সিলেটপোস্ট২৪রিপোর্ট :বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোট কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দিতে সকল থানার ওসিকে খুলনার ডিআইজি নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
দলটির পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, খুলনার বিভাগে যে সকল পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে সে সমস্ত এলাকায় ডিআইজি সরাসরি থানার ওসিকে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। তারা যেন নির্বাচনের দিন পোলিং এজেন্ট না হয় এবং ভোট দিতে না যায় সে জন্য তিনি এ নির্দেশনা দেন।
রিজভী বলেন, মূলত: বিএনপি’র নেতাকর্মীদেরকে এলাকা ছাড়া করার জন্যই ডিআইজি এই নির্দেশ দিয়েছে। ডিআইজির এই নির্দেশ খুলনা বিভাগের অনেক এসপিও জানে না বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই ঘটনাতে আগামীকালের পৌর নির্বাচন নিয়ে সরকারের নগ্নরূপ উম্মোচিত হলো।
বিএনপি এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শ্রীপুর ভোটকেন্দ্র পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আমি দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বরিশাল মুলাদীর আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লার নির্দেশে বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপনের নেতৃত্বে আওয়ামী বহিরাগত সন্ত্রাসীরা মুলাদী উপজেলা বিএনপির সভাপতির বাড়িতে হামলা করে এবং ধানের শীষের এজেন্ট ও সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসছে যে ‘আগামীকাল ভোট কেন্দ্রে গেলে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরবে’। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানালে তারা কোনো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
তিনি বলেন, চৌমুহনী পৌরসভার ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মোঃ জহির উদ্দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেন যে, বেগমগঞ্জ থানার এস আই জসিম উদ্দিনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা ইতিপূর্বে তার কর্মী বাহিনীর উপর কয়েক দফা গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। সেই এস আই এখন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে ও গ্রেফতারি অভিযান চালাচ্ছে। চৌমুহনী পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ আবদুল গফুর ও পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সোহেলসহ ধানের শীষ প্রতীকের ৭ জন সমর্থককে গ্রেফতার করেছে।
ভোলা সদর পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হারুন অর রশিদ ট্রুমান রিটার্নিং অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন যে, তার নির্বাচনী এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, ভোট জালিয়াতী, দাংগাহাংগামা এবং জাল ভোট দেয়ার উদ্দেশ্যে নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগত আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী এনে রেখেছে। এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন যে, তার নির্বাচনী এলাকায় যেসব প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা প্রায় সবাই ওই এলাকার আওয়ামী লীগ চিহ্নিত কর্মকর্তা। যেমন মাহমুদুর রহমান আজাদ-উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার, ভোলা সদরের মোঃ মাকসুদুর রহমান এক্সিকিউটিভ অফিসার জনতা ব্যাংক ভোলা, মোঃ হুমায়ুন কবির সিনিয়র কর্মকর্তা ভোলা, রাইসুল ইসলাম রাসেল-এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা জনতা ব্যাংক ভোলা, মাহবুবুর রহমান-উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, পলাশ চন্দ্র হাওলাদার-উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ফিরোজা বেগম-প্রভাষক ফাতেমা খানম মহাবিদ্যালয় ভোলা আওয়ামী লীগার হিসাবে পরিচিত।
ভোলা জেলা বোরহান উদ্দিন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী সাইদুর রহমান লিটন ও তার ভাই বাবলু ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মাহবুব পঞ্চাত ও ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মাহবুব ও তার ভাইকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে পুলিশ তাদেরকে বলে “অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর কর যে আমি নির্বাচন প্রত্যাহার করেছি’’।
বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন দিপেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ করেছেন যে, তার নির্বাচনী এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থান নিয়েছে। তারা বিএনপির এজেন্ট ও সমর্থকদের এই বলে বেড়াচ্ছে যে, “তোমরা আগামীকাল ভোট কেন্দ্রে যাবে না, গেলে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরবে।’
‘সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইজন এজেন্ট মোঃ মঞ্জরুল আলম ও ইসমাইল হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে’।