সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কৃষক পরিবারের উপর হামলার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করায় বাদির বসত বাড়ির গোয়াল ঘরে আগুন দিলো আসামি গংরা এমনটির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলা সূত্রে জানা যায় গত ২৫শে জুন শনিবার হামলার ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে আসামপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত ওয়াব আলীর পূত্র আহত কৃষক আব্দুল আলম বাদী হয়ে একই গ্রামের হামলাকারী ১২জনের নাম উল্লেখ্য করে আমলগ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত,শান্তিগঞ্জ জোনে, সুনামগঞ্জ কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৫৮/২০২৩ইং। ধারা-১৪৩/১৪৪/৪৪৮/৪৫০/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১১৪/৫০৭(২)/৩৪ দঃবিঃ।
আসামীরা হলেন একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত আরশ আলীর ছেলে চন্দন মিয়া(৬০), আরজ আলীর পুত্র মাসুক মিয়া(৪৫), মৃত নুর আহমদের পুত্র আজমল(৩০), মনকুশের পুত্র শাবাজ আলী(৪৫), মৃত মিয়াদান মিয়ার পুত্র জুনেদ আলী(৩৬), লুয়াই মিয়ার পুত্র ইদন আলী(৩২), বছি মিয়ার পুত্র ওয়ারিশ আলী(৫৫), মৃত আদম আলীর পুত্র ছরত আলী(২০), মৃত আব্দুর রহিমের পুত্র আব্দুল মান্নান(৬০), মাসুক আলীর পুত্র শারুফ আলী(২০), মৃত মনাফ আলীর পুত্র নবীর হোসেন(২৫) এবং মৃত নুর আহমদ আলীর মেয়ে আঙ্গুরী বেগম(৫০)।
মামলা অভিযোগ সূত্রে জানা যায় জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে আসামী পক্ষের লোকজন আদালতে বাদী পক্ষের উপর জায়গা জমির বিরোধ নিয়া ঘটনার অনেক পূর্বে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ঐ মামলায় আব্দুল আলমদের পক্ষে রায় প্রদান করেন । ঐ রায় চন্দন মিয়াগংদের বিরোদ্ধে যাওয়ায় আব্দুল আলম ও চন্দন মিয়া গংদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
জানা যায় ঐ মামলার রায়ের পর থেকে চন্দন মিয়া গংরা বিভিন্ন সময়ে আব্দুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের গালি গালাজ ও প্রাণে হত্যার হুুককি ধামকি দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন সকালে আব্দুল আলমের বাড়ির পূর্ব পাশে অবস্থিত এবং টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে হলে চন্দন মিয়া ও আব্দুল আলম গংদের বাড়ির মাঝখানে রাস্তা এবং এই জায়গার মালিক মালিক আব্দুল আলমগংরা। আদালতের রায় অমান্য করে চন্দন মিয়া গংরা ঘটনার দিন জনসাধারনের চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জোরপূর্বক ভাবে টিউবওয়েল থেকে মানুষদের পানি আনা বন্ধ করে দেয়। এসময় আব্দুল আলম এর কারণ জানতে গেলেই দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে চন্দন মিয়া গংরা দেশীয় অস্ত্র রামদা, সুলফি, লাঠিসোঁটা নিয়ে দলবদ্ধ ভাবে আব্দুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায় এসময় হামলায় আব্দুল আলম,তার সহধর্মিণী সামিরুন এবং আইনুলের মুখে এবং দাঁেত রক্তাক্ত জখমহস শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। পরে আব্দুল আলম বাদী হয়ে ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে হামলাকারী ১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। এতে চন্দন মিয়া গংরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। বর্তমানে মামলটি আদালতে চলমান রয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে প্রভাবশালী ভূমিখেকো চনন্দন মিয়া গংরা বাদিদের বিভিন্ন ভাবে প্রাননাশের হুমকি ভয়ে তারা বর্তমানে বাড়িছাড়া রয়েছেন। পরবর্তীতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আরেকটি সাতধারার মামলা করেন আব্দুল আলমগংরা।
কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই চন্দন মিয়াগংরা রাতের আঁধারে আব্দুল আলম গংদের বাড়ির কয়লার ঘরে গত ১০ জুলাই আগুন লাগিয়ে দিয়ে পুরো কয়লা পুড়ে ছাই করে দেন। আদালতে তিনি ন্যায় বিচার পবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি আব্দুল আলম জানান,গ্রামের চন্দন মিয়া গংরা প্রভাবশালী এবং ভূমিখেকো হওয়ায় তাদেও অত্যাচার আর নির্যাতনে গ্রামের নিরীহ মানুষজন খুবই অসহায়। তাদের অন্যায় কাজে কেহ প্রতিবাদ করলে হুমকি দামকী ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখানো হয়। তিনি দোষীদেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এ ব্যাপারে মামলার প্রদান আসামী চন্দন মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে হামলা ও ঘরে আগুন দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ফোনের লাইন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরী মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি তদন্তাধীন আছে প্রমানিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।