সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::সুনামগঞ্জের ছাতকে আওয়ামীলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার পরিমল দেবনাথ এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও লটপাটসহ ৮৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ রোববার ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের কহল্লা গ্রামের মৃত. গোপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথের ছেলে নেপাল চন্দ্র দেবনাথসহ ২০ জন স্বাক্ষরিত এ অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের কহল্লা গ্রামের মৃত.বিশ্বেশর দেবনাথের ছেলে পরিমল দেবনাথ আওয়ামীলীগ সরকারের পৃষ্টপোষকতায়, দলীয় পদপদবির নাম ভাঙ্গিয়ে, সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এর ছত্রছাঁয়ায় লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও বিভিন্ন নামে বেনামে প্রকল্পের কাজে দুর্নীতির মহোৎসব পালন করে আসছিলেন। বিগত সরকার কতৃক যুব উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব দুরীকরনের লক্ষে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করা হয়। উপজেলায় এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় কহল্লা গ্রামের বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যান সংস্থা রেজি: নং-৩৫৫/সুনাম। এই সংস্থার সভাপতি হলেন, আবুল হাসনাত ও সাধারন সম্পাদক হন পরিমল দেবনাথ। এই প্রকল্পের আওতায় সংস্থার অফিসে রক্ষিত কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, মডেম, চেয়ার টেবিল ও যাবতীয় আসবাবপত্রসহ প্রায় ৪ লাখ টাকা মুল্যের মালামাল কাউকে না বলে গোপনে আত্মসাত করার হীন উদ্দেশ্যে পরিমল দেবনাথ এর সিলেটস্থ বাসায় নিয়ে যান।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নে সরকারী ভাবে ১৩টি বেড়িবাঁধ প্রকল্পে কাজ না করিয়ে ১২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাত করেন পরিমল দেবনাথ। কহল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট কাজের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কহল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে বাড়ইর জাঙ্গাল পর্যন্ত কাঁচা রাস্তার মাটি ভরাট কাজের ৩ লাখ টাকা, কহল্লা রাখালতলা মাটি ভরাট কাজের ৩ লাখ টাকা, রাখালতলা হতে কহল্লা মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার মাটি ভরাট কাজের ৪ লাখ টাকা, কহল্লা গ্রামে বিদ্যুৎতায়নের নামে গ্রামবাসীর কাছ থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করে আত্মসাত, কহল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি খাল প্রতি বছর ২ লাখ টাকা করে নিলাম দিয়ে গত চৌদ্দ বছরে ২৮ লাখ টাকা, এছাড়াও তিনি নতুন বাংলা বাজার সামারুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ গভনিং বডির সভাপতি থাকার সুবাদে একটি ভবন নির্মানে প্রায় ৩০ লাখ টাকা পুকুর চুরিসহ মোট ৮৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা আত্মসাত ও লুটপাট করেন পরিমল দেবনাথ এবং তার সহযোগীরা। কহল্লা গ্রামের রাস্তায় পানি নিস্কাশনের জন্য একটি সরকারী কালভার্ট বরাদ্দ হয়। সেই কালভার্ট গ্রামের রাস্তায় না করে পরিমল দেবনাথ তার নিজ পুকুর পারে নির্মান করেন। এই কালভার্ট নির্মানেও পুকুর চুরির ঘটনা ঘটে। পরিমল দেবনাথ এর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। যারা প্রতিবাদ করতেন তাদেরকে পরিমল দেবনাথ মামলা, হামলা ও পুলিশি হয়রানির হুমকি ধমকি প্রদান করতেন। আওয়ামীলীগ দলীয় প্রভাব খাঁটিয়ে এক ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন পরিমল দেবনাথ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা মুন্না অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।