সিলেটপোস্ট২৪রিপোর্ট :সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রবসহ বিরোধীদের নিয়ে বসতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি বিএনপি ছেড়ে যাওয়া নেতাদের ফিরিয়ে আনারও পরামর্শ দেন খালেদা জিয়াকে।সোমবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিভিন্ন পরামর্শ তুলে ধরেন বিএনপি পন্থি পেশাজীবীদের এই নেতা।খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনার কর্মীদের সবরকম ভুল-ভ্রান্তির কথা ভুলে গিয়ে সবাইকে দলে ফিরিয়ে নিন। আপনাদের বাইরে যারা বিরোধী দলে আছেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেব, কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব- তাদের সবাইকে আপনি ডেকে আনেন। একত্রে বসে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিন; আমরা আপনার সঙ্গে আছি।”বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে জাফরুল্লাহ বলেন, “গণতন্ত্রের হত্যাকারী হিসেবে আপনি চিহ্নিত হউন, সেটা আমরা চাই না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, ৫ জানুয়ারি (২০১৪) চানক্যের খেলায় আপনি জিতেছেন, এবার এর অবসান ঘটান।”
‘বিচার ব্যবস্থা সরকারের ইচ্ছায় চলছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, “বিচারের নাম করে এপ্রিল-মে মাসে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তির যে ব্যবস্থা আনলেন, সেটার জন্য জনগণ চিরকাল চুপ করে বসে থাকবে না।
“আপনার পরিবারের যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা মর্মাহত। সেই কান্না এখনও আমার আসে। আর নতুন কান্নার সৃষ্টি করবেন না। কারণ ইতিহাস বলে অত্যাচার যখন বেড়ে যায়, হঠাৎ কী ঘটে যাবে কেউ জানে না।”
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি বলেন, “আমার দ্বিতীয় অনুরোধ তার প্রতি। অবরুদ্ধ গণতন্ত্র থেকে মুক্তি পেতে আজকে আপনাকে মুক্তির সংগ্রামে আসতে হবে। সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে আপনি যদি গুলশানের বাড়িতে নিজে অন্তরীণ হয়ে থাকেন, তাহলে এই সংগ্রাম হবে না।”
খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসা থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, “আপনাকে কেউ মুক্তি না দিলেও আপনাকে নিজে মুক্ত হওয়ার চেষ্টায় রাস্তায় নামতে হবে। অন্ততঃপক্ষে আপনি ৫টি জেলা পরিদর্শন করুন।”
একই আলোচনা সভায় খালেদা জিয়াও বক্তব্য দেন। তবে অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে রেখে আসায় তার অনুপস্থিতিতেই বক্তব্য দিয়ে দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে যান জাফরুল্লাহ।
বক্তব্যে বিজয় দিবসের দিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ ইবরাহিমকে আমন্ত্রণপত্র নিয়েও বঙ্গভবনে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানস্থলে সমবেত মুক্তিযোদ্ধাদের দাঁড়িয়ে ধিক্কার জানানোর অনুরোধ জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, “একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা হয়েছে। আপনারা দাঁড়ান দাঁড়ান। মাথা নিচু করে বলুন ধিক ধিক ধিক। এটা আমাদের লজ্জা।”
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আজকে রাষ্ট্রপতিকে বলতে হবে তাকে (সৈয়দ ইবরাহিম) গেইট থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার অধিকার কে দিয়েছিল, কারা দিয়েছিল। আজকে প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে- এই অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে। এই কাজ কে করছেন নিশ্চয় রাষ্ট্রপতি হামিদ সাহেব করেননি। করেছেন কারা? কারা তাকে পেছন থেকে পরিচালিত করছেন, ভারতীয় সাউথ ব্লকের লোকজন?”
আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনও করেন মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ।