আ.লীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত কৃষক পরিবার এখন ঘরছাড়া
সিলেটপোস্ট ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
সিলেটে মধ্যরাতে বসতঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় কৃষক পরিবারের উপর হামলা করেও থামছেনা আওয়ামী লীগের নেতারা। প্রতিনিয়ত এই পরিবারকে প্রাণে মারার হুমকির পর ভয়ে এখন বাড়ি ছাড়া এ পরিবার। হামলার ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এমন অভিযোগ এনে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিলেট সদর উপজেলার মাখরকলা-সিদাইলগুল এলাকার মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে কৃষক ইলিয়াস আলী ও তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইলিয়াস আলীর মেয়ে ও সাহেবের বাজার হাইস্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিপা আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে হামলায় আহত হওয়া কৃষক পরিবারের ১৩জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে শিপা আক্তার বলেন, বিগত ৮ বছর পূর্বে জায়গা কিনে বাড়ি করে মাখরকলা-সিদাইলগুল এলাকায় বসবাস করছেন তারা। সম্প্রতি বাড়ির রাস্তা জোরপূর্বক দখল করেন একই এলাকার আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা।
এই ঘটনায় স্থানীয় মুরব্বিদের বিচার শালিস দিলে গত ৩ অক্টোবর রাত ১২টায় তাদের উপর হামলা ও লূটপাট করেন মাখরকলা-সিদাইলগুল এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে সুজন, তার ভাই রিপন (৪০), আব্দুল মিয়ার ছেলে হেলাল (৩৮) তার ভাই জামাল (৪২) সহ কয়েকজন। এ হামলায় ইলিয়াস আলীর পরিবারের নারী, শিশু, প্রবাসীসহ ১৩জন গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। পরে তাদেরকে স্থানীয়রা সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করান। পরদিন ১৯জনকে অভিযুক্ত করে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করেন ইলিয়াস আলীর ছেলে লায়েক মিয়া, (মামলা নং-২, তাং-০৪.১০.২০২৫)। মামলা করায় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা এ কৃষক পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদসহ প্রাণে মারার হুমকি দেন। হুমকি দেয়ার ঘটনায় ৯ অক্টোরব সিলেট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে ১২জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ইয়ারুন বিবি, (মামলা নং-২৮৪/২০২৫)। দুটি মামলার পরও অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানার পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। এমনকি এখনো বিভিন্নভাবে এই পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এতে করে এই কৃষক পরিবার প্রাণনাশের ভয়ে এখন ঘরছাড়া রয়েছেন। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনিসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে বিচার চেয়েছেন।
কৃষক ইলিয়াস আলী আরও জানান, কালাগুল এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগের নেতা সুজন, জামাল, হেলাল, খালিক আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। সাম্প্রতিক ২০২৪ এর ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়েও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সরকার পতনের পরও তাদের দৌরাত্ম এখনও বন্ধ হয় নি। ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের সঠিক বিচার ও তাদেরকে বাড়িতে নিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানায় এ কৃষক পরিবার।




