সিলেটপোস্ট টোয়েন্টিফোর .কম ডেস্ক : কালো যেন ল্যাপটপের অলিখিত অবধারিত রং ছিল। কেউ কেউ স্রোতের বিপরীতে সাদা রংটা চালু করে। কিন্তু এ সময়ের ল্যাপটপ কম্পিউটারে নানা রঙের সমাহার—যেন নিজের মনের রঙের প্রতিচ্ছবি। ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবেও মানিয়ে যাচ্ছে বেশ। বাজেট নিয়েও ভাবনা নেই। মোটামুটি ২৫ হাজার থেকে শুরু, বাকিটা আপনার ওপর। সব মানের ল্যাপটপ এখন দেশের বাজারে পাওয়া যায়।
ল্যাপটপ, নোটবুক আর নেটবুকের মাঝে সীমারেখা টানা বেশ কষ্টকর হলেও শব্দগুলোর প্রচলন বেড়েছে। ল্যাপটপের বাজারে দুই ধরনের ক্রেতা বেশি চোখে পড়ে—ছাত্র এবং পেশাজীবী।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিয়ে ল্যাপটপ একটা চাই-ই চাই। এই তরুণেরা নকশা এবং কর্মক্ষমতার বিচারে ল্যাপটপ কিনছেন। সারা দিন শিক্ষাঙ্গনে থাকতে হচ্ছে তাই একটানা দীর্ঘ সময় চলে—এমন ব্যাটারির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। এমনই একজন টাঙ্গাইলের মো. সাইফুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে কথা হয় ঢাকার বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে। সম্প্রতি তিনি ভর্তি হয়েছেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে। মূলত প্রোগ্রামিংয়ের জন্যই ল্যাপটপ কেনা বলে জানালেন। বললেন, ‘প্রসেসর ও গ্রাফিকস কার্ড ভালো দেখে ল্যাপটপ কিনলাম। দেখতেও সুন্দর, বেশ পাতলা। সারা দিন ক্যাম্পাসেই কেটে যায়, তাই ব্যাটারি ব্যাকআপটা দরকার।’
ব্যবসায়িক বা পেশাদার মানুষের পছন্দটা কিন্তু আবার ভিন্ন। হালকা–পাতলা ছোট আকারের স্পর্শকাতর পর্দার ল্যাপটপ বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। এইচপি এনভি সিরিজ, ডেল ইন্সপাইরন ও এক্সপিএস সিরিজ, এসারের বিজনেস নোটবুক ও বিজনেস আলট্রাবুক সিরিজ, অ্যাপলের ম্যাকবুক প্রো এবং সনি ভায়ো ল্যাপটপ খুঁজে নিচ্ছেন এই শ্রেণির ক্রেতারা। এগুলোর মূল্য ৫০ হাজার থেকে শুরু হয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন। তাঁরা গ্রাফিকস কার্ডের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। এমনই একজন সাইফুর রহমান। চাকরি করলেও পাশাপাশি মুক্ত পেশাজীবী হিসেবে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন।
বর্তমানে পঞ্চম প্রজন্মের ইন্টেল কোর আইথ্রি এবং কোর আইফাইভ প্রসেসরের ল্যাপটপের চাহিদা বেশি। এইচপির প্রোবুক ও প্যাভিলিয়ন সিরিজের ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। ইন্টেল কোর আই সেভেন বা সমমানের প্রসেসরযুক্ত ল্যাপটপগুলো গড় ক্রেতার সাধ্যের বাইরে হওয়ায় ক্রেতাদের আগ্রহ কম।
বাংলাদেশে এসারের আমদানিকারক এক্সিকিউটিভ টেকনোলজিস। ২৫ থেকে শুরু করে ১ লাখ ২৩ হাজার টাকার ল্যাপটপ থাকলেও অ্যাস্পায়ার ই৫-৪৭১ এবং অ্যাস্পায়ার ভি৩-৫৭২ মডেলের ল্যাপটপ চলছে ভালো। কম্পিউটার সোর্সের আমদানি করা ফুজিৎসু ল্যাপটপের প্রতি মানুষের আগ্রহ আছে। গ্লোবাল ব্র্যান্ডের পণ্যগুলোর মাঝে আসুস এবং লেনোভোর ল্যাপটপ বাজারে ভালো চলছে বলে জানালেন বিপণন নির্বাহী মো. তসলিম উদ্দিন। স্মার্ট টেকনোলজিসের জ্যেষ্ঠ বিক্রয় নির্বাহী মো. আশরাফুল ইসলাম জানালেন, বাজারে মধ্যম বাজেটের ক্রেতা বিশেষ করে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, সাধারণত ৩৫ থেকে ৫০ হাজারের মাঝেই পছন্দের ল্যাপটপ কিনছেন। তোশিবার এল৪০ ল্যাপটপটি এমন। চলছে। ধুলা এবং পানিরোধী ল্যাপটপটি একটানা সাত ঘণ্টা চলে।
নতুন চল
নতুন কিছু ল্যাপটপ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো হাইব্রিড কনভার্টিবল নামে পরিচিত। পর্দা উল্টোদিকে ঘুরিয়ে অনেকটা ট্যাবলেট কম্পিউটারের মতো কাজ করা যায়। স্পর্শকাতর পর্দার এই কম্পিউটারগুলো দুভাবে কাজ করতে পারে বলে পেশাদার মানুষের কাছে এর কদর আছে। তবে কমবেশি সব ক্রেতাই বাজারে এসে দাম, কাজের ক্ষমতা আর ওজন দেখেন। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন কোন ল্যাপটপটা নেবেন।
আইএস