সিলেটপোস্ট রিপোর্ট : কালবৈশাখির থাবায় সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে মহিলাসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রচন্ড ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতে মানুষ ও গবাদিপশুসহ ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে আহত হয়েছে ৫ শতাধিক ব্যক্তি। ৪ শতাধিক গবাদিপশু ও ৭ শতাধিক হাঁস মারা গেছে যাওয়ার পাশাপাশি প্রায় সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪ হাজার বাড়িঘর।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আধা ঘণ্টাব্যাপি দিরাই উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রচণ্ডঝড় ও প্রচুর শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। এতে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার খোলা আকশের নিচে বসবাস করছে।
ঘূর্ণিঝড়ে গাছ পড়ে ভাটিপাড়া গ্রামের জুয়েল কাজীর স্ত্রী দোলেনা বেগম (২৫), ঘর ভেঙ্গে চরনারচর ইউনিয়নের ইসলামপুর নতুনপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে খায়রুল ইসলাম (৩), বিলের পানিতে ডুবে শ্যামারচর গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে জালাল উদ্দিন (৫০) মারা যান।
এছাড়া উপজেলার খালিয়াঘুটা হাওর থেকে ধান নিয়ে বাড়ি আসার পথে আরমিকা বিলে আসার পর শ্যামারচর গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে জালাল উদ্দিন (৫০) ও সাথে আরো ২ জন ঝড়ের কবলে পড়লে জালালের সঙ্গে থাকা ২ জন সাঁতরে পাড়ে ওঠতে পারলেও সে নিখোঁজ হয়। আর কামান বিলের পশ্চিমে ধান কাটতে গিয়ে চরনারচর গ্রামের হরিধন দাসের পুত্র রামকৃষ্ণ (৭০) ও একই গ্রামের রামচরণ চন্দ্র দাসের পুত্র রমেন্দ্র চন্দ্র দাস (৪০) ও তার পুত্র কৌশিক চন্দ্র দাস (২৮) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখির ঝড়ে দিরাই উপজেলা এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে। ঝড়ে বিদ্যুাতের তারে প্রচুর গাছপালা পড়েছে এবং অনেক স্থানে বিদ্যুাতের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে।
দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন ৫টি ইউনিয়নের তথ্য দিয়ে জানান, উপজেলার দেড় হাজার ঘরবাড়ি, ২৫০টি গবাদিপশু ও ২শতাধিক হাঁস মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। এছাড়া ১ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছে এবং উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের শরীফপুরে ৩৮৭ হেক্টর জমির ধান শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে।
দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. গোলাপ মিয়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জানান, সহস্রাধিক ঘরবাড়ি নষ্ট, ২ শতাধিক গবাদিপশু ও ভাটিপাড়ায় ১ জন মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। এছাড়া শ্যামরচরে ১ জন নিখোঁজ রয়েছে ও পুরো উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার গাছপালা নষ্ট হয়েছে বলেও জানান তারা।