সিলেটপোস্ট রিপোর্ট : পিলখানা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু রাজশাহী কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, বুকে ব্যথা অনুভব করায় পিন্টুকে দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় কারা কর্তৃপক্ষ। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ১২টা ২০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. রইস উদ্দিন জানান, বেলা ১২টার দিকে পিন্টুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। “তবে তিনি মারা গেছেন তার আগেই। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে তার মৃত্যু হয়েছে।”
বিএনপি নেতা পিন্টুকে গত ২০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজশাহী কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছিল বলে কারা অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পিন্টু গত শতকের শেষভাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে লালবাগ থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে পিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের সেই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত ৭৪ জন নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র এবং আসামিদের পালাতে সহযোগিতার অভিযোগ ছিল পিন্টুর বিরুদ্ধে।
পিলখানা হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে নাম আসার পর ওই বছর জুন মাসে হাই কোর্টের বাইরে থেকে এই সাবেক সাংসদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তার আর বের হওয়া হয়নি।
সদ্য সমাপ্ত সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ থেকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন কারাবন্দি পিন্টু। কিন্তু যাচাই বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন।
জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৮ সালে কারাগারে একজন ডেপুটি জেলারকে পিটিয়ে আহত করেন এই বিএনপি নেতা।
ত্রাণের টিন আত্মসাতের একটি মামলার শুনানি চলাকালে গতবছর ঢাকার আদালতে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘মালাউন’ গালি দিয়ে মারতে উদ্যত হয়েছিলেন তিনি।
পিন্টু বিয়ে করেছেন ঢাকার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ছাত্রদল নেতা ছাইদুর রহমান নিউটনের বোন নাসিমা আক্তার কল্পনাকে।
তাদের বড় ছেলে কানাডার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। আর ছোট ছেলে মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকেন।