সিলেট পোষ্ট রিপোর্ট : বিক্রির পর দীর্ঘ ১২ বছরেও চালু হয়নি সুনামগঞ্জের ছাতকে সিলেট পাম্প এন্ড পেপার মিল। সরকারের শর্ত থাকলেও চালু নিয়ে টালবাহানা করছে নিটল-নিলয় গ্রুপ। স্থানীয় সংসদ সদস্যের অভিযোগ, হাজার কোটি টাকার মিলটি পানির দামে বিক্রি করে দেয় জোট সরকার। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, মিলের কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে অর্থ-প্রতিমন্ত্রী জানালেন, আইনি জটিলতার কারণে ব্যবস্থা নিতে পারছে না সরকার।
২০০৪ সালে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের এই পেপার মিলটি মাত্র ৪২ কোটি টাকায় নিটল নিলয় গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেয় জোট সরকার। এতে চাকরি হারায় দেড় হাজার শ্রমিক। তবে, বর্তমান পেপার মিলের জায়গায় অত্যাধুনিক একটি পূর্ণাঙ্গ পেপার মিল চালু করার শর্ত দেয় সরকার। কিন্তু কেনার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও মিলটি চালু করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এতে চাকরি হারানো শ্রমিকরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
মিলটি চালু না হলেও এর মূল্যবান যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। আর স্থানীয় সংসদ সদস্য অভিযোগের সাথে একমত পোষণ করে বলেন, তৎকালীন হাওয়া ভবনের চক্রান্তের শিকার এই প্রতিষ্ঠানটি।
সুনামগঞ্জ-৫ এর সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, ‘নানান অনিয়ম এবং দুর্নীতির কারণে এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।’
মিলটি বন্ধের পর সেবামূলক হাসপাতালটিও বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে আন্দোলনের মুখে স্কুলটি এখনো চালু রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
শর্ত না মানায় কেন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ-প্রতিমন্ত্রী জানালেন সরকারের অসহায়ত্বের কথা। আর নিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান শোনালেন আশ্বাসের বাণী।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘অনেক বায়ার আছেন যেসব শর্তে নিয়ে গিয়েছিলেন শর্ত প্রতিপালন করেননি। অনেক সময় সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেয়া ডিফিকাল্ট হয়। কারণ আমরা আইনের কাছে বাধা।’
নিটল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল মতলুব আহমেদ বলেন, ‘গ্যাস-ভিত্তিক এবং নদী ভিত্তিক আছে। সেরকম ভারি শিল্প নিয়ে আমরা কাজ করছি বলেই একটু দেরি হচ্ছে। আমরা আশা রাখি অচিরেই এখানে অনেকগুলো মিল হবে।’
১শ’ ৪০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কাগজের পাল্প তৈরির এই কারখানাটি উৎপাদনে আসে ১৯৭৭ সালে।