছে। প্রতি মৌসুমের শুরুতেই ভাটা মালিকরা তাদের চাহিদা মত কয়লা কিনে মজুদ করে রাখেন। এখন ইট পোড়ানোর মৌসুম প্রায় শেষের দিকে, মৌসুমের শুরুতে কয়লার দাম কমানো হলে প্রচুর কয়লা বিক্রি হতো। আমদানী করা নি¤œ মানের কয়লা বাজারজাত করার সুযোগ করে দিতে এতোদিন কয়লার দাম কমানো হয়নি বলে অভিযোগ করছেন তারা।
খনি সূত্র জানায়, বড়পুকুরিয়া কোল
ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে সেখানে মজুদ রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন কয়লা। কয়লা খনির শ্রমিকরা জানান, কোল ইয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বোশ কয়লা মজুদ থাকায় কয়লার স্তুপে তাপ মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিনিয়ত অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে।
এদিকে, বড়পুকুরিয়া তাপবিদুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার মেট্রিক টন কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে।
এব্যাপারে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আমিনুজ্জামান জানান, বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়লা অপেক্ষা বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা অনেক উন্নত ও সালফারের পরিমাণ কম সেকারনে এখানকার কয়লা উচ্চ মূল্যে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লাসহ সবধরনের জালানির মূল্য কমে যাওয়ায় আমরাও কম দামে কয়লা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বর্তমানে বড়পুরিয়া কয়লা খনির চত্তরে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে। গত ২২ নভেম্বর খনির ১২০৮ নম্বর কোল ফেইসে কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় খনির কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। নতুন ১২০৫ নম্বর ফেইস উন্নয়ন শেষে আগামী বছর জানুয়ারি মাসের ২য় সপ্তাহ হতে পুনরায় কয়লা উত্তোলন শুরু হবে বলে তিনি জানান।