সিলেটপোস্ট ডেস্ক : মানবতাবিরোধী অপরাধে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদন্ডের প্রতিবাদে জামায়াত ইসলামী আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে।
রিভিউ আবেদন খারিজ করে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় বহাল রাখার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দেশেব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াত।
বুধবার দুপুরে জামায়াত নেতা ডা. রেদওয়ান উল্লাহ শাহেদী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রায় ঘোষণার পর পরই দলীয় ফোরামে আলোচনা করে হরতালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে তা ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু সাময়িক সময়ের জন্য ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় জামায়াতের পাঠানো বিবৃতি সংবাদ মাধ্যমগুলোতে পৌঁছায়নি- বলেন রেদওয়ান উল্লাহ শাহেদী।
দুপুর সাড়ে ১২টায় পাঠানো জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদের বিবৃতিটি ইন্টারনেট সচল হওয়ার পরে পৌঁছে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে। বিবৃতিতে এ হরতালের ডাক দেন মকবুল।
বুধবার এক বিবৃতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ হরতালের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ বলেন,“জামায়াতকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য সরকার দলের নেতাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করেছে। সরকারি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। সরকার তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মিথ্যা অভিযোগে ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দায়ের করে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ নেই। কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীও নেই। এতদসত্ত্বেও সরকারের মিথ্যা মামলায় জনাব মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি রিভিউ আবেদন করলে তা খারিজ করে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। এ রায়ে মুজাহিদ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জনাব মুজাহিদকে হত্যার সরকারী ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।”
বিবৃতিতে বলেন, যে মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত মুজাহিদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলাধীন কোন থানায় বা বাংলাদেশের অন্য কোন থানায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত কোন অপরাধের জন্য কোন মামলা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য তিনি তার তদন্তে পাননি। মামলার আইও এটাও স্বীকার করেছেন যে, মুজাহিদ আল বদর, শান্তি কমিটি, রাজাকার বা আল শামস বা এই ধরনের কোনো সহযোগী বাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, এমন কোন তথ্য তিনি তার তদন্তকালে পাননি।”
মকবুল আহমাদ বলেন, গতকাল অ্যাটর্নি জেনারেল গণমাধ্যমে প্রদত্ত বক্তব্যে স্বীকার করেছেন যে, মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। বাংলাদেশের জনগণসহ গোটা বিশ্ববাসীর কাছে এ কথা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, বিনা অপরাধে এবং আনীত অভিযোগসমূহ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে জনাব মুজাহিদকে সরকারী পরিকল্পনায় হত্যার উদ্দেশ্য এ দণ্ডে ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোটা জাতি এ রায়ে হতাশ হয়েছে।