সিলেটপোস্ট রিপোর্ট ॥ নবী যুগের গল্প। মদিনার মসজিদে এক পথিক। গায়ে ধবধবে সাদা পোশাক। গভীর কালো চুল। মহানবীর সাক্ষাতে এসেছেন। সঙ্গে একগুচ্ছ প্রশ্ন। হজরত ওমর রা. বলেন, আমরাও নবীজিকে ঘিরে বসে আছি। অপরিচিত পথিক এসে নবীজির সামনে বসলেন। চোখে মুখে খুশির আমেজ। চেনা মুখ তবুও অচেনা। গায়ে মরুভূমির ধূলাবালির ছিটেফোটাও নেই। হাটুঘেরে নবীজির সামনে বসলেন। ঠিক যেন নামাজের বসা।
পথিক বললেন, হে মুহাম্মদ! ইসলাম কী? আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন! মুখ খুললেন নবীজি! বললেন, ইসলাম হচ্ছে তুমি সাক্ষ্য দিবে আল্লাহ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মদ সা.আল্লাহর রাসুল, নামাজ কায়েম করবে, জাকাত দিবে, রমজানের রোজা পালন করবে এবং হজের যাওয়ার সামর্থ্য থাকলে হজ করবে! পথিক বললেন, প্রশ্নের জবাবে চমৎকার বলেছেন আপনি! হজরত ওমরসহ সাহাবারা ঘটনা দেখছে বিস্মিত হচ্ছে। মহানবীকে প্রশ্ন, আবার সেই জবাবের শৈল্পিক সত্যায়ন! অবাক হচ্ছেন সাহাবারা। আবারও পথিকের প্রশ্ন! ঈমান কাকে বলে! আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন?
নবীজি বললেন, ঈমান হল আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। সকল ফেরেশতা, সব আসমানি গ্রন্থ, সকল নবী-রাসুল, পরকালের এবং তাকদিরের ভালমন্দের প্রতি তোমার পূর্ণ আস্থা-বিশ্বাস লালন করা। অবাক সাহাবারা! পথিক আবারও বললেন, প্রশ্নের জবাবে চমৎকার বলেছেন আপনি!
পথিকের নতুন প্রশ্ন! ইহসান বা ইবাদতেরপূর্ণতা লাভ হবে কিভাবে? আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন! নবীজি বললেন, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করো, যেন তুমি আল্লাহ তায়ালাকে দেখছো। যদি তুমি আল্লাহকে নাও দেখো, মনের কোণে বদ্ধমূল রাখো নিশ্চিয় আল্লাহ তায়ালা তোমাকে দেখছেন। চমৎকার উত্তর, বললেন পথিক!
পথিকের শেষ প্রশ্ন! কেয়ামত কবে হবে? আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন! নবীজি থেমে গেলেন। বললেন, এ বিষয়ে আপনিই আমার চেয়ে বেশি অবগত! বেচারা পথিক বললেন, ঠিক আছে,কেয়ামত বাদ রাখুন, তাহলে কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে বলুন? নবীজি বললেন, বাদির সন্তানেরা ক্ষমতাধর হবে, অসহায়-গরীবেরা সুউচ্চ প্রাসাধ নিমার্ণে প্রতিযোগিতা করবে! বাহ! আপনি খুবই অসাধারণ বলেছেন-বললেন পথিক। সাক্ষাৎকার পর্ব এখানেই শেষ!
হজরত ওমর মন্ত্রমুগ্ধের মতো সব শোনলেন। নবীজি বললেন, হে ওমর! জানো এই পথিক কে? ওমর বললেন, আল্লাহ তায়ালা এবং তার রাসুলই সা. ভালো জানেন! নবীজি মৃদু হেসে বললেন, সে অচেনা পথিক নয়। তিনি ওহির বাহক হজরত জিবরাঈল আ.! এসেছিলেন তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার জন্য! [সূত্র : বুখারি শরিফ]