এই সিলেটের নাগরিকবৃন্দের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক, জাসদ জেলা সভাপতি লোকমান আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি সিলেট জেলার সহ সভাপতি আব্দুর জব্বার জলিল, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির ইকু, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ব্লাস্টের সাবেক সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোঃ ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান রিপন, সিনিয়র আইনজীবী কল্যাণ চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সিলেট জেলা গণদাবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, গণতন্ত্রী পার্টির জেলাা সভাপতি মো: আরিফ মিয়া, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ব্রজ গোপাল চৌধুরী, বাসদ মার্কসবাদী আহবায়ক উজ্জ্বল রায়, ওর্য়ার্কাস পার্টির সভাপতি সিকান্দর আলী, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, গণতন্ত্রী পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক জুনেদুর রহমান চৌধুরী, কাজীটুলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদব বাবুল আহমদ প্রমুখ।
নিম্নে সিলেটের নাগরিকবৃন্দের পুরো লিখিত বক্তব্য দেওয়া হলো:
সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আরোপিত অতি উচ্চহারের হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিল ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের নাগরিক বৃন্দের বক্তব্যঃ
সংগ্রামী শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। সিলেট সিটি কর্পোরেশন ৩০ এপ্রিল ২০২৪ মঙ্গলবার একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কর্পোরেশনভুক্ত ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে পুরাতন ২৭টি ওয়ার্ডের ৭৫ হাজার ৪৩০টি হোল্ডিং এর উপর নতুনভাবে ধার্যকরা ট্যাক্স এর পরিমাণ প্রকাশ করেন। যেখানে কোন কোন হোল্ডিং এর উপর বিদ্যমান গৃহকরের ০৫ শত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। করদাতাদের মতামত গ্রহণ না করে একসাথে শত শত গুণ ট্যাক্স বৃদ্ধির ঘটনা নজিরবিহীন। এ প্রসঙ্গে ০৬ মে সোমবার সন্ধ্যারাতে সিলেটের নজরুল একাডেমিতে একটি সভায় একতরফা অসনীয়মাত্রার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে অগণতান্ত্রিক, অন্যায্য এবং অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে ০৯ মে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদী সমাবেশ ও মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। সেখানে শত শত নাগরিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে কর্পোরেশনের আরোপিত অবিবেচনা প্রসূত হোল্ডিং ট্যাক্স এর সিদ্ধান্তকে জনস্বার্থের পরিপন্থি বলে অভিহিত করেন। মানববন্ধনে ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৩ মে সোমবার কোর্ট পয়েন্টে সমবেত হয়ে মিছিল যোগে মেয়র বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। কসবে সিলেট আন্দোলনের সূতিকাগার হযরত শাহজালাল (র.) মাজার শরীফের মতওয়াল্লী সরেকওম ফতেউল্লা আল আমান স্বারকলিপিতে স্বাক্ষর করে মিছিলে অংশ নিয়ে সিটি কর্পোরেশন ভবনে যান এবং পরবর্তী কর্মসূচি গুলোতে উপস্থিত থাকেন। সমাজের প্রতিনিধিত্¦শীল প্রতিষ্ঠান জেলা আইনজীবী সমিত, জেলা কর আইনজীবী সমিতি, প্রেসক্লাব, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বিএমএ, জেলা ক্রিড়া সংস্থা, বাংলদেশ দোকান মালিক মমিতি, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, গণদাবি পরিষদ, গণজাগরণ মঞ্চ, জেলা প্রেস ক্লাব, অনলাইন প্রেসক্লাব, বিভাগ উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ প্রভৃতির বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দের অনেক সহ বীরমুক্তিযোদ্ধা, পরিবেশ সংগঠক, রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আমাদের কার্যক্রমে বিভিন্ন পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতয়া ২২ মে বুধবার সারদা হলে স্বার্থকভাবে অনুষ্ঠিত হয় মতবিনিময় সভা। সেদিন বিকেলে সুরমা নদীর দক্ষিণ তীর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ভুক্তভোগী নগরবাসী ব্যানার সজ্জিত, স্লোগান মুখর মিছিল নিয়ে সমবেত হয়েছিলেন ঐতিহ্যবাহী সারদা হলে। মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিতে ট্যাক্স বৃদ্ধির অগ্রহণযোগ্য উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং সিটি কর্পোরেশনের এতদ বিষয়ক জনবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ২৮ মে মঙ্গলবার বিকেলে কোর্ট পয়েন্টে নাগরিক সমাবেশের আহ্বান জানানো হয়।
অসহনীয় করারোপের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের এই পর্যায়ে ২৪ শে মে শুক্রবার সিটি কর্পোরেশনের জরুরি বিশেষ সভায় হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির উল্লেখিত সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা মনে করি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নগরবাসীর আন্দোলনের বিজয় সূচিত হয়েছে। যার কৃতিত্ব আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নগরবাসী-জনগণের। আমরা তাদের সকলকে জানাই সংগ্রামী অভিনন্দন। হযরত শাহজালাল (র.) মাজার শরীফের মতওয়াল্লীসহ যেসকল পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রিড়া এবং রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মিডিয়ার কর্মকর্তা, বিভিন্ন ওয়ার্ডের মুরুব্বিয়াগণ এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন অথবা সমর্থন করেছেন তাদের প্রতি নিবেদন করছি গভীর কৃতজ্ঞতা। বিলম্বে হলেও নগরবাসীর প্রাণের দাবিকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হওয়ায় সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ ও সশ্লিষ্ট সকলকে আন্দোলনকারী জনসাধারণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ। একই সাথে আগামীর অ্যাসেসমেন্ট , রি-অ্যাসেসমেন্ট ইত্যাদি করধার্যের যে প্রক্রিয়া নেওয়া হবে সেগুলো যাতে স্বচ্ছ-দুর্নীতিমুক্ত হয়, স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ করা হয় এবং কর বৃদ্ধির হার যাতে সহনীয়-যৌক্তিক হয়, সেই ব্যাপারে সজাগ-সচেতন থাকার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ২৮ মে অনুষ্ঠেয় সমাবেশ নাগরিকবৃন্দের পক্ষ থেকে স্থগিত ঘোষণা করছি। সংগ্রামী অভিনন্দন।