সংবাদ শিরোনাম
বিচার বিলম্বিত হলে, ন্যায় বিচার ক্ষুন্ন হয়- বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী  » «   শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখব : কাইয়ুম চৌধুরী  » «   লালদিঘীরপাড়ে মাছ ব্যবসায়ীদের হামলায় এক কিশোর নিহত ১  » «   সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ভূয়া পুলিশসহ দুই যুবক আটক  » «   তারেক রহমানের খালাসের খবরে সিলেটে আনন্দ মিছিল  » «   সিলেটে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি’র উদ্যোগে মাসিক পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত  » «   কুলাউড়ায় মানব পাচারকারীর বাড়িতে বিজিবির অভিযান,আটক-৮  » «   চিনিকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি আলোচিত অঞ্চল সিলেট  » «   বৈষম্যহীন মানবিক দেশ গড়াতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে: কয়েস লোদী  » «   এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই  » «   জাদুকাটায় সাড়ে ১৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনি-আনার জব্দ  » «   সিলেট বিএনপি দুই গ্রুপে বিভক্ত! ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নিতে উভয়েই এখন মরিয়া  » «   যেকোন মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব : তারেক রহমান  » «   সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও পুলিশী হয়রানি থেকে বাঁচতে চাই-সংবাদ সম্মেলনে রাসেল রবি  » «   ফসল রক্ষা বাঁধের বরাদ্দের নামে অহেতুককোন প্রকল্প নেয়া হবে না- উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান  » «  

গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে আছে সিলেটের আওয়ামী লীগের নেতারা :কার্যক্রম নিরব

সিলেটপোস্ট ডেস্ক::ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত আগস্টে পতন হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের। পতনের সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ৷ তাদের বেশিরভাগ এখনো আত্মগোপনে।
আরও দীর্ঘ সময় এভাবেই তাদের কাটাতে হবে বলে মনে করছেন তারা ৷
পতনের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ওই দিনই পালিয়ে ভারতে চলে যান। বর্তমানে তিনি সেদেশেই অবস্থান করছেন।
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী দ্রুত যে যার মতো আত্মগোপনে চলে যান।
এর মধ্যে সিলেটের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কেউ কেউ ওই দিনের আগে-পরে দেশ ছেড়ে বিদেশে পালান।আবার কেউ কেউ যেতে হয়েছে জেল হাজতে।
শুধু শীর্ষ নেতা নয়, সিলেট আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের জেলা মহানগর থেকে শুরু করে উপজেলা ও  ইউনিয়ন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও অনেকে দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে দলটির বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
যারা দেশ ছাড়তে পারেননি, তারা গা ঢাকা দিয়েই আছেন।
তবে এর মধ্যেই সিলেট বিভাগে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু নেতা, সাবেক মন্ত্রী, এমপি, সিলেট জেলা, মহানগর, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।আবার কেউ কেউ জামিন নিয়ে আছেন। এবং অন্য নেতারাও রয়েছেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে। কর্মী পর্যায়েও অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাইরে যারা আছেন, তাদের বেশিরভাগের নামেই মামলা রয়েছে। কারও কারও নামে একাধিক মামলা আছে।
এসব নেতা-কর্মী বিভিন্নভাবে বিভিন্ন অজ্ঞাত স্থানে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন। তবে দীর্ঘদিন এভাবে লুকিয়ে থাকা অনেকের জন্য দুরূহ হয়ে উঠছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে তাদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন ও জটিল হয়ে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। সামনে আরও কত দিন এভাবে কাটাতে হবে এসব কথা ভেবে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
এদিকে যেসব নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে বিদেশে অবস্থান করছেন তারাও সেখানে এক ধরনের আত্মগোপনেই রয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা খুব একটা প্রকাশ্যে আসছে না। ওই নেতাদের কেউ কেউ দেশে থাকা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যোগাযোগ করছেন। আবার দেশ থেকেও নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ তাদের সঙ্গে এভাবেই কথা বলে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন। তবে তারা কে কোথায় আছেন, এ বিষয়ে অনেকেই জানেন না। তারা নিজের অবস্থান স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেন না বলেও জানা গেছে। ইতোমধ্যে যারা দেশের বাইরে গেছে তাদের অধিকাংশই ভারতে অবস্থান করছেন বলে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়।
এছাড়া ইউরোপের দুই একটি দেশ লন্ডন,ফ্রান্স, কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের দুই-একটি দেশেও কেউ কেউ আছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সোস্যাল মিডিয়াতে। এই ভিডিওতে তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে অনেক কিছু ধরে তুলেছেন ও বর্তমান সরকার ও ছাত্র জনতার বিরুদ্ধেই অনেক রকম মন্তব্য করেছেন। ভিডিও সবার নজরে আসার পর সিলেটের সাধারণ মানুষ থেকে ধরে দেশের বিভিন্ন পেশার লোকজন গালাগালি থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন এই ভিডিওর কমেন্টে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীদের অবস্থা দিন দিন শোচনীয় হয়ে উঠছে। এভাবে তাদের আরও অনেক মাস থাকতে হতে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। এই পরিস্থিতিতে তাদের অনেকেই দল বা রাজনীতির কথা এখন ভাবতে পারছেন না। নিজের অবস্থা কী হবে সে চিন্তাই এখন তাদের কাছে বড় হয়ে উঠেছে।যে ভাবে মামলার আসামি করা হচ্ছে এবং পুলিশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ও গ্রেফতার হচ্ছে এই ভয়ে অনেক নেতা নিজকে রক্ষা করতে পালিয়ে আছে।
সিলেট আওয়ামী লীগের মধ্যম পর্যায়ের এক নেতার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ভালো নেই, কেমন আর থাকতে পারি। আছি কোনো রকম, চুপচাপ নিরাপদ থাকার চেষ্টা করছি ৷ জানি না কতদিন এভাবে থাকতে হবে, কত দিন সেফ থাকতে পারবো।
এদিকে দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী যারা যোগাযোগ করেন, তারা ওই নেতাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো পরামর্শ বা নির্দেশনা পাচ্ছে না বলে জানা গেছে। নেতারা শুধু সবাইকে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন আর ধৈর্য ধরতে বলছেন। বলছেন—হয় তো কিছুদিনের মধ্যে বা কয়েক মাসের মধ্যে পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের এক নেতা জানান, দুই-একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা হয়, তারাও এই মুহূর্তে তেমন কিছু বলতে পারেন না ৷ আশা দেন, বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে ৷ ধৈর্য ধরতে বলেন, সব নেতা-কর্মীকেই ধৈর্য ধরতে বলেন ৷ এ অবস্থায় ভালো কোনো নিশ্চয়তা দেখছি না ৷ তারপরও দেখি কী হয়।
সিলেটের রাজনীতি বিশ্লেষক’রা মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। তাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এ অবস্থায় কতদিন থাকতে হবে সে বিষয়গুলো নির্ভর করবে জনগণের ওপর। এ ব্যাপারে জনগণের ভূমিকাই সব থেকে বড়।
এ বিষয়ে প্রবীণ এক সামাজিক ও শালিসি ব্যাক্তি সাইফুল ইসলাম বলেন, আত্মগোপন করে হয়তো আছে, কিন্তু একেবারে তো সবাই পালিয়ে যায়নি। কতদিন এভাবে থাকতে হবে সেটা নির্ভর করবে জনগণের ওপর। জনগণ যদি চায় তাহলে ফিরবে। এরশাদের (জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) ক্ষেত্রেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তিনি তো আবার রাজনীতিতে ফিরেছিলেন। আসলে এ ব্যাপারে বড় ভূমিকা থাকবে জনগণের। রাজনীতি তো আর জনগণ বিবর্জিত কিছু না। তাই আমি বলব সবকিছুই নির্ভর করবে জনগণের ওপর, এটা নতুন কিছু না।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.