সিলেটপোস্ট ডেস্ক::সিলেট বিভাগের চারটি জেলার উপর দিয়ে বহে গেছে কুশিয়ারা নদী। এটি একটি আর্ন্তজাতিক নৌপথ এই নদীটি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বহমান। একটি প্রভাবশালী বালু চোর চক্র অবৈধ ভাবে কয়েকটি ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রতিনিয়ত। উত্তোলনের কোন বৈধতা না থাকার পরে ও নিয়মিত বালু উত্তোলনের ফলে শেরপুর ব্রিজ, রানীগঞ্জ ব্রিজসহ গোটা এলাকা ভাঙ্গনের কবলে পড়বে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
সরজমিনে দেখা যায়, সিলেট জেলার ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন মৌজায় কোন বালু মহাল নেই। সম্প্রতি বালু উত্তোলন নিয়ে এলাকায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। সম্প্রতি ওই এলাকায় কুশিয়ারা নদীর তীর ভাঙন ও প্রতিরক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়ছে।
এ ব্যাপারে লিমন মিয়া, সোহেল মিয়াসহ এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে সরকারি কাজের নামে বিক্রি করে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। বৈধ অনুমতিপত্র না থাকার পরও তারা স্থানীয় প্রশাসনকে মাসোয়ারা দিয়ে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে দিনে ও রাতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যাক্তিরা জানান, সরকারি কাজের জন্য বালু কিনে এনে ব্যবহার করবেন এটাই বাস্তবতা, তাই বলে এলাকার ক্ষতি করে নয়। তারা আরো জানান, একদিকে বালু উত্তোলন করে প্রতিরক্ষা বাঁধ নষ্ট করা হচ্ছে আর অপরদিকে বালু মহাল ছাড়া বালু উত্তোলন করায় এলাকায় বিশাল ভাঙ্গনের সৃষ্টি হবে, এর দায়ভার নেবে কে? সরকারি কাজের নামে সরকার দলীয় প্রভাবশালীরা জোরপূর্বক বালু উত্তলন করে নিচ্ছেন বলেও জানান তারা।
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর, সিলেট জেলার ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি অবহিত আমরা অবগত হয়েছি। অবৈধ বালু চোরদের বিরোদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্ব স্ব উপজেলা ভুমি অফিস থেকে সরেজমিন গিয়ে বালু উত্তোলন না করার জন্য প্রশাসনিকভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তারপরও তারা যখন কুশিয়ারার বালু চুরি বন্ধ করছে না তাই এখন আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে যে স্থানে যত রকমের মেশিন–পাইপ রয়েছে তা জব্দ করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো একটি বালুও আর উঠবে না।
এ বিষয়ে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আমির হোসেন খান জানান, ড্রেজার দিয়ে নদী খনন বা বালু উত্তোলন তা দেখভালের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের, এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন এখতিয়ার নেই।
এ বিষয়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকদের সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হলে উনারা বলেন, কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিভিন্ন অভিযোগ পেয়েছি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আমাদের কোন কর্মকর্তা–কর্মচারি অবৈধ কাজে সহযোগিতার প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দীকী এনডিসির সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।