সিলেটপোস্টরিপোর্ট:জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর অঞ্চল সিলেটের উদ্যোগে তিনদিনব্যাপাী ‘শীতকালীন আয়কর মেলা-২০১৫’ শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর দরগাহ গেইটস্থ হোটেল স্টার প্যাসিফিকের হল রুমে প্রধান অতিথি হিসাবে ‘শীতকালীন আয়কর মেলা’র উদ্বোধন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্সেস) চৌধুরী আমির হোসেন।মেলার উদ্বোধনী অনষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কর অঞ্চল-সিলেটের কর কমিশনার মো. মাহমুদুর রহমান ও সিলেটের যুগ্ম কর কমিশনার মো. জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন, সিলেট জেলার পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা।প্রথমবারের মতো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর উদ্যোগে ১৯-২১ নভেম্বর ঢাকা ও সিলেটসহ এক সাথে দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরে শীতকালীন আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।বক্তব্য রাখেন, সিলেট কয়লা আমদানী সমিতির সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সহ-সভাপতি আফজাল রশিদ চৌধুরী, সিলেট ওমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, সিলেট জেলা কর আইনজীবি সমিতির সভাপতি এম.ই.এম. ইকবালুর রহমান।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেট চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ, সিলেট ওমেন্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর নেতৃবৃন্দ ও সিলেটের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সদস্যবৃন্দ, সিলেট জেলা কর আইনজীবি সমিতির সদস্যবৃন্দ, সিলেট কর্মরত উর্দ্ধতন সরকারী, আধাসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারী পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, করদাতাগণ উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, কর অঞ্চল-সিলেটের অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. তোহিদুল ইসলাম।প্রধান অতিথির বক্তব্যে চৌধুরী আমির হোসেন কর সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি ও করের আওতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আয়কর বিভাগের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমের অংশ হিসাবে ই -টিআইএন ব্যবস্থা ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, কর অঞ্চলগুলোকে আরও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে এই ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। এর ফলেভবিষ্যতে সম্মানিত করদাতাগণ অনলাইনে তাদের আয়কর রিটার্ন প্রদান করতে পারবেন।তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে মাত্র ১০ কোটি টাকা আয়কর আদায় হয়েছিল। বর্তমানে আয়কর বিভাগের আধুনিকায়ন ও কর প্রদান ব্যবস্থার সহজীকরণের কারণে চলতি অর্থ বছরে আয়কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।চৌধুরী আমির হোসেন আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে কর বিভাগের এই অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণে সরকার পদ্মা সেঁতুর মতো বৃহত্তর উন্নয়ন প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন করতে পারছে। আমাদের ইতিবাচক অর্থনৈতিক সক্ষমতার কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় ঘবীঃ ঊষবাবহ এর অন্যতম সদস্য হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।আয়কর বিভাগের আরো অধিকতর প্রবৃদ্ধি ও পেশাদারীত্ব বৃদ্ধির জন্য জনবল নিয়োগ এবং কর্মকর্তাদের উন্নততর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে সু-নাগরিক হিসাবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ কর প্রদানের আহ্বান জানান।সভাপতির বক্তব্যে সিলেট কর অঞ্চলের কমিশনার মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, আয়কর আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনগণের কর প্রদানের সামর্থকে প্রাধিকার প্রদান করার কারণে বিশ^ব্যাপী আয়কর আইন অন্য যেকোন আইন থেকে অধিকতর জটিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের কর প্রদানের সামর্থকে বিবেচনা করে আয়কর আইনের সহজীকরণের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার উদাহরণ হিসাবে বিভিন্ন পণ্য আমদানী, ঠিকাদারী কাজ ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনকে ৮২সি ধারার অধীনে চূড়ান্ত করদায় হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে।দেশের মোট জনসংখ্যার অনুপাতে করদাতার সংখ্যার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, দেশের উত্তর পূর্ব অঞ্চল জনবান্ধব কর প্রশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ অঞ্চল হতে ন্যায়ত রাজস্ব আহরন পূর্বক দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে সকলের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে শীতকালীন আয়কর মেলা একটি মাইল ফলক হিসাবে গণ্য হবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নে আয়করের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সিলেট জেলার জন্য প্রস্তাবিত ইকোনমিক জোন, ক্রম বিকাশমান পর্যটন শিল্প এবং অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই অঞ্চলে যে অর্থনৈতিক গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে তাতে এই অঞ্চল হতে আরও বেশি আয়কর আহরণ সহজতর হবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা উন্নত বিশে^র উদাহরণ তুলে ধরে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করণের জন্য জনগণকে অধিকতর আয়কর প্রদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করণের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, আয়কর আদায় একটি কঠিন কাজ, এই কর্মকান্ডে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঠিক আয় ব্যয়ের হিসাব প্রদর্শন পূর্বক ন্যায়ত কর প্রদানের আহ্বান জানান। এ ছাড়াও জনগণের মধ্যে আয়কর বিষয়ক সচেতনতা ও কর ভীতি দূর করার জন্য আয়কর বিভাগ তথা কর অঞ্চল-সিলেট কর্তৃক নিয়মিত আয়কর মেলা আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।সিলেটে আজ থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন আয়কর মেলা আগামি শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কর তথ্য ও সেবা কেন্দ্র প্রাঙ্গণ, ২৩/এ- বিহঙ্গ, কাজীটুলা রোড, নয়াসড়কে অনুষ্ঠিত হবে।শীতকালীন আয়কর মেলায় করদাতাগণ সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার (সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ) যে কোন সার্কেলের আয়কর রিটার্ন মেলায় জমা দিতে পারবেন বলে কর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সিলেটে আজ শুরু হয়েছে শীতকালীন আয়কর মেলা
সিলেট পোস্ট ২৪ ডট কম
: নভেম্বর ২০, ২০১৫ | ১২:০০ অপরাহ্ন
« « পূর্ববর্তী
পরবর্তী » »