সিলেটপোস্ট রিপোর্ট ॥ এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির পর অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে বিদ্যালয়ের সব পুরুষ কর্মচারীদের চাকুরি থেকে অপসারণ করেছে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ওই ঘটনা নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের জন্য সমালোচনার মুখে থাকা উপাধ্যক্ষ জিনাতুন নেছাকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ ও ঘেরাওয়ের পর দুপুরে এই ঘোষণা দিয়ে অভিভাবকদের শান্ত করেন বেসরকারি এই বিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ম তামিম।
শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৫ মে এই বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের থাকার একটি কক্ষে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বিক্ষোভের মুখে একটি তদন্ত কমিটি করলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন বিষয়টি ধামাচাপা দিচ্ছে অভিযোগ তুলে শনিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে স্কুলের মাঠে অবস্থান নেওয়া অভিভাবকদের সামনে আসেন অধ্যক্ষ বেলায়েত। তিনি বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনায় যে কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তার নাম গোপাল। তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া একজন অভিভাবককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে আরেক কর্মচারী শরীফুল ইসলামকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই তদন্ত কমিটিকে তিন দিন সময় দেওয়া হলেও তারা সেই সময়ে তদন্ত শেষ করতে পারেনি বলে অভিভাবকদের ক্ষোভ ছিল। তা ছাড়া উপাধ্যক্ষ জিনাতুন নেছার এক মন্তব্যও তাদের ক্ষুব্ধ করেছিল।
পাশাপাশি স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে একদল অভিভাবক বিক্ষোভ করছে বলে কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানানোয় তাতে উত্তেজিত ছিল অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের দাবির মুখে উপাধ্যক্ষ জিনাতুন নেসাকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন তামিম। এ ছাড়া অধ্যক্ষ বেলায়েতসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদেরও অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকেই কলেজে-স্কুলে নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে যত পুরুষ কর্মচারী ছিল, তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে মহিলা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বাথরুম সমস্যাসহ নানা অভিযোগ আসার পরিপ্রেক্ষিতে সেগুলো সংস্কারেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তামিম।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন হয়েছে। রবিবার এর শুনানি হতে পারে।