বক্তারা আরো বলেন, গর্ভবতী মাকে প্রতিদিন ৩ বারের পরিবর্তে ৪ বার খাবার দিতে হবে। প্রতিবার অতিরিক্ত খাবার হিসেবে ১ মুঠো ভাত, সঙ্গে অন্যান্য খাবার একটু বেশি পরিমাণে খেতে হবে। মাছ, ডিম, মাংস, কলিজা, সবুজ শাক, ঘন ডাল, রঙিন সব্জি, ফল এবং তেলে ভাজা খাবার খেতে হবে। শিশুর জন্মের এক ঘন্টার মধ্যে অবশ্যই মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। শিশুর জন্মের সাথে সাথে তাকে মায়ের স্তন চুষতে দিতে হবে। মায়ের দুধ ছাড়া শিশুকে পানি, চিনির পানি, মধু, তেল বা অন্য কিছুই খাওয়ানো যাবে না। মা ও শিশুর পজিশন ঠিক রেখে শিশুকে দুধ খাওয়াতে হবে।
শিশু জন্মের সাথে সাথে ১ঘন্টার মধ্যেই মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো আর শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত শুধু মাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এমনকি এক ফোঁটা পানিও খাবে না। ৬ মাস পর বুকের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরী অন্যান্য বাড়তি খাবারও শিশুকে দিতে হবে। শিশুর বয়স ২ বৎসর পর্যন্ত বুকের দুধ পান করা তার জন্মগত অধিকার। এ অধিকার কেঁড়ে নেয়া উচিৎ নয়।
জন্মের পর থেকে প্রথম ২দিন পর্যন্ত শিশুর পাকস্থলির আকার থাকে একটা ছোট মার্বেলের মতো। এজন্য প্রথম ২দিন ১চা চামচ বা ৫/৭ এমএল শালদুধ হলেই যথেষ্ট। পরবর্তীতে ভালভাবে দুধ আসার জন্য শিশুর জন্মের প্রথম দিন অন্তত ৮/১২ বার অবস্থান ও সংস্থাপন ঠিক রেখে মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের গুড়ো দুধ আছে এসব কিছুই বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। বাচ্চাকে ঠিকভাবে ধরে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়ালে বাচ্চার অন্য কিছুর দরকার নেই। তবে এ ক্ষেত্রে মায়ের ধৈর্য্য অবশ্যই থাকতে হবে- যাতে করে অনেক্ষণ ধরে চেষ্টা করে মা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান। শালদুধ-ই হচ্ছে শিশুর জীবনের প্রথম ঠিকা, শালদুধ শিশু জন্মের পর মেকোনিয়মে বা নবজাতকের কালো রংয়ের প্রথম মল বের করে আনতে সাহায্য করে। শিশুদের জন্ডিস প্রতিরোধ করে। শিশুর বিকাশমান মস্তিষ্ক, চক্ষুগঠন ও রক্তনালীর জন্য অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড শুধুমাত্র মায়ের দুধেই আছে।
গতকাল শনিবার সকালে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে সূর্যের হাসি ক্লিনিক দক্ষিণ সুরমা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্টিত হয়। ক্লিনিক ম্যানেজার ফয়ছল আহমদের সভাপতিত্বে ও সার্ভিস প্রমোটর আব্দুর রাজ্জাকের পরিচালনা সভায় বক্তব্য দেন, প্যারামেডিক রুমণ ব্যানার্জি, মিনাক্ষি রায়, এডমিন এসিস্ট্যান্ট আলমগীর হোসেন, কাইন্সেলর শান্তনা রানী নাথ, সমাজসেবী রুমেল আহমদ, ফয়েজ আহমদ প্রমুখ। সভাশেষে সচেতনতা মূলক একটি র্যালী স্থানীয় মোগলা বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ক্লিনিকে এসে শেষ হয়।
সূর্যের হাসি ক্লিনিক বিয়ানী বাজার শাখার উদ্যোগে অনুষ্টিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লিনিক ম্যানেজার পলাশ বণিক। প্রশাসনিক সহকারী হোসেন আহমদ খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন, প্যারামেডিক সুদিপা রাণী দত্ত, নাজমিন নাহার, সার্ভিস প্রমোটর সুজিত কুমার দাস, তরিকুল হক চৌধুরী, কাউন্সেলর তাহেরা বেগম প্রমুখ।
সূর্যের হাসি ক্লিনিক গোলাপগঞ্জ শাখার উদ্যোগে ক্লিনিক ম্যানেজার সৈয়দ আবুল হাসনাত জুয়েলের সভাপতিত্বে ও প্যারামেডিক শিউলীর রাণীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সার্ভিস প্রমোটর সেলিম উদ্দিন, মিছবাহ উদ্দিন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ লাকী আক্তার প্রমুখ।
জকিগঞ্জ শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ক্লিনিক ম্যানেজার আব্বাছ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও কাউন্সেলর খাদিজা জান্নাতের পরিচালনায় অনুষ্টানে বক্তব্য দেন সীমান্তিকের সাবেক মহাসচিব মালেক আহমদ, ডাঃ আজিজুর রহমান, সার্ভিস প্রমোটর আহমদ আল হাসান, মনোয়ারা বেগম হেনা, প্যারামেডিক সজনা বেগম চৌধুরী প্রমুখ।
সূর্যের হাসি ক্লিনিক কানাইঘাট শাখার উদ্যোগে ক্লিনিক ম্যানেজার হেলাল আহমদের সভাপতিত্বে ও সার্ভিস প্রমোটর বাহার উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্টিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, কানাইঘাট পৌরসভার কাউন্সিলর জাহাঙ্গির আলম জাহান, নারী কাউন্সিলর ফয়জুন্নেসা, সূর্যের হাসি কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপের সভাপতি দিলীপ কুমার চন্দ, গীতা রানী দাস, সার্ভিস প্রমোটর নাজিম উদ্দিন, প্রশাসনিক সহকারী এম এ শাহিদ, প্যারামেডিক শাহানা আক্তার চৌধুরী প্রমুখ।
ফেঞ্চুগঞ্জ শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লিনিক ম্যানেজার মোঃ সাইফুল ইসলাম। বক্তব্য দেন প্যারামেডিক শামীমা আক্তার হেপী, নাজমিন নাহার নাজু, কাউন্সেলর অঞ্জলা রানী বিশ্বাস প্রমুখ।
সূর্যের হাসি ক্লিনিক কোম্পানীগঞ্জ শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লিনিক ম্যানেজার নুরুল হক। বক্তব্য দেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান, থানা সদর জামে মসজিদ এর ইমাম ও খতিব আমিনুল ইসলাম, অবসর প্রাপ্ত বিডিআর সদস্য মোঃ কামরুজ্জামান, প্যারামেডিক রুজিনা বেগম, সপ্না রানী দাস, সার্ভিস প্রমোটর সাইদুল ইসলাম ও দেমেশ তালুকদার প্রমুখ।
বিশ্বনাথ শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভায় ক্লিনিক ম্যানেজার মাছুম মিয়ার সভাপতিত্বে ও প্যারামেডিক পাপলী রাণী দত্তের পরিচালনায় বক্তব্য দেন প্যারামেডিক লাভলী খাতুন, সার্ভিস প্রমোটর শাহেদ আহমদ, সাইদা আফরোজা,কাউন্সেলর সাইদা আফিফা প্রমুখ।
জৈন্তাপুর শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লিনিক ম্যানেজার তাজ উদ্দিন। সার্ভিস প্রমোটর হালিম উদ্দিনের পরিচালনায় বক্তব্য দেন প্যারামেডিক শীলা রানী পাল, খোদেজা বেগম, নেহারুন্নেছা, প্রশাসনিক সহকারী অপু চৌধুরী প্রমুখ।
বালাগঞ্জ শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লিনিক ম্যানেজার ফজলু মিয়া। প্রশাসনিক সহকারী তাজেল আহমদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন, প্যারামেডিক ক্যামেলি দত্ত, সার্ভিস প্রমোটর শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ।
সীমান্তিক সূর্যের হাসি ক্লিনিকে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের আলোচনা সভায় বক্তারা
সিলেটপোস্টরিপোর্ট:কর্মক্ষেত্রে শিশুকে মায়েরা যাতে দুধ খাওয়াতে পারে সে জন্য সকল পর্যায় থেকে বহুমাত্রিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা জরুরীবিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০১৫ প্রতিপাদ্য বিষয়- “কাজের মাঝে শিশু করবে মায়ের দুধ পান সবাই মিলে সব খানে করি সমাধান ’’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এনএইচএসডিপির সেবা নেটওয়ার্ক ইউএসএআইডি-ডিএফআইডির অর্থায়নে সীমান্তিক পরিচালিত সূর্যের হাসি ক্লিনিকের বিভিন্ন অনুষ্টানে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, বিশ্বায়নের এ যুগে দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে সারাবিশ্বের শ্রমবাজার পরিস্থিতি। প্রতিযোগিতা পূর্ণ এই কর্মযঞ্জে অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হচ্ছে নারী স্বাস্থ্য যা প্রভাব ফেলেছে তাদের জীবন যাত্রায়,তাদের ছেলে মেয়ে ও পরিবারের উপর। আইএলও রিপোর্ট অনুসারে বিশ্বের দরিদ্র এলাকাগুলোতে প্রায় ৫০ ভাগ নারী কম বেতন, দীর্ঘ কাজের সময় এবং কাজের জায়গায় সুযোগ সুবিধার অভাব ইত্যাদি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। নারীরা যাতে সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে নিরাপদভাবে এবং পর্যাপ্ত ভাবে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়াতে পারে সে জন্য সকল পর্যায় থেকে বহুমাত্রিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা, কর্মক্ষেত্রে মায়ের দুগ্ধ দানের সুবিধা প্রদান করা জরুরী। কর্মক্ষেত্রে মায়েদের দুধ খাওয়ানোর সুযোগ দিলে মা ও শিশু উভয়ের সুসাস্থ্য, সুখ ,বিশ্রাম নিশ্চিত হয়। শিশু কম রোগে অ্াক্রান্ত হয় ,শিশুর মৃত্যু হার কমে যায় এবং চিকিৎসার খরচ বেচে যায়। চাকুরীদাতা সন্তুষ্ট ও কর্মঠ জনবল পেয়ে লাভবান হয় ,কারণ কর্মক্ষেত্রে মা কম অনুপস্থিত থাকে ও বেশি অনুগত থাকে।
