সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত বুধবার (২১ জুন)। এর পরদিন থেকেই সিলেট মহানগরে শুরু হয় তীব্র লোডশেডিং। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের অন্তর্ভুক্ত গ্রাহকরা।
এছাড়া সিলেট শহরতলি ও বিভাগের গ্রামাঞ্চলের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিউবো। এসব এলাকায়ও চলছে প্রায় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং। ফলে প্রাত্যহিক কাজকর্মে ব্যঘাতের পাশাপাশি বিঘ্ন ঘটছে অফিস-আদালতের কাজকর্মে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগিরা।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন- কয়েকটি উৎপাদনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় সারা দেশেই লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তাই সিলেটেও এমন হচ্ছে। যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে, সেই অনুযায়ী গ্রাহকদের সরবরাহ করা হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে।
জানা যায়, সিলেটে লোডশেডিং কমাতে নির্বাচনের আগে (১৮ এপ্রিল) বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে ফোন দিয়ে সরবরাহ বাড়ানো অনুরোধ করেছিলেন আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ওই দিন সিলেট বিউবোর এক সভায় যোগ দিয়ে তিনি প্রতিমন্ত্রীকে ফোন করে সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার এ অনুরোধ করেন। এরপর থেকে সিলেটে বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহ অনেকটাই স্বাভাবিক হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে নির্বাচনের পরদিন থেকেই সিলেটে স্বরূপে ফিরে আসে লোডশেডিং।
কাজীটুলা এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, তিন দিন ধরে প্রায় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনে আগে প্রায় এক মাস এমন হয়নি। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ফলে সাংসারিক কাজে ঘটছে চরম ব্যাঘাত। শিক্ষার্থীরাও পড়ালেখায় মনযোগ দিতে পারছে না। ফলে সবদিকেই ক্ষতি করছে এ লোডশেডিং।
নগরীর বালুচর এলালার সৈয়দ মোহাদ্দিছ বলেন, আজ (শনিবার- ২৪ জুন) জুহরের নামাজের পর থেকে কিছুক্ষণ পরপরই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। তাদের বিপণিবিতান ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছে লোডশেডিংয়ে। এতে ব্যবসার প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু গত মাসে এমনটি হয়নি। নির্বাচনের পরপরই এমন অবস্থা হচ্ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন- নির্বাচনের আগে সিলেটে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক থাকতে পারলে নির্বাচনের পর থাকবে না কেন? আমরা সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিউবো সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চল-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন শনিবার বিকালে দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনকে বলেন বলেন, আজ বিকেল ৫টার দিকে ২নং ডিভিশনে বিদ্যুতের চাহিদা ছিলো ৩০ মেগাওয়াট। তিনি সরবরাহ করা হয়েছে ২০ মেগাওয়াট। তাই স্বভাবতই লোডশেডিং হচ্ছে।
বিউবো সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী আরাফাত আল মাজিদ সিলেটভিউ-কে বলেন- বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। দেশের কয়েকটি উৎপাদনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় সরবরাহে এমন সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন- ‘আজ (শনিবার) বিকালে বিউবো সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের চাহিদ ছিলো ২৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু মিলেছে ১৮১ মেগাওয়াট। আমাদেরকে যা দেওয়া হয় তাই-তো আমাদেরকে বন্টন করতে হয়। ঘাটতি থাকলে লোডশেডিং হবেই।
পরিস্থিতি কবে স্বভাবিক হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- এ বিষয়ে আসলে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
নির্বাচনের পর লোডশেডিং হওয়ার বিষয়ে আরাফাত আল মাজিদ বলেন- এট ঠিক যে, নির্বাচনের আগে সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু এখন নেই।