সিলেটপোস্টরিপোর্ট: বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর স্বজনের ওপর হামলাকারীরা এখনো গ্রেফতার হয়নি। উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া সাড়ে ৪লাখ টাকা ও মোবাইল ফোনসেট। প্রকাশ্যে হামলা ও টাকা লুটের ঘটনায় বিশ্বনাথ থানায় মামলাও হয়। কিন্তু ঘটনার ১২দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিদের কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। উপরন্তু আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন মামলার বাদি বিশ্বনাথ উপজেলার ইলামেরগাঁওয়ের প্রবাসী আপ্তাব আলীর নাতি মিজানুর রহমান। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৩ জুন বেলা আড়াইটায় বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের নতুনবাজার লাইটেস স্ট্যান্ড এলাকায় মিজানুর রহমানের ওপর করে প্রতিপক্ষের আমির আলী, জমির আলীসহ অজ্ঞাত লোকজন। হামলাকারীরা এসময় ব্যাংক থেকে উত্তোলিত সাড়ে ৪লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় অভিযোগ আক্রান্ত মিজানুর রহমানের। মিজানের অভিযোগ-তহসীলদার অনিল কুমার সিংহ নালিশা ভূমির তদন্তকালে তাকে একা যেতে বলেন।অন্যদিকে প্রতিপক্ষের ২০/২৫ জন লোককে সেখানে উপস্থিত রাখা হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস শহিদকে নিয়ে তহসীলদারের কথামতো মিজান নালিশা ভূমির ওপর যান। সেখান থেকে ফেরার পথে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলে যান ইউপি সদস্য। আর মিজান একা তহসীল অফিসে রওয়ানা হলে তার ওপর হামলা চালানো হয় এবং সঙ্গে থাকা টাকা, সামসাং গ্যালাক্সি মোবাইল, তিনটি ক্রেডিট কার্ড লুটে নেয় হামলাকারীরা। হামলার নেপথ্যে তহসিলদার অনিল কুমার সিংহ ও তার সহকারী সীতল চন্দ্র দত্ত’র হাত রয়েছে এমন অভিযোগ করে মিজান সম্প্রতি এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনও করেন। সহকারি তহসীলদার শীতল চন্দ্র দত্ত বলেন, এসিল্যান্ড কর্তৃক দায়িত্ব দেওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তবে অপরপক্ষ জায়গাটির মালিকানা দাবি করলেও বাস্তবে দখল তাদের দেখাতে পারেনি। যে কারণে প্রতিবেদনও সেভাবে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বনাথের তহসীলদার অনিল কুমার সিংহ বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে জায়গাটি আপ্তাব আলীর দখলে থাকায় প্রতিপক্ষের নামজারি দরখাস্ত বাতিল করি। এছাড়া হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি উভয় পক্ষকে খবর দিয়েছি। কিন্তু কে-বা কারা হামলা চালিয়েছে? এখানে আমাকে জড়িয়ে মন্তব্য করা অমূলক।আসামি গ্রেফতার না হওয়ার ব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার এসআই সুমন চন্দ্র সরকার ফোনে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে থানায় গিয়ে দেখা করতে বলেন। হামলার ঘটনা এবং পরবর্তীতে আসামিদের গ্রেফতার না হওয়ার ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, মিজান প্রতিপক্ষের লোকজনের ছবি তোলায় তার মেমোরি কার্ড নিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়। তবে খবর নিয়ে জানতে পেরেছি ঠেলাধাক্কা ছাড়া হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু কতিপয় মিডিয়ায় আমাকে জড়িয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বনাথের ইলামের গাওয়ের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আপ্তাব আলী প্রায় ৩৫ বছর আগে বিশ্বনাথ উপজেলার ৮৪নং মশুলা মৌজায় ৬০৭৯ দাগে ৪২ শতক জমি খরিদ করেন। খরিদ করার পর নিজ নামে নামজারীসহ তামাদি মুদ্দতে ভোগদখল ও ভোগ ব্যবহার করে আসছেন। সম্প্রতি একদল ভুমিখেকোচক্র স্থানীয় ভূমি অফিসের তহসিলদার অনিল বাবু ও তার সহকারী সীতল বাবুর সাথে যোগাযোগী মূলে স্বত্বদখলীয় ভূমির নামজারীর বিরুদ্ধে আপত্তি মোকদ্দমা দায়ের করে।এরপর গত ২৩ জুন সহকারী কমিশনার (ভুমি) বিশ্বনাথ, সিলেট এর আদেশে তহসীলদার অত্র ভূমির সরেজমিন তদন্ত করতে যান। তিনি ভুমিখেকোদের জড়ো করে নালিশা ভুমির স্থলে অন্য ভুমিতে গিয়ে তদন্ত সম্পাদন করেন।